চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

হঠাৎ সিএনএনে শাহাদাত প্রসঙ্গ (ভিডিও)

গৃহকর্মী হ্যাপিকে নির্যাতনের মামলায় জামিনে আছেন ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন ও তার স্ত্রী নৃত্য। দেশীয় গণমাধ্যমে এ নিয়ে আলোচনা থামলেও হঠাৎ করেই হ্যাপি নির্যাতন ও শাহাদাত প্রসঙ্গ নিয়ে অডিও-ভিজ্যুয়ালসহ একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন।

শিশু মাহফুজা আক্তার হ্যাপির বর্ণনায় শাহাদাত ও নৃত্যর নির্যাতনের নির্মমতা তুলে ধরা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।সিএনএন প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশু নির্যাতনের মামলায় বাংলাদেশে এবারই প্রথম কোনো ‘বড় তারকার’ বিচার হচ্ছে।

প্রতিবেদনের একটি অংশে দেশের ক্রিকেটে তেমন সাফল্যের দেখা না পাওয়া শাহাদাত হোসেনকে ‘বাংলাদেশের হিরো’ বলা হয়েছে। নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে শাহাদাতের বাড়ি থেকে পালানো হ্যাপি এখন কেমন আছে তা জানানো হয়েছে এই প্রতিবেদনের শেষ অংশে।

সিএনএন’কে বলা নির্যাতনের দিনগুলো:
‘দাদির মাধ্যমে শাহাদাতের বাড়িতে জোটে। সে বাড়িতে তারা আমাকে ঠিকমতো খেতে দিতো না, ঘুমাতে হতো বাথরুমে। চড়-থাপ্পর, কিল-ঘুষি আর রান্না ঘরে হাতের সামনে যা পেতো তাই দিয়েই মারতো। পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ খুঁজছিলাম। বাড়িতে কাজের লোক আসায় দরজা খোলা পেয়ে পালিয়ে আসি আমি’।

হ্যাপি আরও জানায়, আঘাত নিয়ে ঠিকমতো দৌড়াতেও পারছিলো না সে। তারপরও খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে দৌড়ানোর চেষ্টা করে সে।

‘আমি প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে দৌড়াচ্ছিলাম। লোকজন তাকাচ্ছিলো। আমি ফুলে ওঠা চোখ এক হাতে ঢেকে দৌড়াচ্ছিলাম। এক সময় ক্লান্ত হয়ে পথের পাশে বসে পড়ি’।

তখন এক সাংবাদিক তাকে দেখতে পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং নির্যাতনের বিষয়টি পুলিশকে জানালে তৎপর হয় পুলিশ।

‘বাংলাদেশি হিরো’!
প্রতিবেদনের এই অংশে শাহাদাতের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার তুলে ধরেছে সিএনএন। সেখানে বলা হয়, শাহাদাতের বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় তার দেশের অসংখ্য ভক্ত অবাক হয়ে যায়।

বোলার হিসেবে ক্রিকেটের সব সংস্করণের ম্যাচে শাহাদাত ১’শ উইকেট শিকার করেছেন। লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম লেখানো বাংলাদেশের একমাত্র বোলার তিনি।

তবে শিশু নির্যাতনের অভিযোগে তাকে সবরকম ক্রিকেট থেকে বহিস্কার করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।

বাংলাদেশে শিশু শ্রমের চিত্র:
হ্যাপি’র ঘটনাকে পুঁজি করে বাংলাদেশে শিশু শ্রমের চিত্র তুলে ধরেছে সিএনএন। প্রতিবেদনের এ অংশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ৫-১৪ বছরের শিশুদের প্রায় ১৩ শতাংশ শিশু শ্রমের সঙ্গে যুক্ত। অথচ বাংলাদেশে ২০০৬ সালের শ্রম আইনে ১৪ বছরের নিচে শিশুকে শ্রমে নিয়োগ করাটা বেআইনি।

আশ্রয় কেন্দ্রে হ্যাপির নতুন জীবন:
নির্মম নির্যাতনে আঘাতের ক্ষত নিয়ে পালানো হ্যাপি এখন কেমন আছে তা জানাচ্ছে এই প্রতিবেদন।

সেখানেও হ্যাপির বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে, ‘আমার পরিবারের টাকার প্রয়োজন। আমি তাদেরকে কোনো টাকা দিতে পারি না, কারণ আমার কোনো কাজ ছিলো না। এজন্যই কাজ নিয়েছিলাম’।

বড় হয়ে কী হতে চাও এমন প্রশ্নের উত্তরে হ্যাপি জানায়,‘ আমি স্কুল-কলেজে পড়তে চাই এরপর অভিনেত্রী হতে চাই’।