চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

সিন্ডিকেট বাড়াচ্ছে পেঁয়াজের দাম

পেঁয়াজের বাজারে নৈরাজ্য চলছেই। কোনো ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না দাম। ভারতের বাজারে দাম বাড়ানোর অজুহাতে আমদানীকারকেরা ইচ্ছামতো বাড়িয়ে দিয়েছেন পেঁয়াজের দাম। ক্রেতাদের অভিযোগ; দাম বাড়ানোর পেছনে কাজ করছে একটি সিন্ডিকেট। মঙ্গলবারও রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ১’শ টাকায়।

এদিন কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজের পাইকারী আড়ৎগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর সেটা খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১’শ টাকা কেজি।

খুচরা ব্যবসায়ীরা জানায়, আজকের দাম গতকালের মতোই রয়েছে। তবে ঈদের আগে এর দাম ১’শ টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা শহিদুল ইসলাম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, প্রতি বছর ঈদের মাস খানেক আগে পেঁয়াজ কিনি। সেই হিসেবে আজ বাজারে আসা। কিন্ত এবারের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে পেঁয়াজ ছাড়াই কোরবানির মাংস খেতে হবে।

ক্রেতাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীদের একটি বিশেষ চক্র সিন্ডিকেট তৈরি করে কৃতিমভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে। কারণ ভারত সরকারের বাড়ানো দাম আজ থেকে কার্যকর হলেও বিক্রি হওয়া এসব পেঁয়াজ আগের আমদানী করা। সেই হিসেবে আগের দামেই তা বিক্রি করা উচিত।

আরেকজন ক্রেতা আবুল হাকিম আক্ষেপের সুরে চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, সরকারের মনিটরিং নেই। পেঁয়াজ সিন্ডিকেটের সাথে তাদেরই অনেকে জড়িত। সবাই ভারতের কথা বলছে। কেনো ভারত ছাড়া অন্য কোনো দেশ নেই? যে দেশে পেঁয়াজের দাম কম; সরকার সেখান থেকে আমদানী করুক।

‘আসলে এটা একটা বাহানা; তারা দাম বাড়াবে কিন্ত দোষ দেবে ভারতের,’ বলেন তিনি।

শ্যামবাজারে রাজধানীর সবচেয়ে বড় পেঁয়াজের আড়ৎ। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। ভারত পেঁয়াজের দাম বাড়লে বাংলাদেশে বাড়বে কেন? সরকার চাইলে দেশের পেঁয়াজের চাহিদা মেটাতে অন্য দেশ থেকে আমদানী করতে পারে। সেক্ষেত্রে তো আর আমদানী শুল্ক বাড়া কমার প্রশ্ন আসে না।

কারওয়ান বাজারে ১৫ বছর ধরে পেঁয়াজের ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আর এসব কথা বলবেন না। ভারত পেঁয়াজের ওপর শুল্ক বাড়িয়েছে তো কী হয়েছে? সরকার ভারত থেকে আমদানী না করে অন্যদেশ দেশ থেকে আমদানী করলেই তো এ ঝামেলা থাকে না।

তিনি আরো বলেন, এ দাম বাড়াতে আমাদের কোনো হাত নেই। আমাদের বেশি দামে যখন কিনতে হয় সেক্ষেত্রে তো আমরা কম দামে বিক্রি করতে পারি না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বা টিসিবি যদি পদক্ষেপ নেয় তবে তো দাম ক্রেতাদের সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা যায়।

জামাল উদ্দিন জানান, পেঁয়াজ রপ্তানীর ক্ষেত্রে আগের প্রতি টন নির্ধারিত দাম ৪৩০ মার্কিন ডলারের সাথে আরো ২৭৫ মার্কিন ডলার যোগ করে ৭০৫ মার্কিন ডলার করেছে। যা বাংলাদেশী টাকায় ৫৪ হাজার ৮শত ৬১ টাকা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ২০ থেকে ২২ লাখ টন। এর মধ্যে দেশে উৎপাদিত হয় প্রায় ১৮ -১৯ লাখ টন। বাকিটা আমদানী করতে হয়। যার সিংহভাগ আসে ভারত থেকে।