পুরো সিরিজে একাই যেন খেললেন তৌহিদ হৃদয়। ডানহাতি এ ব্যাটসম্যানকে থামানো যেন দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছিল শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের জন্য। টানা তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে লঙ্কান যুবাদের বিপক্ষে ৪-০তে বাংলাদেশকে সিরিজ জেতালেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ব্যাটসম্যান। গড়লেন বিশ্ব রেকর্ডও।
অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটের ওয়ানডেতে আগে টানা দুটি করে সেঞ্চুরির রেকর্ড থাকলেও টানা তিনের কীর্তি ছিল না। হৃদয়ের ব্যাটে এখন সেই রেকর্ডও দেখল ক্রিকেট বিশ্ব।
এর আগে ইংল্যান্ডের স্যার অ্যালিস্টার কুক, অস্ট্রেলিয়ার প্রয়াত ব্যাটসম্যান ফিলিপ হিউজ, ভারতের উন্মুক্ত চাঁদ-গৌরব ধিমান ও শুভমন গিল, সাউথ আফ্রিকার এইডেন মার্করাম-জোনাথন বার্ড, বাংলাদেশের মাহমুদুল হাসান জয়, পাকিস্তানের সামি আসলাম ও শ্রীলঙ্কার আভিষ্কা ফার্নান্দোর ছিল টানা দুই সেঞ্চুরির রেকর্ড। তাদের সবাই ছাড়িয়ে এখন চূড়ায় তৌহিদ হৃদয়।
পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি হয়েছিল বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত। পরের ম্যাচে খুলনায় ৮২ রানে অপরাজিত ছিলেন তৌহিদ। তৃতীয় ম্যাচে খেলেন ১২৩ রানের আরেকটি হার না মানা ইনিংস। চতুর্থ ম্যাচে ১১৫ রানের পর চট্টগ্রামে মঙ্গলবার ১১১ রানের ইনিংস এসেছে তার ব্যাটে। যার কল্যাণে লঙ্কানদের বিপক্ষে ৫০ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।
প্রথমে ব্যাট করে তৌহিদের সেঞ্চুরিতে ৭ উইকেটে ২৮৩ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে ৩২ বল আগেই ২৩৩ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা।
রেকর্ডময় তৌহিদ
টানা তিন সেঞ্চুরিতে রেকর্ড ভেঙে-চুরে একাকার করেছেন তৌহিদ। যুব ক্রিকেটে তিনিই প্রথম ব্যাটসম্যান যিনি দ্বিপাক্ষিক সিরিজে পেলেন তিন সেঞ্চুরির দেখা। এর আগে শেখর ধাওয়ান ও জ্যাক বার্নহাম তিন সেঞ্চুরি পেলেও তাদের শতকগুলো ছিল বিশ্বকাপে। ধাওয়ান ২০০৪ ও বার্নহামের সেঞ্চুরিগুলো ছিল ২০১৬ বিশ্বকাপে। ২০০৫ আফ্রো-এশিয়া কাপে তিন সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন গৌরব ধিমান।
যুব ক্রিকেটে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে এক বর্ষপঞ্জিতে চার সেঞ্চুরি করেছেন তৌহিদ। ২০১২ সালে চারটি করে সেঞ্চুরি ছিল সাউথ আফ্রিকার কুইন্টন ডি কক ও উন্মুক্ত চাঁদের।
বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা চার ম্যাচে ৫০ পেরনো ইনিংস খেলেছেন তৌহিদ। এর আগে সাবেক অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ ২০১৬ বিশ্বকাপে ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তানজিদ হাসান খেলেছিলেন টানা চারবার পঞ্চাশ পেরনো ইনিংস।
৪৩১ রান নিয়ে ৫ ম্যাচের দ্বিপাক্ষিক সিরিজে এখন সবচেয়ে বেশি রান তৌহিদের। ৪ ম্যাচের সিরিজে ৪২৪ রান আছে ক্রিস গেইলের। সবমিলিয়ে যেকোনো সিরিজে সবচেয়ে বেশি রান শেখর ধাওয়ানের। ২০০৪ যুব বিশ্বকাপে ৭ ইনিংসে ৫০৫ রান ভারত ওপেনার।
তৌহিদই প্রথম ব্যাটসম্যান যিনি যুব পর্যায়ে এক বছরে ১০০০ রান তুললেন। চলতি বছরে তার রান হল ১০০১ রান। মাত্র ৪০ ইনিংসে ১৫০০-এর বেশি রান পাওয়া তৃতীয় ব্যাটসম্যান এখন এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এর আগে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত (১৮২০) ও পাকিস্তানের সামি আসলামের (১৬৯৫) ছিল এ কীর্তি।