চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সাফ স্বপ্নের সমাধি ও সোহেলনামা

ক্ষণিকের ভুল। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সেই ভুলে সাফ স্বপ্নের সমাধি হয়ে গেল। যার জন্য দায়ী করা হচ্ছে বাংলাদেশের গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেলকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে তুলনা করা হচ্ছে লোরিস কারিউসের সঙ্গে।

২৭ মে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে রিয়ালের বিপক্ষে অদ্ভুত ভুল করে আলোচনায় আসেন কারিউস। ৫১ এবং ৮৩ মিনিটের সময় তার কারণে দুটি গোল হজম করে লিভারপুল। পরে জানা যায় ওইদিন রামোসের সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর লোরিউসের কিছুটা সমস্যা দেখা দেয়। পরে যেটি মানসিক সমস্যায় রূপ নেয়!

কিন্তু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের ০-২ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচে সোহেল কোথাও আঘাত পাননি। তবু কেন অমন ভুল করলেন?

৩৩ মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে ৩০ গজ দূরে ফ্রি-কিক পায় নেপাল। স্পটকিক থেকে স্বাগতিক বার বরাবর শট নেন বিমল ঘাটরি মাগার। জায়গায় দাঁড়িয়ে নেপালি জার্সি নাম্বার ১০’র নেয়া শট সোহেল তালগোল পাকিয়ে পাঞ্চ কিংবা গ্রিপ করতে ব্যর্থ হন। অথচ শটে বেশি গতি ছিল না। সেটিই কিনা চলে যায় জালে!

সোহেল এমনিতে ম্যাচে কঠিন সব সেভ করতে ওস্তাদ। উচ্চতা দারুণ। সে কারণেই মূলত কোচদের সমর্থন পেয়ে যান। কিন্তু তার যত দোষ ওই ‘ক্ষণিকের ভুল’। সাফ টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও তার ভুলে গোল হজম করে বাংলাদেশ।

সোহেলকে বুঝতে হলে ২০১৫ সালে ফিরে যেতে হবে। ওই বছর বারের নিচে দারুণ সময় কাটান। তকে তুলনা করা হচ্ছিল বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা গোলরক্ষকদের সঙ্গে। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে দারুণ সব সেভ করে বাংলাদেশকে ফাইনালে নিয়ে আসেন। গোটা ম্যাচ ভালো খেলে ক্ষণিকের বিভ্রান্তিতে পড়ে কর্নার থেকে গোল হজম করেন।

ওই ম্যাচে হারার পরদিন ড্রেসিংরুমে থাকা এক খেলোয়াড়ের সঙ্গে কথা হয়েছিল এই প্রতিবেদকের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই খেলোয়াড় সাফের এই দলেও ছিলেন। এদিন বদলি হিসেবে মাঠে নামেন। তিনি সেদিন বলেন, ‘ম্যাচ শেষে অন্য সবার মতো সোহেলও মর্মাহত ছিল। ড্রেসিংরুমে যেয়ে সোহেল বলছিল, ওই কর্নারটি ওভাবে বেঁকে আসবে তা ও ভাবতে পারেনি। কর্নার সাধারণত সরাসরি আসে। কিন্তু ওই শটটি ডি-বক্সের ভেতর একটু ঘুরে আসে। তাই পোস্ট ছেড়ে বেরোতে ওর ২ থেকে ৩ সেকেন্ড দেরি হয়ে যায়!’

সোহেল আজ কী ভেবেছেন তা কে জানে। এদিন তার অমন ভুলের কারণে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ে। পরে শেষদিকে আরেকটি গোল হয়ে যায়।

এই সব ঘটনা একজন গোলরক্ষকের ক্যারিয়ার শেষ করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। কারিউস চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেই ঘটনার পর এখনো মানসিকভাবে শতভাগ সুস্থ হতে পারেননি। সোহেলের ক্ষেত্রে তেমনটি হবে না বলেই আশা রাখতে চাই।