স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও পরিচালক মো. আমিনুল হাসানকে তলব করেছে হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের সকল জেলা সদর হাসপাতালে ৩০ বেডের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) ও করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) স্থাপন প্রকল্পের অগ্রগতি প্রতিবেদন দেখে সন্তুষ্ট না হয়ে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেন।
আগামী ৮ জানুয়ারি মহাপরিচালক ও পরিচালককে আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন রিট মামলা সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
আজ বুধবার আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নুর উস সাদিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান। আর রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. বশির আহমেদ।
দেশের সকল জেলা সদর হাসপাতালে ৩০ বেডের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) ও করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) স্থাপনে প্রকল্পের অগ্রগতি জানাতে গত ২৮ আগস্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এরপর গত ৭ নভেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর সে প্রতিবেদ দেখে আজ আদালত তলব আদেশ দেন। এবিষয়ে রিটকারি আইনজীবী বশির আহমেদ বলেন: ‘প্রত্যেক জেলা সদরে আইসিইউ-সিসিইউ স্থাপনে কী কী ইক্যুইপমেন্ট দরকার তার তালিকা এবং আইসিইউ-সিসিইউ স্থপানে একটি প্রজেক্ট প্রোফাইল দেওয়ার কথা ছিল। এটা তারা করেইনি,বরং আগে যে প্রতিবেদনটা দিয়েছিল সেটির সাথেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক সমূহ) মো. আমিনুল হাসান বাড়তি এক পৃষ্ঠার বক্তব্য যুক্ত করে আরেকটি প্রতিবেদন দিয়েছেন; যেটিতে তারা লিখেছেন এই প্রকল্প স্থাপন করা মধ্য বা দীর্ঘ মেয়াদী প্রকল্পের মধ্যে পড়ে।’
এর আগে গত ২১ মে আদালত আইসিইউ-সিসিইউ’র হালনাগাদ তালিকা চেয়েছিলেন। গত ২৯ জুলাই তালিকা দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আমিনুল হাসান।
সে প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ৪৭টি জেলা সদর হাসপাতালে ৩০ বেডের আইসিইউ-সিসিইউ স্থাপনের কাজ চলছে। আর ১৭টি হাসপাতালে আইসিইউ-সিসিইউ স্থাপনের কাজ প্রক্রিয়াধীন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রতিটি জেলা সদর হাসপাতালে ৩০ বেডের আইসিইউ ও সিসিইউ স্থাপনের মত জায়গা আছে কিনা এবং প্রয়োজনীয় জনবল আছে কিনা তার তথ্য নেওয়া হচ্ছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জায়গা এবং জনবলের সঙ্কট থাকাতে প্রয়োজনীয় জায়গা তৈরি ও জনবল পদায়নের উদ্যেগ গ্রহন করা হচ্ছে। প্রয়োজনে এবং অগ্রাধিকার মূল্যায়ন করে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহের পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
ওই প্রতিবেদনে যেসব জেলা সদর হাসপাতালে আইসিইউ-সিসিইউ’র কার্যক্রম চালু আছে তার তালিকাও দেয় স্বাস্থ্য অদিদপ্তর। সেখানে বলা হয়, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ ও ৩০টি সিসিইউ বেড চালু আছে। নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে আইসিইউ বেড না থাকলেও সিসিইউ বেড আছে ২টি। কুষ্টিয়ায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ বেড নেই, ১৫টি সিসিইউ বেড আছে। পাবনা জেলা সদর হাসপতালে ৪টি আইসিইউ ও ৮টি সিসিইউ বেড আছে। ভোলা সদর হাসপাতালে সিসিইউ বেড আছে ৪টি। এছাড়া কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্চ, মানিকগঞ্জ, নোয়াখালী, পটুয়াখালী, জামালপুর, রাঙামাটি, নেত্রকোনা, নওগাঁ, মাগুরা, চাঁদপুর এবং হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ-সিসিইউ বেড স্থাপনের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত বছরের জুলাইয়ে ‘হিউম্যান রাইটস ল’ ইয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিং এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশে’র পক্ষে কোষাধ্যক্ষ মো. শাহ আলম এসংক্রান্ত একটি রিট করেন।