দেশের হয়ে তিনটি বিশ্বকাপ খেলেছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। একটাতেও ফাইনালে উঠতে পারেনি সাউথ আফ্রিকা। একইভাবে চারটি আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলেছেন। বিশ্বকাপের মতো এখানেও ফাইনালে যেতে ব্যর্থ প্রোটিয়ারা।
এবি আইসিসি ওয়ার্ল্ড টি-টুয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলেছেন পাঁচটি। এই পাঁচবারে ফাইনালের মুখ দেখেনি সাউথ আফ্রিকা।
জাতীয় দলের জার্সির বাইরে ১২ বছর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) খেলেছেন। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোরের হয়ে দুটি ফাইনাল খেললেও দুটিতেই হেরেছেন। একটি ফাইনালেও ব্যাট হাতে দাগ কাটতে পারেননি।
এছাড়া বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল), পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) এবং সাউথ আফ্রিকার মজানসি সুপার লিগও খেলেছেন। কোনোটাতেই ফাইনালে উঠতে পারেননি।
সাউথ আফ্রিকায় টাইটানসের হয়ে একবার শিরোপা জিতেছেন এবি। তবে ট্রফি জয়ের প্রধান পারফর্মার তিনি ছিলেন না। বরং দলের হয়ে মূল পারফর্মার ছিলেন হেনরি ডেভিডস, অ্যালবি মরকেল এবং ফারহান বেহারদিয়েন। শেষদিকে এবি চেয়ে পারফরম্যান্সে এগিয়ে ছিলেন এইডেন মার্করামও।
বিশ্বকাপের পরিসংখ্যান দিয়ে ডি ভিলিয়ার্সকে মাপা এবং তার দক্ষতা সম্পর্কে একটুও সন্দেহ নেই। তিনি বিশ্বকাপের ম্যাচে সাউথ আফ্রিকার সর্বোচ্চ রান-স্কোরার। গড় ৬৩.৫২। কিন্তু সেই রান সাউথ আফ্রিকাকে বিশ্বকাপ জিততে বা এমনকি ফাইনালেও খেলতে সাহায্য করেনি।
‘মিস্টার ৩৬০’ ডিগ্রি একজন ভীষণ প্রতিভাবান, যখন তখন অনেককিছু করতে পারেন। কিন্তু তিনি যথেষ্ট জেতেননি– বিশেষ করে সীমিত ওভারের ফরম্যাটে যেখানে তিনি সুখ্যাতি অর্জন করেছেন।
ক্রীড়াঙ্গনে ডি ভিলিয়ার্সের বড় বড় সব নায়ক লেব্রন জেমস, টাইগার উডস এবং রজার ফেদেরার তাদের সাফল্যের পরিমাপ করেন। তারা পরিসংখ্যানের মাধ্যমে বিখ্যাত হননি বরং তারা কতটি শিরোপা জিতেছেন তার দিয়ে তাদের বিচার করা হয়।
ডি ভিলিয়ার্স সীমিত ওভারের ফরম্যাটে কিংবা ফ্র্যাঞ্চাইজি বা দেশের হয়ে কিছুই অর্জন করেননি। যা তুলে ধরে তিনি ফ্যাফ ডু প্লেসিসকে এই জঘন্য কথাটি বলতে পারেন, ‘আমি প্রোটিয়াদের বাঁচাতে পারি।
২০০৭ ও ২০১১ বিশ্বকাপে সাউথ আফ্রিকা দলের ‘প্রধান ব্যক্তি’ ডি ভিলিয়ার্স ছিলেন না। সেখানে দলের গুরু দায়িত্ব ছিল জ্যাক ক্যালিস, গ্রায়েম স্মিথ, শন পোলক ও মার্ক বাউচারের মতো সিনিয়র ক্রিকেটারদের কাঁধে।
২০১৫ বিশ্বকাপে প্রোটিয়া দলের ‘মূল ভরসা’ ছিলেন এবি। কিন্তু হাতছোঁয়া দূর থেকে ফাইনাল মিস করেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে তার মতো দলও সুযোগ নষ্ট করে।
গত দুই বছরে ডি ভিলিয়ার্স আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনেকবার ফ্লপ করেছেন, কেবলমাত্র তার দলের সহকর্মী বা কোচিং স্টাফই নয়, জাতীয় নির্বাচকরা তাকে বিশ্বাস করতে পারেননি। তিনি একজন বিশেষ খেলোয়াড়, কিন্তু কখনোই সফলতার নিশ্চয়তা দিতে পারেননি।
দুদিন আগেই বিস্ফোরক খবর বের হয় জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ খেলতে চেয়েছিলেন ডি ভিলিয়ার্স। কিন্তু বোর্ড তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে। সেই প্রকাশের পর দেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটারের ব্যর্থচিত্র নিয়ে এমনই এক বিশ্লেষণ লিখেছে সাউথ আফ্রিকার প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক ‘সানডে ইন্ডিপেনডেন্ট’।