কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতায় স্ত্রী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন এই দাবিতে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনকে (ডিএসসিসি) লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে ডিএসসিসির মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠান তিনি।
লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করা হয় যে: আইনজীবী তানজিম আল ইসলামের স্ত্রী সাদিকুন নাহার গত ২৯ জুন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে খিলগাঁওয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি হন ও তার রক্তে প্লাটিলেট ১১ হাজারে নেমে অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে দাঁড়ায়। চিকিৎসকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় পাঁচ দিন পর কিছুটা সুস্থ হন তিনি। আর গত বছরের অক্টোবরে আইনজীবী তানজীম ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
নোটিশে আরো বলা হয়: নোটিশ গ্রহীতাদের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে মশা নিধন করা ও সিটির বাসিন্দাদের জন্য শহরকে বাসযোগ্য নগরীতে রূপান্তরিত করা। কিন্তু, এ এলাকায় (খিলগাঁও থানার ১ নম্বর ওয়ার্ড) প্রায় তিন বছর বসবাস করছি। এখন পর্যন্ত মশা নিধনে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখিনি। এমনকি, সচেতনতামূলক প্রচারণাও করা হয়নি। ভয়ঙ্কর এডিস মশা নিধনে ব্যর্থতা স্পষ্ট প্রতীয়মান ও এর জন্য আপনারা দায়ী।
লিগ্যাল নোটিশে আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম বলেন: ‘আমার স্ত্রীর চিকিৎসা ও তার ডেঙ্গু জ্বরের কারণে আমার মোট ৫০ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষয়ক্ষতির জন্য আপনারা (ডিএসসিসি) আইনত দায়ী। তাই এ নোটিশ পাওয়ায় সাত কার্যদিবসের মধ্যে আপনাদের ব্যর্থতার দরুন আমাকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে বাধিত করবেন। সেই সঙ্গে এডিস মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে এবং খিলগাঁওয়ের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মশা নিধনে ৩ দিনের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হলো। অন্যথায়, টর্ট আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ আদায়ে ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়াসহ অন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্যমতে, গত বছর জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৪২৮ জন। এর মধ্যে জুনে আক্রান্ত হয়েছিল ২৯৫ জন। মৃত্যু হয়েছিল চারজনের। এ বছর একই সময়ে আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে গত জুন মাসে আক্রান্ত হয়েছে এক হাজার ৭১৩ জন, যা গত বছর জুনে আক্রান্তের চেয়ে প্রায় সাত গুণ বেশি। সরকারি হিসাবে এ বছরের শুরু থেকে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় দুই হাজার ৬৬ জন। তাদের মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৩২৬ জন। এই পরিস্থিতিতে গত ৭ জুলাই ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন দাবি করেছিলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।