উচ্চ আদালতে অনিয়ম ও দুর্নীতির যেসব গুরুতর অভিযোগ অ্যাটর্নি জেনারেল এনেছেন তা সমর্থন করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবার প্রধান বিচারপতিকে সেসব ‘দুর্নীতি’ তদন্তে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেছেন। নতুন প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে সৌজন্য সাক্ষাতের পর সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন: ‘অ্যাটর্নি জেনারেল সেদিন সংবর্ধনার সময় আদালতে অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা বলেছেন। অনেক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সেটার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। আমার বিশ্বাস যে বিচার বিভাগকে পরিচ্ছন্ন করতে আরো যেসব জায়গায় আপনার পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ, প্রধান বিচাপতি তা নেবেন।’ আমরাও মনে করি, আদালতে যদি এরকম কোন অনিয়ম হয়ে থাকে প্রধান বিচারপতি সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অ্যাটর্নি জেনারেলের গুরুতর অভিযোগ ছিল: ‘বিশেষ বিশেষ কিছু কোর্ট বিশেষ বিশেষ আইনজীবীর কোর্ট হয়ে গেছে। বিচারপ্রার্থী ব্যক্তিগণ অনেকে জেনে গেছেন, কোন কোর্টে কাকে নিয়ে গেলে মামলা জেতা যাবে। এটাতো ন্যায় বিচারের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। অনেকেই ছুটছেন বিচারপতিদের সন্তান, স্ত্রী যারা আইনজীবী হিসেবে নিয়োজিত আছেন তাদের দিকে এই চিন্তা করে যে, এদেরকে নিয়ে গেলে হয়তো মামলায় জেতা যাবে।’ অ্যাটর্নি জেনারেলের এই অভিযোগ যদি সত্যি হয় তাহলে বিচার ব্যবস্থা কীভাবে চলছে তা কল্পনাও করা যায় না। শিগগিরই এসব অভিযোগ তদন্ত করতে হবে। অ্যাটর্নি জেনারেলের এমন বক্তব্যের পর সাধারণ মানুষের ন্যায় বিচার প্রাপ্তির বিষয়ে আমরা শঙ্কিত। প্রধান বিচারপতি এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমরা আশা করি। তবে তিনি এবং অন্যান্য বিচারপতিগণ নিজেদের শপথ অনুযায়ী যে কোন বিষয়ে অনুরাগ এবং বিরাগের বশবর্তী হবেন না বলেই আমাদের বিশ্বাস। অবশ্য দায়িত্ব গ্রহণের পর এসব বিষয়ে কোন ছাড় দেবেন না বলে ইতোমধ্যে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। আমরা তার কথায় আশ্বস্ত হতে চাই। পাশাপাশি এসব অভিযোগ যেন আবার বিচার বিভাগকে কৌশলগত কোন চাপে না রাখে সেই বিষয়টিও নির্বাহী বিভাগকে নিশ্চিত করতে হবে।সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. রুহুল আমিন এক সময় বিচার বিভাগে মহাপ্রলয় ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন। সেই প্রলয় যেন ঘটে না যায় সে বিষয়ে সকল পক্ষকেই সংযত এবং সতর্ক থাকতে হবে।