চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরেও ঠাঁই খুঁজছেন পাঁচ বীরকন্যা

স্বাধীনতার ৪৮ বছরে লাল-সবুজের বাংলাদেশ। স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া বীরকন্যারা নানা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছেন। বর্তমানে ১০ হাজার টাকা মাসিক ভাতা ছাড়াও অন্যান্য সুবিধাও পাচ্ছেন। তবে বীরকন্যাদের দাবি, তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই চান তারা।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বলছে, বীরকন্যাদের বাসস্থানের প্রকল্পের কাজ চলছে, যতো দ্রুত সম্ভব তা হস্তান্তর করা হবে।

তেজগাঁও রেল কলোনীর বস্তিতে বসবাস করছেন একাত্তরের পাঁচজন বীরকন্যা। স্বাধীনতাযুদ্ধের এতগুলো বছর পর তারা কীভাবে জীবন-যাপন করছেন? ভবিষ্যতের বাংলাদেশ দেখতে কেমন হবে? এসবসহ নানা বিষয় নিয়ে সেই বীরকন্যাদের সঙ্গে চ্যানেল আই অনলাইনের এ প্রতিবেদক কথা বলেছেন।

বঙ্গবন্ধুর সৈনিক ছিলেন অপ্রতিরোধ্য রিজিয়া
রিজিয়া বেগম, স্বামী মৃত আবু মিয়া সরকার। জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হলেও গত ৩০ বছর ধরেই ঢাকাতেই বসবাস। একমাত্র কন্যা জাহানারাকে নিয়ে রেল কলোনীর বস্তিতেই বসবাস। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নিজে গিয়েই এনেছেন মুক্তিযুদ্ধের বীরকন্যার স্বীকৃতি।

তিনি বলেন, শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো নেই। যুদ্ধের পর থেকে আমি অনেক কষ্ট করছি, এলাকার কোনো মানুষ আমাকে ভালোবাসেনি, আমাকে ঘৃণা করত। আমি কারো কাছে দাঁড়াতে পারি নাই, আমি ফার্মগেট মার্কেটে কাজ করতাম, আমি অনেক দুঃখ কষ্ট করে জীবন ধারণ করেছি। তেজতুরী বাজার বস্তি, রমনা বস্তিতে থাকার পর শেষমেষ এখানে এসে বসবাস করছি।

‘‘১৯৬৫ সালে যখন ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগে আমার বিয়ে হয়, এর দুই তিন বছর পর আমার প্রথম সন্তান হয়, কিন্তু হঠাৎ করেই জ্বর ঠান্ডায় মারা যায়, এরপর আরো একটি সন্তান হয় কিন্তু সেও একই ভাবে মারা যায়। যুদ্ধের সময় তেজতুরী বাজারে ছিলাম, সেখান থেকেই হানাদাররা তুলে নিয়ে যায়।’’

প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে নিজে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতি এনেছেন বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রিজিয়া বলেন: এই স্বীকৃতি আনতে আমার অনেক বিপদ হয়েছে। স্বীকৃতির জন্য রমজান নামের এক মুক্তিযোদ্ধার পেছন পেছন ঘুরেছি সে সাহায্য না করে আমার কাছে টাকা চেয়েছে। বলেছে আমাকে ৬০ হাজার টাকা দাও, আমি মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট বানিয়ে দেই, আমি বললাম, ‘খাইতে পারি না আমি টাকা দিব কিভাবে? আমি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক আমি টাকা দিয়ে সার্টিফিকেট নিব না।’

‘‘আমি রমজানকে বলেছিলাম, ‘তুমি কি জান আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে পারব, কোন সাহসে টাকা চাইলা, আমি চলতে পারি না, আমি দিন আনি দিন খাই। শাহজাহান নামের এক লোক আমায় বলেছিল ঈদুল ফিতরের দিন আপনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন।’’

বয়সের ভাড়ে নুয়ে পড়লেও কথায় এখনো অপ্রতিরোধ্য রিজিয়া বেগম

পরে আমি ঈদের দিন আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলেছিলাম, ‘আমি মুক্তিযুদ্ধের সময় লাঞ্ছিত হয়েছি, এতো কষ্ট করেছি, আমাকে এলাকার মানুষ কেউ ভালোবাসে না, কেউ কোনো সহযোগিতা করেনি।আমি মার্কেটে কাজ করে খাইছি, আমি ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনছি, আমি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, তেজগাঁও আসনে যখন বঙ্গবন্ধু ভোটে দাঁড়িয়েছিল তখন থেকে আওয়ামী লগের কর্মী হিসেবে কাজ করেছি অথচ আজ আমি কিছুই পাই নাই। আপনি যদি দয়া করে আমার জন্য কিছু করেন।

