সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ৫ উইকেটে হারিয়ে আইপিএলের ১১তম আসরে প্লেঅফে উঠে গেছে কলকাতা নাইটরাইডার্স। অন্যদিকে ম্যাচ হারলেও আগেই প্লেঅফ নিশ্চিত করা হায়দরাবাদ এই ম্যাচের পর সেরা দুইয়ের কোয়ালিফায়ারেও উঠে গেছে।
এদিন ব্যাট হাতে ৭ বলে ১০ রান করা সাকিব বল হাতে ৩ ওভারে ৩০ রান দিয়ে নিয়েছেন এক উইকেট।
১৪ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে সবার আগে কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করল সাকিব আল হাসানের দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। শনিবার কলকাতার মাঠে হায়দরাবাদের হারে প্লে-অফের আশা টিকে আছে মোস্তাফিজুর রহমানের দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের।
মঙ্গলবার প্রথম কোয়ালিফায়ারে হায়দরাবাদের প্রতিপক্ষ কারা হবেন সেটি জানতে অপেক্ষা করতে হবে রোববার রাত পর্যন্ত। চেন্নাই সুপার কিংস ও কলকাতার পয়েন্ট সমান ১৬। এক ম্যাচ কম খেলা চেন্নাইয়ের শেষ ম্যাচ রোববার রাতে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে। চেন্নাই জিতলে তারাই হবে সাকিবদের প্রতিপক্ষ। হেরে গেলে রান রেটে এগিয়ে থাকা দল হবে সাকিবদের প্রতিপক্ষ।
বুধবার এলিমিনেটর ম্যাচে খেলবে তৃতীয় ও চতুর্থ নম্বর দল। তিন দলের প্লে-অফ নিশ্চিত হয়ে থাকলেও চতুর্থ দল হিসেবে প্লে-অফে জায়গা করে নেয়ার সুযোগ আছে রাজস্থান রয়্যালস ও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের। রাজস্থানের ১৪ পয়েন্ট। এক ম্যাচ কম খেলা মুম্বাইয়ের ১২। রোববার বিকেলে নিজেদের শেষ ম্যাচে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসকে হারাতে পারলে প্লে-অফ নিশ্চিত করে মুম্বাই খেলবে এলিমিনেটর ম্যাচ। কেননা রানরেটে দিল্লির চেয়ে এগিয়ে মোস্তাফিজের দল।
শনিবার রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে হায়দরাবাদের দেয়া ১৭৩ রানের লক্ষ্য ১৯.৪ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে টপকে যায় কলকাতা। ক্রিস লিন ৫৫ ও রবিন উত্থাপা খেলেন ৪৫ রানের ইনিংস।
নিজেদের মাঠে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরুর পর শেষের ব্যর্থতায় ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭২ রানের বেশি করতে পারেনি হায়দরাবাদ। টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের দারুণ ব্যাটিংয়ের দিনে লোয়ার মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে একমাত্র সাকিবই পেয়েছেন দুই অঙ্কের দেখা। এ বাঁহাতি দুটি বাউন্ডারির সাহায্যে ৭ বলে করেছেন ১০ রান।
শিখর ধাওয়ান ও শ্রীভাত গোস্বামী মিলে ওপেনিং জুটিতে যোগ করেন ৭৯ রান। পাওয়ার-প্লে’র ৬ ওভারে তোলেন ৬০ রান। ২৬ বলে ৩৫ রান করে গোস্বামী সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ওপেনিং জুটি। ১৭ বলে ৩৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে রানের চাকা সচল রাখেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।
তিন নম্বরে নামা এ কিউই ব্যাটসম্যানের ইনিংসে ছিল তিনটি ছক্কা ও একটি চারের মার। ৩৯ বলে ফিফটি করে ধাওয়ান যখন সাজঘরে ফেরেন, দলের রান তখন ১৪১, বল বাকি ২৯টি। শেষ ২৯ বল থেকে মাত্র ৩১ রান আসে। হারাতে হয় ৬টি উইকেট। যার মধ্যে মনিষ পান্ডের ব্যাটে ২২ বলে ২৫ রান।
শেষের দিকে রান তুলতে পারেনি নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয়। শেষ তিন বলে তিন উইকেট হারায় তারা। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন কলকাতার পেসার প্রাসিধ কৃঞ্চা। শেষ ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে উইকেট পেলেও শেষের ব্যাটসম্যান হন রানআউট। ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়ে চার উইকেট শিকার করে সেরা বোলার ২২ বছরের এই তরুণ।
জবাব দিতে নেমে ঝড়ো শুরু করেন সুনিল নারিন ও ক্রিস লিন। ৩ ওভারে দুই ব্যাটসম্যান মিলে তোলেন ৪০ রান। চতুর্থ ওভারে সাকিব বোলিংয়ে এসে আনেন ব্রেক থ্রু। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা নারিনকে সাজঘরে পাঠান চার ও ছক্কা হজম করে। পরের বলটিও বাউন্ডারি হাঁকাতে গেলে লংঅনে মনিষ পান্ডের হাতে ধরা পরেন নারিন। আউট হওয়ার আগে করেন ১০ বলে ২৯ রান। আরেক ওপেনার ক্রিস লিন ৫৫ রান করে যখন ফেরেন, ততক্ষণে ১০০ পেরিয়ে জয় দেখতে থাকে কলকাতা। অধিনায়ক দিনেশ কার্তিক ২২ বলে ২৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ম্যাচ শেষ করেন।
দুদলের প্রথম দেখায় সাকিবের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে নিজেদের মাঠে হেরেছিল কলকাতা। প্রতিপক্ষের মাঠে ফিরে সে প্রতিশোধ নিল তারা।