যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং তাদের মিত্র দেশগুলোর সম্মতিতে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেম সুইফট থেকে বাদ দেয়া হচ্ছে রাশিয়ার কিছু ব্যাংককে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, সুফট থেকে বাদ দেয়াসহ রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদও জব্দ করা হবে, যার মাধ্যমে রাশিয়ার বিদেশী রিজার্ভ ব্যবহারের ক্ষমতাকে সীমিত করা হবে।
দেশগুলো এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, তাদের লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থা থেকে রাশিয়াকে একঘরে করে দেয়া।
রাশিয়া তাদের প্রধান রপ্তানীকারী দ্রব্য তেল এবং গ্যাসের জন্য সুইফটের উপর নির্ভরশীল। সুইফট থেকে বাদ দেয়ার এই ঘোষণা এখনো অবধি রাশিয়ার উপর দেয়া নিষেধাজ্ঞাগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ প্রভাব বিস্তারকারী একটি বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপ এবং কানাডাসহ তাদের অন্যান্য মিত্র দেশগুলো এই নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তে একমত হয়েছে।
সুইফট বা সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাংক ফিন্যানসিয়াল টেলিকমিউনিকেশন হলো সবচেয়ে নিরাপদ আর্থিক লেনদেনের বার্তা আদান-প্রদানকারী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান যার মাধ্যমে আন্তসীমান্তে নিরাপদ এবং দ্রুত পেমেন্টের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে সহজ করা হয়।
বেলজিয়াম ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠান সারাবিশ্বে ১১ হাজারের বেশি ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লেনদেনের সুবিধা প্রদান করে। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এর ভুমিকা ব্যাপক তবে নিজে থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত দিতে পারে না প্রতিষ্ঠানটি।
তবে রাশিয়ার যেসব ব্যাংককে সুইফট থেকে বাদ দেয়া হচ্ছে তাদের নাম এখনো উল্লেখ করা হয়নি। তবে জার্মান মুখপাত্র বলেন, প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কর্তৃক অনুমোদিত ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকেও অন্তর্ভূক্ত করা হবে।
হোয়াইট হাউজ বলছে, সুইফটের মাধ্যমে রাশিয়া ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক লেনদেন করে থাকে, তাই এই লেনদেন করার সুযোগ বন্ধ হয়ে গেলে তাদের অর্থনীতিতে বিশাল ধাক্কা আসবে এবং তাদেরকে আন্তর্জাতিক লেনদেনের জন্য কেবল টেলিফোন এবং ফ্যাক্স মেশিনের উপর নির্ভর করতে হবে।
এর আগে বিশ্বে সুইফট থেকে বাদ দেয়া হয়েছিলো ইরানকে, যার ফলে তারা ৩০ শতাংশ বৈদেশিক বাণিজ্য হারিয়েছিল।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন বলেন, রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদ জব্দ করার মাধ্যমে ক্রেমলিনকে ‘যুদ্ধে তাদের বুক’ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং তার মিত্র দেশগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লেনদেন স্থগিত করা এবং তাদের সম্পদ তরলীকরণে বিরত রাখার সিদ্ধান্তে একমত পোষণ করেছে। এছাড়া ধনী রাশিয়ানদের গোল্ডেন পাসপোর্টও সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
যুক্তরাজ্যের প্রেসিডেন্ট তার এক টুইট বার্তায় বলে, পুতিনকে এই আগ্রাসনের মূল্য দিতে হবে, আর তা নিশ্চিত করতে আমরা সবাই একসাথে কাজ করে যাব।