এরপর প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেন, ‘অবশ্যই আপনার জন্য আমি করব, আপনার নাম ঠিকানা বলেন।এরপর প্রধানমন্ত্রী আমাকে একটি কার্ডের ব্যবস্থা করে দেয় যেন আমি তার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা করতে পারি। পরে একদিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে নিজ হাতে দরখাস্ত জমা দিই, সেটা নিয়ে মন্ত্রণালয়ে যাই। এভাবেই নিজেই প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতি পাই।’

সরকারের কাছে চাওয়া এই তেজগাঁও রেল কলোনীর ভেতর সরকারী জায়গা আছে সেখানে যেন আমাকে বসত বাড়ি করে দেয়।একটু দুমুঠো খেয়ে যেন বেঁচে থাকতে পরি।

মুসলমানের ঘরে আশ্রয় পান সন্ধ্যা ঘোষ
অসুস্থ স্বামী করিমোহন ঘোষকে নিয়ে বসবাস করছেন সন্ধ্যা রাণী ঘোষ। দুই ছেলে ও চার মেয়ের জননী সন্ধ্যা রাণীর জন্ম সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরে। কিছুদিন আগেও ব্র্যাক সেন্টারে ডেলিভারির কাজ করলেও স্বামীর অসুস্থতার জন্য চাকরি বাদ দিয়ে তার দেখভাল নিয়েই সন্ধ্যাকে ব্যস্ত থাকতে হয়।

বর্তমানে এসব জটিলতার জন্য খুব একটা ভালো নেই জানিয়ে সন্ধ্যা ঘোষ বলেন, আমি খুব অসহায় অবস্থায় আছি, ঘরে স্বামী অসুস্থ, স্ট্রোক করেছে।

‘সরকারের কাছে শুকরিয়া যে আমাদের গেজেট করে দিয়েছে, ভাতাটা পাচ্ছি, কিন্তু এটা দিয়ে বাসা ভাড়াতেই অধিকাংশ টাকা চলে যায়। যদি আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতাম তাহলে অনেক ভালো হতো।’

স্বামীর কিছু জায়গা জমি ছিল তা বিক্রি করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন সন্ধ্যা রাণী

সন্ধ্যা ঘোষ বলেন, যুদ্ধের বছর দুয়েক আগে আমার বিয়ে হয়। যুদ্ধ শুরু হবার পর আমার ভাই ও স্বামী নিখোঁজ হয়। একদিন বাপের বাড়ি গেলে হানাদার বাহিনীরা আমাক তুলে নেয়। যুদ্ধের নয় মাস আমি মুসলমানের ঘরে আশ্রয় পেয়েছি। তারা আমাকে উদ্ধার করে সেবা শুশ্রুষার মাধ্যমে সুস্থ করেছে।

যুদ্ধের পরও তাদের কাছেই থেকেছি।দেশ স্বাধীনের পর আমার স্বামীর দেখা পাই। আমরা ঢাকায় এসে অনেক কষ্ট করেছি, বস্তিতে থেকেছি, বাসা বাড়িতে কাজ করেছি।

ভবিষ্যতে কেমন বাংলাদেশ দেখতে চান এমন প্রশ্নের জবাবে সন্ধ্যা রাণী ঘোষ বলেন: ভবিষ্যতের বাংলাদেশ সুখী ও সমৃদ্ধশালী দেখতে চাই। সন্ত্রাসমুক্ত ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ চাই। যেখানে হিন্দু-মুসলমান-খ্রিস্টান সবাই মিলে মিশে বসবাস করবে।

লাঞ্ছিতের সময় পাঁচ মাসের সন্তান হারায় লুৎফা
মুক্তিযুদ্ধের দুই বছর আগে আব্দুল কাদের বেপারীর সঙ্গে বিয়ে হন লুৎফা বেগমের, গ্রামের বাড়ি বরিশাল হলেও স্বামী চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকত।

যুদ্ধের সময় ও পরে অনেক মানসিক কষ্টের শিকার হয়েছি জানিয়ে লুৎফা বলেন: যুদ্ধের সময় যখন আমি লাঞ্ছিত হই তখন আমার গর্ভে পাঁচ মাসের সন্তান। যুদ্ধের পর আমার শ্বশুর বাড়ি আমাকে মেনে নিতে চায়নি, কিন্তু আমার স্বামী আমার পাশে ছিল।আমার স্বামী বলেছিল ওর তো কোনো দোষ নেই।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণের পর আমার স্বামী আমাকে বাপের বাড়ি রেখে ঢাকায় আসে, তারপরেই ঢাকায় গোলাগুলি শুরু হয় সবাই আমাকে বলে তোর স্বামী মারা গেছে। আমি তখন পাগল প্রায়, অন্যদিকে আমার শ্বশুরবাড়িতে পাক বাহিনীরা গিয়ে আমার ঘরে আগুন দিয়েছে, এই খবর আমার কাছে আসলে আমি আরো ভেঙ্গে পড়ি। একতো স্বামী হারিয়েছি তার মধ্যে ভিটামাটিতেও আগুন।

