২৫শে মার্চের সেই কালরাত্রির অন্ধকার পেরোতে আলোর যাত্রায় অংশ নিয়েছে লাখো বাঙালি। আলো জ্বালিয়ে দেশকে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন কর্মসূচিতে অংশ নেয়া সকলে। তরুণ প্রজন্মকে আলোর পথে এগিয়ে চলার আহ্বান জানান বিশিষ্টজনেরা।
একাত্তরের ২৫ শে মার্চ বাঙালি জাতির জীবনে বিভীষিকাময় এক কালরাত। ভয়াল সেই রাতের স্মৃতি স্মরণে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে লাখো মানুষের আলোক প্রজ্জ্বলন।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকের ২৫ মার্চে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম বর্বরতার চাক্ষুষ বিবরণ দিয়ে বলেন, সে রাতে রাজপথে ছিল শুধু রক্ত আর রক্ত। সেই রক্তের ওপর দিয়ে তারা তরুণরা জয়বাংলা স্লোগানে রাজপথে নেমেছিলেন। রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স থেকে পুলিশের সদস্যরা শুধু থ্রি নট থ্রি বন্দুক নিয়ে যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন, সেটিই ছিল সে মুহূর্তে বাঙালির সবচেয়ে প্রবল প্রতিরোধ। তিনি বলেন, সে রাতেই বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা আসে, ‘আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন।’
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক আরও একবার সাবধান বাণী শোনালেন নতুন প্রজন্মকে। তিনি বলেন, এখনও জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করার জন্য। সে কথা মনে রেখে আত্মতৃপ্তিতে উদাসীন হলে চলবে না, নতুন প্রজন্মের কোটি চোখকে সর্বদা সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে, ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের চেতনা থেকে বাংলাদেশ যেন বিচ্যুত না হয়। ষড়যন্ত্রকারীদের অশুভ চক্রান্তের জাল ছিন্ন করতে হবে নতুন প্রজন্মকেই।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষরা জীবন দিয়ে স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, দিয়েছেন লাল-সবুজ পতাকা, গর্বের আত্মপরিচয়। নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে সেই আত্মমর্যাদাসম্পন্ন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নের বন্দরে। যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, সে স্বপ্ন প্রতিষ্ঠিত হবেই, নতুন প্রজন্ম ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তঋণ শোধ করবেই, বাঙালি জাতিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর দৃঢ়কণ্ঠে উচ্চারণ, আমরা ভুলিনি, ভুলব না একাত্তরের সেই বীর শহীদদের। ২৫ মার্চের কালরাত্রিতে বর্বর পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর নৃশংসতায় জীবন দেওয়া হাজারো বাঙালি, নয় মাসের যুদ্ধে যারা প্রতিরোধ গড়তে গিয়ে আত্মাহুতি দিয়েছেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আর তাদের দোসর রাজাকার, আলবদরদের নির্মমতার শিকার হয়ে যারা জীবন হারিয়েছেন, তাদের কাউকে আমরা ভুলব না কখনই, কোনোদিনই। লাখো শহীদের রক্তের শপথে আলোর পথযাত্রায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের দারিদ্র্যমুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়বই।
বেসরকারি মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন এবং প্রথম ডিজিটাল বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল আইয়ের যৌথ আয়োজনে অংশ নেয় সমাজের বিশিষ্ট নাগরিকরা। নতুন প্রজন্মকে কালাত্রির সে দু:সহ স্মৃতি শোনান তারা।