সাউথ আফ্রিকার মাটিতে তিন সংস্করণে ১৯ ম্যাচে কোনো জয় ছিল না বাংলাদেশের। ২০ বছরের অপেক্ষা ফুরালো ২০তম ম্যাচেই। সেঞ্চুরিয়নে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিকদের ৩৮ রানে হারিয়ে তামিম ইকবালের দল লিখেছে নতুন ইতিহাস।
বাংলাদেশ দেশটিতে প্রথম সফর করে ২০০২ সালে। ২০২২-এ টাইগাররা পেল প্রথম জয়ের স্বাদ। ৩১৫ রানের বড় লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে পঞ্চাশের আগেই তিন উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকে পড়া ম্যাচ জমিয়ে তোলেন ফন ডার ডুসেন। সেঞ্চুরির দিকে ছুটতে থাকেন ডেভিড মিলারের সঙ্গে জুটি গড়ে। ব্যক্তিগত ৮৬ রানে তাসকিন আহমেদের বলে মিড উইকেটে ইয়াসির আলীর দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হলে স্বস্তি মেলে সফরকারী দলে।
অন্যপ্রান্তে মিলার অবশ্য রানের চাকা গতিশীল রাখেন। মেহেদী হাসান মিরাজ টপাটপ উইকেট তুলে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণেই রাখেন ম্যাচ। জোড়া উইকেট শিকারের পর তুলে নেন মিলারের উইকেটও। বাঁহাতি প্রোটিয়া ৫৭ বলে ৭৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন।
১ উইকেট হাতে থাকলেও একরকম জয় নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের। কেশভ মহারাজ ১৬ বলে ২৩ রানে করে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বলে এলবিডব্লিউ হন। প্রোটিয়াদের মাটিতে প্রথম জয়ের আনন্দে মাতে টিম টাইগার্স। ৭ বল আগে ২৮৬ রানে থামে স্বাগতিকদের ইনিংস।
মেহেদী হাসান মিরাজ চারটি, তাসকিন আহমেদ তিনটি, শরিফুল ইসলাম নেন দুটি উইকেট। দারুণ জয়ে আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ সুপার লিগে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান আরও সুসংহত করলেন তামিম-সাকিবরা।
সাউথ আফ্রিকা সফরে দিবা-রাত্রির ম্যাচে বাংলাদেশের শুরুটা হয় দারুণ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে তামিমের দল তোলে ৭ উইকেটে ৩১৪ রান।
সেঞ্চুরিয়নে শুরুর ব্যাটিং দেখে মনেই হয়নি এত বড় সংগ্রহ পাবে বাংলাদেশ! লিটন দাস ও তামিম শুরুতে সাবধানে ব্যাটিং চালিয়ে জুটি বড় করেন। দলীয় ৫০ রান আসতে চলে যায় ১৬ ওভার। পরে অবশ্য পুষিয়ে দেন তারা। ২১.৫ ওভারে আসে ১০০ রান।
৬৭ বলে ৪১ রান করে তামিম আউট হন। ভাঙে ৯৫ রানের ওপেনিং জুটি। ফিফটি ছুঁয়ে দলীয় শতক পূর্ণ করে সাজঘরে ফেরেন লিটন। খেলেন ৬৭ বল।
মুশফিকুর রহিম বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি। ১২ বলে ৯ রান করে ফেরেন। ৭ ওভারের মধ্যে ৩ উইকেট হারালেও সাকিব আল হাসান ও ইয়াসির আলী দারুণ এক জুটি গড়ে বড় সংগ্রহের ভিত এনে দেন। ৮১ বলে তাদের ১১৫ রানের জুটি বদলে দেয় বাংলাদেশ ইনিংসের চেহারা।
৬৪ বলে সাত চার ও তিন ছয়ে ৭৭ রান করে আউট হন সাকিব। দুই বল পর ফিরে যান ইয়াসিরও। তরুণ ৪৪ বলে করে যান ৫০ রান।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৭ বলে ২৫ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব ১৩ বলে ২৭ রান করেন। মেহেদী হাসান মিরাজ ১৩ বলে ১৯ ও তাসকিন আহমেদ ৫ বলে ৭ রানে অপরাজিত থাকেন।
সাউথ আফ্রিকার মাটিতে টাইগারদের এটিই সবচেয়ে বড় সংগ্রহ। আগের সর্বোচ্চ ছিল ২৭২।
কেশভ মহারাজ ও মার্কো জানসেন দুটি করে উইকেট নেন। আন্দিলে ফেলুকোয়ও, লুনগি এনগিডি ও কাগিসো রাবাদা নেন একটি করে উইকেট।