বিপিএলে সাত দলের দুটিতে হেড কোচ হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশের কেউ। একজন ঢাকা ডায়নামাইটসের খালেদ মাহমুদ সুজন, অন্যজন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। তাদের দলই খেলবে শুক্রবারের ফাইনাল।
অথচ বিপিএলে প্রতি আসরেই চড়ামূল্যে নিয়ে আসা হয় বিদেশি কোচ। টম মুডি, ওয়াকার ইউনুস, মাহেলা জয়াবর্ধনে, ল্যান্স ক্লুজনারের মতো খ্যাতিমান কোচ যা পারেননি, সেটাই করে দেখিয়েছেন স্থানীয় দুই কোচ। খালেদ মাহমুদের ঢাকা পরপর তিন আসরে উঠেছে বিপিএলের ফাইনালে। সালাউদ্দিন কুমিল্লাকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন ২০১৫ সালে। এবার তার দল আবারও দেখছে শিরোপার স্বপ্ন।
এমন সাফল্যের পর ভবিষ্যতে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা দেশি কোচদের দিকে তাকাবেন এমনটা আশা করছেন সালাউদ্দিন। ফাইনাল মহারণের আগে বৃহস্পতিবার মিরপুরের একাডেমি মাঠে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিকেএসপির সাবেক এ কোচ বিপিএল ও বিসিবির দলগুলাতে স্থানীয়দের সুযোগ বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
‘দিনকে দিন বিপিএলে দেশি কোচরা হারিয়ে যাচ্ছিল। সহকারী কোচ যারা ছিল, তাদেরও কাজের পরিধি কমে যাচ্ছিল। আমার মনে হয় যেহেতু আমরা দুজন ফাইনালিস্ট, ফ্র্যাঞ্চাইজি হয়ত পরবর্তীতে চিন্তা করবে আমাদের দেশি কোচদের আরেকটু সুযোগ দেয়ার ব্যাপারে।’
‘আমরা ভালো করলে আমাদের দেশি কোচদের অনেক লাভ। আমি সবসময় চাই আমাদের কোচরা যেন ভালো জায়গায় কাজ করে এবং শিখতে পারে। অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজিতে দেশি সহকারী কোচও নেই। যদি দেশি কোচ থাকতো, তাহলে তাদের কাছ থেকে কিছু শিখতে পারত। পরবর্তীতে হয়ত চিন্তা করবে তারা, সুযোগ দিলে দেশি কোচরাও ভালো করতে পারে।’
বিসিবির দলগুলাতেও দেশি কোচদের গুরুত্ব বাড়ানোর কথা বলেছেন সালাউদ্দিন। সুযোগ না পেলে কীভাবে শিখবে সেই প্রশ্নও তার।
‘জাতীয় দলের ব্যাপারটা একটু আলাদা। কারণ এখানে অনেক বেশি চাপ থাকে। তারপরও আস্তে আস্তে হয়ত স্থানীয় কোচরা চাপ নিতে পারবে। আশা করব যে, বয়সভিত্তিক দলে বিশেষ করে অনূর্ধ্ব-১৯, ১৭ বা ‘এ’ টিমে আমাদের স্থানীয় কোচদের সুযোগ দেয়া উচিত। সবসময় শুনে থাকি, আমরা স্থানীয় কোচরা হয়ত পারব না, এটা আসলে ভুল ধারণা। আপনি যখন সুযোগ দেবেন তখন হয়ত তারা ভালকিছু করে দেখাতে পারবে।’
‘কোচরা শিখেই আসবে তা না, আমাদের সুযোগ দিতে হবে। সুযোগ না দিলে দেখাব কী করে! হয়ত প্রথমবার কেউ ব্যর্থ হতে পারে। আমাদের কোনো গলদ থাকলে সেটা বোর্ডের দায়িত্ব তাদেরকে কীভাবে চালিত করবে। একটা খেলোয়াড়কে যেভাবে চেষ্টা করে তার পারফরম্যান্স উন্নতি করার, সেভাবে স্থানীয় কোচদের কীভাবে উপরে নেয়া যায় সেদিকে বোর্ডের নজর রাখা উচিত।’
চন্ডিকা হাথুরুসিংহের পদত্যাগের পর ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজে কোচ কাম টেকনিক্যাল ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করেছিলেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন। তার প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে ভালো না হওয়ায় নিধাস ট্রফিতে ভারপ্রাপ্ত হেড কোচের দায়িত্বে দেখা যায় ক্যারিবীয় কিংবদন্তি পেসার কোর্টনি ওয়ালশকে। নিজের দক্ষতা মেলে ধরার সুযোগ সেভাবে পাননি খালেদ মাহমুদ।
বিপিএল ফাইনালে দুই দেশি কোচের লড়াইয়ে অবশ্য খালেদ মাহমুদকে এগিয়ে রাখলেন সালাউদ্দিন, ‘এভাবে (তুলনায়) দেখার কোনো সুযোগ নেই। কারণ সুজন ভাই অনেক বড় মাপের কোচ। তার অনেক কোয়ালিটি আছে। সে অনেককিছু দেখতে পারে। আমি হয়ত সে তুলনায় নই। নিজেকে কখনো তুলনা করি না এই জায়গাটায়। আমার মনে হয় এই জিনিসটা না বললেই আমার জন্য ভালো।’