পাবনা জেলার ঈশ্বরদীতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ট্রেন সফরে বোমা ও গুলি বর্ষণের দায়ে মামলার ৩০ জন আসামীর জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। রোববার পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো: রোস্তম আলী এক আদেশে তাদেরকে জেল হাজতে পাঠান।
এ মামলার অপর ২২ আসামির বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। আসামিরা সবাই বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী।
১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশনে ওই বোমা এবং গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে।
পাবনা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট ওবায়দুল হক জানান: তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ট্রেন সফর কর্মসূচি চলছিল। ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে তিনি খুলনা থেকে ঈশ্বরদী অভিমুখে রওয়ানা হন এবং পাকশীতে পৌঁছানো মাত্রই তার ট্রেন লক্ষ্য করে বোমা ও গুলি বর্ষণ করা হয়।
ওবায়দুল হক বলেন: সন্ত্রাসীরা পাকশী থেকে ঈশ্বরদী স্টেশন পর্যন্ত তার ট্রেন সফরে বোমা ও গুলি ছোঁড়েন। এতে শেখ হাসিনা ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে গেলেও অসংখ্য নেতা-কর্মী আহত হন।
পিপি অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান মুক্তা জানান: এ ঘটনায় ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানা পুলিশ একটি মামলা দায়ের করে। বিএনপি আমলেই আদালতে ওই মামলার চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করা হলে আদালত তা গ্রহণ না করে মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তর করেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৭ সালে সিআিইডি তদন্ত শেষে পাবনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ৫২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। আসামিরা সবাই বিএনপির নেতা-কর্মী। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির তৎকালীন সভাপতি আক্তারুজ্জামান, বিএনপি নেতা আব্দুল জব্বার, শাহিন প্রমুখ। আসামিরা পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেয়।
রোববার পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ মামলার ধার্য তারিখে ৩০ জন আসামি হাজির হলে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো: রোস্তম আলী তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ সময় আদালতে অনুপস্থিত ২২ আসামির বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। সোমবার এ মামলার যুক্তি-তর্ক শুরু করার দিন ধার্য করা হয়েছে।
সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট গোলাম হাসনায়েন, পিপি অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান মুক্তা, অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট ওবায়দুল হক। আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম গ্যাদাসহ অন্যরা।