মোহামেদ সালাহকে প্রিমিয়ার লিগে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন হোসে মরিনহো। চেলসির কোচ থাকার সময় পর্তুগিজ কোচের হাত ধরেই বিশ্বেরসেরা লিগে পা পড়েছিল মিশরের মেসির। সেই স্মৃতি রোমন্থন করে মরিনহো বলছেন, প্রথম দেখাতেই সালাহর ‘প্রেমে পড়েছিলেন’ তিনি।
যদিও লন্ডনের লোভে পড়ে নিজের প্রতিভা বিকশিত করতে না পারায় আফ্রিকান সেরা ফুটবলারের প্রতি তার প্রেমে রূপ নেয় বিরহে!
২০১৩-১৪ মৌসুমে বাসেল থেকে চেলসিতে খেলতে আসেন সালাহ। কিন্তু ব্লুজদের হয়ে মাত্র ১৯ ম্যাচ খেলতে পেরেছেন। নিজের প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে না পারায় ২০১৪ সালে ১১ মিলিয়ন ইউরোয় ইতালিয়ান ক্লাব ফিওরেন্টিনার কাছে সালাহকে ধারে খেলতে পাঠায় চেলসি।
পরে ২০১৫ সালে রোমার কাছে সালাহকে বিক্রি করে দেয় চেলসি। ইতালিয়ান ক্লাবটির হয়ে এক মৌসুমে ১৯ গোল করার পর লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপের নজর কাড়েন এ ফরোয়ার্ড। ২০১৭ সালে তাকে দলে টানে লিভারপুল। অলরেডদের হয়ে প্রথম মৌসুমেই ৪০ গোল করার পর প্রিমিয়ার লিগের সবচেয়ে বড় তারকার নাম এখন সালাহ। ১৯৯০ সালের পর লিভারপুলের প্রিমিয়ার লিগ জয়ের স্বপ্ন ভারী করে তুলছেন এই ২৬ বছর বয়সী তারকাই।
ক্লপের অধীনে সালাহর বিকাশ ঘটলেও তাকে পরিচয় করে দেয়ার কৃতিত্বটা নিজেই নিতে চান মরিনহো। বেইন স্পোর্টসের অনুষ্ঠানে পর্তুগিজ কোচ জানিয়েছেন সালাহকে অনেক সুযোগই দিয়েছিলেন, ‘আমাকে সালাহকে নিয়ে বলতে দিন। অনেকে তাকে জড়িয়ে আমাকে অনেক কটু কথা বলে, যেগুলো মোটেও সত্য নয়। লোকে বলে আমি সেই কোচ যে সালাহকে বিক্রি করে দিয়েছিল।’
‘আমি সেই কোচ যে সালাহকে কিনে এনেছিলাম। সুতরাং লোকে যা বলে সেগুলো সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। বাসেলের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথম সালাহকে দেখি। তখন কেবল একজন কিশোর। যখন কোনো দলের বিপক্ষে খেলি, সেই দলের খেলোয়াড়দের বিশ্লেষণ করি। আর সালাহকে নিয়ে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তার প্রেমে পড়ে যাই। সেই কিশোরকে কিনে আনি আমি। ক্লাবকে ক্রমাগত চাপ দেই তাকে কিনতে। যদিও আমার দলে তখন হ্যাজার্ড, উইলিয়ানদের মতো বিশ্বমানের খেলোয়াড় ছিল। কিন্তু তারপরও তাকে কিনি।’
এক মৌসুমে মাত্র ১৯ ম্যাচ খেলার পর সালাহর প্রতি সেই মোহ কেটে যায় বলে জানিয়েছেন মরিনহো। তিনি সুযোগ দিতে চাইলেও মিশরীয়ান ফরোয়ার্ড সুযোগটা নেননি বলেই অভিযোগ, ‘সে তখন লন্ডনে পথ হারানো এক কিশোর, নতুন বিশ্বের একজন হারিয়ে যাওয়া শিশু। আমরা তাকে ভালো থেকে ভালো করা জন্য কাজ করে গেছি। কিন্তু সে অনেক বেশি ম্যাচ খেলতে চাইতো, যে কারণে সে অপেক্ষা করতে পারেনি।’
‘তাই আমরা তাকে ইতালিতে চলে যেতে দিলাম। কৌশল ও শারীরিক ফুটবল শেখার জন্য আদর্শ জায়গা। ফিওরেন্টিনার শিরোপা জেতার কোনো চাপ ছিল না। কিন্তু সত্যি বলছি, ওকে বিক্রি করার সিদ্ধান্তটা ক্লাবের ছিল, আমার না।’
‘আমিই ওকে কিনেছি, কিন্তু বিক্রি করিনি। তার সঙ্গে আমার সম্পর্কটা বেশ ভালোই ছিল।’