চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

হতাশার বছর ২০২০: ১২ মাসে ১৬ সিনেমা

বছর শেষে...

চলতি বছরে ১৬টি সিনেমার মধ্যে ঢাকাই ছবির শীর্ষ তারকা শাকিব খান অভিনীত তিনটি ছবি মুক্তি পায়…

আশা জাগিয়ে শুরু হলেও করোনার কারণে ঢাকাই চলচ্চিত্রের জন্য মোটেও ভালো যায়নি ২০২০ সাল। বিভিন্ন জরিপ বলছে, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এ যাবত সবচেয়ে কম সংখ্যক চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে। যে সংখ্যাটি মাত্র ১৬!

সমালোচকদের মতে, এই ১৬টির মধ্যেও হাতেগোনা কয়েকটি ছবি বাদে বাকিগুলো ছিল মানহীন! বছরের শুরু ও শেষ দিকে এসব মানহীন ছবি দেখে বিরক্ত হয়েছেন সাধারণ দর্শকও।

২০২০ সাল শুরু হয় ‘জয় নগরের জমিদার’ ছবি দিয়ে। এম সাখাওয়াত হোসেনের পরিচালনায় ১০ জানুয়ারি ছবিটি মুক্তি পায়। অভিনয় করেছিলেন ফারজানা ছবি, মডেল রাসেল, আরমান পারভেজ মুরাদ প্রমুখ। মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই ব্যবসায়িকভাবে হোঁচট খায় ছবিটি।

৭ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পায় ফাখরুল আরেফীন খান পরচালিত বহুল প্রতীক্ষিত ছবি ‘গণ্ডি’। ছবিটি নিয়ে দেশের বহু সিনেমাপ্রেমী উৎসুক হয়ে বসেছিলেন। কারণ এই ছবিতে প্রথমবার জুটি বেধে অবিনয় করেছেন ‘ফেলুদা’ খ্যাত কলকাতার সব্যসাচী চক্রবর্তী ও বাংলাদেশের কিংবদন্তী অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা। ছবিটি অল্পসংখ্যক সিনেমা হলে মুক্তি দেয়া হলেও বেশ প্রশংসিত হয়।

এ বছর ভালোবাসা দিবসে মুক্তি পায় বছরের অন্যতম আলোচিত ছবি ‘বীর’। শাকিব খান প্রযোজিত এ ছবির পরিচালক ছিলেন কাজী হায়াৎ। মুক্তির পর সাড়া ফেলে এ ছবিটি। দেশের বিভিন্ন সিনেমা হলে দর্শকরা ছবিটি দেখতে ভিড় করে, এমন সংবাদও দেখা গেছে সংবাপত্রেরর পাতায়। সিনেমা হল, ডিজিটাল রাইটস, টিভি রাইটস এবং ওটিটিতে মুক্তির পরিকল্পনায় সবকিছু মিলিয়ে ছবিটি ব্যবসা সফল বলে দাবি করেছে শাকিব খানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসকে ফিল্মস।

২৮ মার্চ রফিক শিকদারের পরিচালনায় নিরব-প্রিয়াঙ্কা অভিনীত ‘হৃদয় জুড়ে’ মুক্তি পায়। তবে ছবিটি সাড়া জাগাতে পারেনি। ৬ মার্চ মুক্তি পায় তাহের শিপনের পরিচালনায় ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ছবি ‘হলুদ বনি’ ও শাকিব খান অভিনীত শামীম আহমেদ রনি পরিচালিত ছবি ‘শাহেনশাহ’। শাপলা মিডিয়ার প্রযোজনায় ছবিতে নুসরাত ফারিয়া থাকলেও সেভাবে আলোচিত হয়নি। তবে প্রযোজক ও পরিচালকের দাবি, করোনা সংক্রমণ না এলে ‘শাহেনশাহ’ ব্যবসায়িক সাফল্যের মুখ দেখতো।

একই তারিখে কোনো রকম প্রচারণা ছাড়াই মুক্তি পায় আরও এক ছবি ‘চল যাই’। পরিচালনা করেন মাসুমা রহমান তানি। হাতেগোনা দু-একটি মাল্টিপ্লেক্সে চলে এটি। এরপর দেশে শুরু হয় করোনা সংক্রমণ। ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায় সব হল।

৩ আগস্ট শাহরিয়ার নাজিম জয় পরিচালিত ‘আমার মা’ ছবিটি মুক্তি দেয়া হয় একটি বেসরকারি টিভিতে। যেখানে অভিনয় করে ডিএ তায়েব ও ববি। সিনেমা হল খুললে মুক্তি পায় মুকুল নেত্রবাদীর সিনেমা ‘সাহসী হিরো আলম’। নানা কর্মকাণ্ডে বিতর্ক তৈরি করা সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল থাকা আলমের এ ছবিটি মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই মুখ থুবড়ে পড়ে ও হল থেকে নেমে যায়।

এরপর একে একে মুক্তি পেয়েছে বছরের আলোচিত ছবি ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ (২৩ অক্টোবর), ‘বিশ্বসুন্দরী’ (১১ ডিসেম্বর), ‘রূপসা নদীর বাঁকে’ (১১ ডিসেম্বর), নবাব এলএল.বি (১৬ ডিসেম্বর, ওটিটি প্লাটফর্ম) ‘গোর’ (২৫ ডিসেম্বর), ‘আমি তোমার রাজা তুমি আমার রানি’ (২৫ ডিসেম্বর)।

তবে করোনা পরবর্তী সময়ে ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ নাগরিক দর্শকদের বেশ আগ্রহ লক্ষ করা গেছে। ছবিটি মুক্তির পর প্রশংসিতও হয়েছে। তারচেয়ে বড় কথা, ছবিটি এখনও একাধিক সিনেপ্লেক্সে চলছে। এছাড়া বছর শেষে মুক্তি পায় চয়নিকা চৌধুরী পরিচালিত বহুল প্রতীক্ষিত ছবি ‘বিশ্বসুন্দরী’। ছবিটি দেশের ২৫টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। সিয়াম ও পরীমনির কারণে ছবিটি বেশ ভালো দর্শক সাড়াও পায়।

তবে সব কিছু ছাপিয়ে গেছে শাকিব খান, মাহিয়া মাহি ও স্পর্শিয়া অভিনীত ‘নবাব এলএল.বি’। নির্মাণের শুরু থেকে এ ছবি দর্শকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলো। তবে মুক্তির পর পরিচালক অনন্য মামুন ও প্রযোজনা সংস্থার নানা গড়িমসির কারণে সমালোচিত ও হতে হয়।

অর্ধেক ছবি প্রথম মুক্তি দিয়ে অনন্য মামুন বাকি অর্ধেক পনের দিন পর মুক্তির ঘোষণা দেন। এতে শাকিব-মাহিসহ ছবির সঙ্গে জড়িতরা ক্ষেপে যান। মুক্তির পর ছবির সংলাপে পর্নোগ্রাফির অভিযোগে পরিচালক ও এক অভিনেতা দুজনেই গ্রেপ্তার হন।