চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

হংকংয়ের ক্ষমতায় থাকবে শুধু চীনের ‘দেশপ্রেমিকরা’

হংকংয়ের স্থানীয় নির্বাচনে হস্তক্ষেপের পথ চূড়ান্ত করেছে বেইজিং। হংকংয়ের পার্লামেন্ট নির্বাচনে কারা প্রার্থী হতে পারবেন, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে চীনের পার্লামেন্ট। হংকংয়ের পার্লামেন্টে ‘দেশপ্রেমিকদের’ ক্ষমতা নিশ্চিত করতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে, এমন দাবি বেইজিংয়ের।

শুক্রবার চীনের আইন প্রণেতারা হংকংয়ের ব্যাপারে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসে (এনপিসি) চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং স্বাগত বক্তব্যে বহির্বিশ্বকে সতর্ক করে বলেন, এ বিষয়ে কেউ যেন নাক না গলায়। তবে তিনি তার বক্তব্যে হংকংয়ের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কোনো কথা বলেননি।

জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নামে গত বছর জুনে হংকংয়ে বিতর্কিত আইন কার্যকর করে চীন। পরিকল্পনা অনুসারে হংকংয়ের পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রার্থীদের মনোনয়নও চূড়ান্ত করা হবে বেইজিং থেকে। হংকংয়ে কার্যকর নিরাপত্তা আইন নিয়ে সমালোচনা চলছে শুরু থেকেই। এর মধ্যে হংকংয়ের নির্বাচনের হস্তক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত জানাল বেইজিং। সমালোচকরা বলছেন, এর ফলে হংকংয়ে ‘এক দেশ দুই নীতি’ ভেস্তে যাবে।

১৯৯৭ সালে ব্রিটেন হংকংয়ের দায়িত্ব চীনের কাছে হস্তান্তর করে। ওই সময় চীনের সঙ্গে ব্রিটেনের করা দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে বলা হয়, হংকংয়ে কমপক্ষে ৫০ বছর পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন থাকবে। চুক্তি অনুসারে হংকংয়ে নিজস্ব আইন বলবৎ থাকবে। এ চুক্তির জোরে বাকস্বাধীনতা ও মুক্ত গণমাধ্যমের মতো অধিকার ছিল হংকংবাসীর। বেইজিং নতুন আইনের কারণ নামমাত্র স্বায়ত্তশাসন পাবে অঞ্চলটি, এমন অভিমত সমালোচকদের।

চীনের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তি হংকংয়ে কখনোই নিরবচ্ছিন্ন শান্তি ছিল না। বিতর্কিত প্রত্যাবাসন আইন নিয়ে ২০১৯ সালে হংকংয়ে নতুন করে আন্দোলন শুরু হয়। প্রত্যাবাসন আইন বাতিল হলেও আন্দোলন থামেনি। আন্দোলন দমনে গত জুনে জারি হয় বিতর্কিত নিরাপত্তা আইন। তাতে আন্দোলন স্তিমিত হওয়ার পরিবর্তে আরো জোরালো রূপ ধারণা করে। শুরু হয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড়। নিরাপত্তা আইনবলে গত মাসে অর্ধশতাধিক লোককে আটক করা হয়। গত সপ্তাহে তাদের বিরুদ্ধে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ শুরু হয়েছে মামলার শুনানি।

গণতন্ত্রকামীদের লাগাম আরো শক্ত করে টেনে ধরতেই চীন সরকার হংকংয়ের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করছে বলে মনে করেন সমলোচকরা। কংগ্রেসে নেওয়া সিদ্ধান্ত পাস হলে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই তা কার্যকর করা হবে বলে তাদের ধারণা।