চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকায় ওই হামলা

হলি আর্টিজান হামলার ৩ বছর

রাজধানীর গুলশানের অভিজাত বেকারি হলি আর্টিজানে হামলার তিন বছর পর পুলিশ বলছে, সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকায় ওই হামলার ঘটনা ঘটেছিল।

হামলার তিন বছর পূতি উপলক্ষে রোববার বিকেলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, এই ধরনের আদর্শের লোকদের ইনটেন্ট ও ক্যাপাবিলিটি বেশি থাকলে হামলা প্রতিরোধ করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আসলে সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকায় হামলাটি ঘটেছে।

সেখানে গোয়েন্দা ব্যর্থ্যতা ছিল কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন: ব্যর্থতা ওই অর্থে বলা ঠিক হবে না। আমাদের কাছে কিছু তথ্য ছিল তবে তা সুনির্দিষ্ট ছিল না। দূতাবাস এলাকায় একটা হামলা হতে পারে বলে ভাসা-ভাসা তথ্য ছিল। সেজন্য আমরা নিরাপত্তাও জোরদার করেছিলাম। আমরা যেভাবে ইন্টেলিজেন্স সংগ্রহ করি সেটাকে একটা প্রসেস করে একটা অ্যাসেসমেন্ট দাঁড় করাই। আবার কখনো কখনো জঙ্গিদের যোগাযোগে নজরদারি বাড়ানো হয়। নিরাপত্তা জোরদার করেছিলাম, চেকপোস্ট ছিল।

মনিরুল বলেন, দীর্ঘ তদন্ত শেষে আমরা ৮ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দিয়েছিলাম। হামলায় জড়িত বাকি ১৩ জন বিভিন্ন সময় অভিযানে নিহত হয়েছেন। অভিযুক্ত ৮ জনের মধ্যে দুইজন পলতক ছিলেন, যারা পরে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এখন সকলেই জেলে আছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিচারিক প্রক্রিয়া চলমান বলে জানিয়েছে পুলিশ।

‘‘আমরা বলেছিলাম, তদন্তে আরো কারো নাম বেরিয়ে আসলে সম্পূরক অভিযোগপত্র দিবো। কিন্তু পরে বাকি দুইজনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছি আমরা। কিন্তু  কারো বক্তব্যে অভিযোগপত্রে সংযুক্ত করার মতো এখনো নতুন কারো নাম আসেনি, নতুন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ৮ জনের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া চলমান।’’

সংবাদ সম্মেলনে মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম

তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর সারাদেশে সমালোচনা হয়েছে। জঙ্গিবাদবিরোধী ঘৃণা জন্মেছে। এরমধ্যেও শোলাকিয়ায় হামলা চালনো হয়েছে।

হলি আর্টিজান হামলার মামলাটিতে হামলার মূল সমন্বয়ক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে রাশেদুর ইসলাম র‌্যাশ, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ, হাদিসুর রহমান সাগর, শরিফুল ইসলাম খালেদ এবং মামুনুর রশীদ রিপন বর্তমানে কারাগারে আছেন।

২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিরা নারকীয় হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে।

এর আগে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের ওপর গ্রেনেড হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন নিহত হন।

পরে সামরিক বাহিনী অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করে। অভিযানে ছয় জঙ্গি নিহত হয়।