সাংবাদিক গৌতম দাস হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী ৩০ জানুয়ারি রায় ঘোষণা করবে হাইকোর্ট।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষ হলে বুধবার বিচারপতি এ কে এম আবদুল হাকিম ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের হাই কোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণার এ তারিখ ধার্য করেন।
এ হত্যা মামলার দশ আসামির মধ্যে অভিযোগপত্রভূক্ত আসামি জাহিদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০০৬ সালে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। পরে মামলা থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়।
এরপর ২০১৩ সালের ২৭ জুন ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নুর উদ্দিন এ মামলার ৯ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। সেই সাথে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামি হলেন- আসিফ ইমরান, আসিফ ইমতিয়াজ বুলু, কাজী মুরাদ, কামরুল ইসলাম আপন, আসাদ বিন কাদির, সিদ্দিকুর রহমান মিয়া, তামজিদ হোসেন বাবু, রাজিব হাসান মিয়া এবং আবু তাহের মতুর্জা ওরফে অ্যাপোলো।
বিচারিক আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে দণ্ডিত আসামিরা হাইকোর্টে পাঁচটি ফৌজদারি আপিল করেন। সেসব আপিলের উপর উভয়পক্ষের দীর্ঘ শুনানি বুধবার শেষ হয়।আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুন-অর রশীদ। দুই আসামি সিদ্দিকুর রহমান মিয়া ও আবু তাহের মো. মোস্তফা ওরফে অ্যাপোলো বিশ্বাসের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হেলালউদ্দিন মোল্লা। আসামি আসিফ ইমরান, আসিফ ইমতিয়াজ বুলু, কামরুল ইসলাম আপন ও রাজীব হাসান মনার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ আলী মোকাররম।
আসামি তানজীর হোসেন বাবুর পক্ষে আইনজীবী আওলাদ হোসেন, আসামি আসাদ বিন কাদিরের পক্ষে আইনজীবী মো. আব্দুর রশীদ ও ওমর ফারুক এবং আসামি কাজী মুরাদের পক্ষে আইনজীবী শেখ বাহারুল ইসলাম শুনানি করেন।
এই মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ফরিদপুর শহরের মুজিব সড়কের সংস্কারে অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর প্রকাশ করার জেরে দৈনিক সমকালের ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান গৌতমকে ২০০৫ সালের ১৭ নভেম্বর তার কার্যালয়ে ঢুকে নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
এরপর সমকালের পক্ষে বাদি হয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন সমকালের স্থানীয় প্রতিনিধি হাসানউজ্জামান। এরপর ২০০৫ সালের ১৯ জানুয়ারি ফরিদপুরের আদালতে ১০ জনকে আসামী করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোলাম নবী।
অভিযোগপত্র দাখিলের পর ‘স্পর্শকাতর’ বিবেচনায় সরকার ওই বছর এপ্রিলে মামলাটি ফরিদপুর থেকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠায়। মোট চারজন বিচারকের হাত ঘুরে মামলাটি পরে রায়ের পর্যায়ে আসে। পরবর্তীতে ২০০৭ সালের ১৩ নভেম্বর আসামি পক্ষ এ মামলার বিচারের ওপর হাইকোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ পেলেও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়।
এরপর ২০১৩ সালের ২৭ জুন ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নুর উদ্দিন এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।