‘‘আমি শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে পাকবাহিনীর হাতে পড়ি। পরে মুক্তিবাহিনীরা আমায় খালের পাড়ে অজ্ঞাত অবস্থায় পায়।আমার এক বিয়াই আমাকে চিনতে পারে, আমাকে মুক্তি বাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে চিকিৎসা করায়।আমি সুস্থ্য হবার পর মুক্তি বাহিনীকে রান্না করে দিতাম, বিভিন্ন সহযোগিতা করতাম।

সিনেমার কাহিনীর মতোই হারানো স্বামীকে যুদ্ধের পর খুঁজে পেয়েছিলেন লুৎফা

পরে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে ঢাকায় চলে আসি। ওই সময় আমার স্বামী গ্রামের বাড়িতে যে গেছে সেটা আমি জানি না।আমার স্বামী আমাকে না পেয়ে আবার ঢাকায় চলে আসে।আমার স্বামী যেহেতু মগবাজারে চাকরি করত আমি ঢাকায় আসার পর সেখানেই তাকে খুঁজতাম। একদিন হঠাৎ করেই তাকে পেয়ে গেলাম।পরে উনি আমাকে দেখেই বলে ‘তুমি বেঁচে আছো, কতো জায়গায় তোমায় খুঁজেছি।’’

সরকারের কাছে কি চাওয়া এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই,শান্তিতে একটু কথা বলতে পারি না।একটু আশার আলো নিয়ে বেঁচে আছি যে সরকার বসতবাড়ি দিবে আর আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম ভালভাবে থাকতে পারবে।

তিন ছেলে ও এক মেয়ের জননী লুৎফা বেগম ভবিষ্যত বাংলাদেশকে সন্ত্রাসমুক্ত সমৃদ্ধশালী দেখতে চান।

স্বামী সন্তান নিয়ে মাটির নীচে গর্ত করে চৌদ্দ দিন ছিলেন নূরজাহান
ভাতের অভাবে কুমিল্লা থেকে ছোটবেলায় ঢাকায় চলে আসে নূরজাহান বেগম।চার ছেলে এক মেয়ের জননী নূরজাহান তেজকুনী পাড়াতেই যুদ্ধের পর থেকে বসবাস করছেন।

যুদ্ধের সময় স্বামী লিলু মিয়া জীবিত ছিলেন, তেজকুনী পাড়ায় মাটির নীচে গর্ত করে স্বামী সন্তান নিয়ে চৌদ্দ দিন ছিলাম।

তিনি বলেন, কারওয়ান বাজারে একদিন বোম ফুটে। মাটির নীচটা কেঁপে ওঠে। রাজাকার, হানাদার বাহিনীরা এ গর্তের ভেতর ঢুকে।আমি স্বামী সন্তান নিয়ে হাঁটা শুরু করি ফরিদপুরের দিকে। তিন দিন হাঁটছি, ধানক্ষেত, হাওড়, নদী-নালায় থাকছি। তিনদিন হাঁটার পর একটা নদী পাই, সেখানে আরো অনেকে ছিল।আমরা সবাই নৌকার ভেতর আশ্রয় নিয়েছিলাম, কিন্তু একদিন রাতে রাজকার আর হানাদার বাহিনীরা এসে আমাদের তুলে নিয়ে যায়।

একাত্তরে রাজধানীতে পাক হানাদার বাহিনীর নৃশংসতার কথা মনে এখনো কেঁদে ওঠে নূরজাহান

বর্তমানে কেমন আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাতা নিয়ে অনেক সুখে জীবন যাপন করছি। আগে ভাত কাপড় পাই নাই, এখন পাই।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক উপকার করছে আমাদের তাহলে না হলে আমরা ভিক্ষা করে খেতাম।

‘‘অনেক কষ্ট করছি যখন আমরা ভাতা পেতাম না, চাল ডাল লবণ কেনার টাকা ছিল না। এখন আমদের অনেক সুখ।এখন দুঃখ একটাই যে আমাদের থাকার কোনো জায়গা নেই।একটু ভিটামাটি থাকলে আমাদের দিন ভালো চলে যেত।’’

