শিশু সুমনা হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে ১২ বছর বয়সী হত্যাকারী নাঈম। ওই ঘটনায় নাঈমের বাবা এরশাদ ও তার মা নারগিসকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে ১৪৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যার কথা স্বীকার করে নাঈম।
স্থানীয় সাংবাদিক মেহদী হাসান জানান, গত মঙ্গলবার পাবনা জেলার ফরিদপুর উপজেলার সোনাহারা গ্রামের চার বছরের শিশু সুমনার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে ফরিদপুর থানা পুলিশ। এসময় ঘটনাস্থল থেকে এরশাদ (৪৫)তার স্ত্রী নারগিস (৪০) এবং তাদের বড় সন্তান নাঈম(১২)কে আটক করা হয়।
ফরিদপুর থানার ইনচার্জ এস এম আবুল কাসেম আজাদ ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি তদন্ত জালাল উদ্দীন জানান: নাঈমের বাবা-মাকে জেরার এক পর্যায়ে তাকেও জিজ্ঞেস করা হলে সে হত্যার কথা স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দেয়।
নাঈম তার বর্ণনায় বলে, গত শনিবার বেলা ১০টার সময় ইট ভাটার নিকট সে, সুমনা ও তার ছোট ভাই আজাদ (৩)খেলা করছিলো। খেলাধুলার এক পর্যায়ে আজাদকে সুমনা ধাক্কা দেয়। এতে নাঈম ক্ষিপ্ত হয়ে সুমনার গলা চেপে ধরে কিছুক্ষণ পর সুমনা নিস্তেজ হয়ে পরলে সে তার নাকে হাত দিয়ে দেখে সুমনার শ্বাস আছে কিনা? সুমনার মৃত্যু নিশ্চিত হলে সে তাকে কাঁধে নিয়ে পাশেই নাঈমের ফুপা রবিউলের নির্মাণাধীন বাড়িতে নিয়ে যায়। তার নিকট রক্ষিত চাবি দিয়ে দরজা খুলে বালির মধ্যে সুমনার লাশ পুতে রাখে। পরতীতে সে স্বাভাবিকভাবেই তার ছোট ভাই ও অন্যদের সাথে খেলতে থাকে। তবে মাঝে কয়েকবার সে জানালা দিয়ে সুমনার লাশ দেখতে যায় এবং লাশের পরিস্থিতি লক্ষ্য করে।
সাক্ষ্য গ্রহণকারীরা বলেন: গত সোমবার বিকেলে আবার দেখতে গেলে লক্ষ্য করে লাশের উপর মাছি পরছে এবং দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। ধরা পরার ভয়ে সে ঘরের চাবি খুলে ঘরে প্রবেশ করে। ঘরের মধ্যে থাকা বস্তার বালি ফেলে বস্তার মধ্যে সুমনার লাশ ভরে ঘরের সানসেটে রাখা ওয়ারড্রব এর ড্রয়ার পেরে একটি ড্রয়ারে সুমনার লাশ তুলে ঘরের বারান্দায় নিয়ে আসে। উদ্দেশ্য ছিলো লাশটি পাশের ক্ষেতের মধ্যে ফেলে দেওয়া। কিন্তু ভাটার লোকজন কাজ করায় তা সম্ভব হয়নি।
সাক্ষ্য গ্রহণকারীরা আরও জানান: ঘটনা বর্ণনার সময় সে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ছিল। তবে সুমনার বাবার অভিযোগ হত্যাকাণ্ডের সাথে নাঈমের বাবা-মাও জড়িত আছে। তাছাড়া নাঈমের পক্ষে একা হত্যা করা সম্ভব নয়।
নাঈম সোনাহারা এবতেদায়ী মাদ্রাসার ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র।
উল্লেখ্য, পাবনার ফরিদপুর উপজেলার সোনাহারা গ্রামের সজিব এর কনিষ্ঠ মেয়ে সুমনা (৪) নিখোঁজের তিন দিন পর গত মঙ্গলবার সুমনার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে ফরিদপুর থানা পুলিশ।