যুদ্ধে স্বামীসহ দুই সন্তান হারায় রংমালা
জামালপুর জেলার ইসলামপুরে জন্ম মোছাম্মদ রংমালার। স্বামী মৃত ভোলা শেখ। বর্তমানে রেল কলোনীতেই বসবাস। চার সন্তানের মধ্যে দুই সন্তানকে যুদ্ধে হারাতে হয় রংমালার।

যুদ্ধের সময় বোনের বাড়িতে যাবার পথে পাক হানাদার বাহিনীর কাছে ধরা পড়েন তিনি। পরে মুক্তিযোদ্ধারা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা করায়।

রংমালা বলেন, যুদ্ধের সময় ঢাকায় ছিলাম, এখানেই আমার দুই সন্তান মারা যায়, এক সময় স্বামীও নিখোঁজ হয়, অনেকের মুখে শুনেছি দিনাজপুরে পাক হানাদার বাহিনীরা তাকে মেরে ফেলে।

চোখ অপারেশনের জন্য ঠিকমতো দেখতে পান না রংমালা

‘‘অনেক অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে দিন পার করেছি, এখন একটু ভালো আছি। জটিলতার কারণে বছর খানেক ধরে ভাতা পাচ্ছি। তবে সরকারের কাছে অনুরোধ আমার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন ভালো থাকতে পারে সেজন্য একটু ভিটামাটির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।’’

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় বলছে দ্রুত সময়ে বীরকন্যাদের বাসস্থান দেওয়া হবে
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বলছে, মুক্তিযুদ্ধের বীরকন্যারাও মুক্তিযোদ্ধা। আমরা প্রকল্প হাতে নিয়েছি আগামী দুই বছরের মধ্যে ১৬ হাজার মুক্তিযোদ্ধাদের (বীরকন্যাসহ) ১৫ লাখ টাকার বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হবে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, বীরকন্যাদের বাসস্থানের কাজ চলছে, দ্রুত সময়ের ভেতরে তা হস্তান্তর করা হবে।

বীরকন্যাদের সুবিধা নিশ্চিতে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ
মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি বীরকন্যা এ দেশের প্রতিটি বাঙালির কাছে মাতৃতুল্য জানিয়ে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, বীরকন্যা মায়েদের সম্ভাব্য সব ধরনের সুবিধা নিশ্চয়তা প্রদানে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

তিনি বলেন, আমাদের বীরকন্যা মা-বোনদের নাম, তাদের ত্যাগ বাঙালি জাতির ইতিহাসে আজীবন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। নিজ মাকে যেমন শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখতে হয়, আমাদের প্রতিটি বীরাঙ্গনা মাকেও সেই শ্রদ্ধা নিয়ে দেখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার সকল মুক্তিযোদ্ধার পাশাপাশি প্রতিটি বীরকন্যা মায়ের প্রতি যত্মশীল।

৯০ বীরকন্যাকে সহযোগিতা করেছে সামাজিক সংগঠন চেষ্টা
সামাজিক নারী সংগঠন চেষ্টা এখন পর্যন্ত ৯০ জন বীরকন্যাকে আর্থিক সহযোগিতা ও সম্মাননা প্রদান করেছে।

জানতে চাইলে চেষ্টার সভাপতি সেলিনা বেগম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বীরকন্যাদের খুঁজে বের করে তাদের সম্মাননা ও পুনর্বাসনের ব্রত নিয়েই চেষ্টা আত্মপ্রকাশ করে।

সরকারের কাছে আমাদের চাওয়া তারা যেন বীরকন্যাদের ভাতা কার্যক্রমটি চালিয়ে যায়, কোনো অবস্থাতেই যেন বন্ধ না হয়। পাশাপাশি সমাজের সুধীজনদেরও বীরকন্যাদের পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ জানান তিনি।

বীরকন্যাদের সঙ্গে চেষ্টার সভাপতি সেলিনা বেগম

বীরকন্যাদের বাসস্থানের বিষয়ে আপনারা সংগঠনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে কি বলেছেন জানতে চাইলে সেলিনা বেগম বলেন: আমাদের গতবারের বীরকন্যা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছিলেন আপনারা যদি তাদের ঠিকানাসহ কাগজপত্র নিয়ে আসেন তাহলে আমি এক’শ ঘর দিব। আমরা বীরকন্যাদের বিষয়টি জানিয়েছেলাম কিন্তু এসব নথিপত্রে সরকারি বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার স্বাক্ষর প্রয়োজন হয় যা তারা করে এখনো উঠতে পারে নি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বীরকন্যাদের জীবন সায়াহ্নে সামান্যতম ছাউনি হিসেবে পাশে দাঁড়িয়েছে চেষ্টা। ভবিষ্যতে বীরকন্যাদের বংশধরদের জন্যও আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

ছবি: জাকির সবুজ