চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সরকারি চাকরি আইন সংবিধান পরিপন্থী ও বৈষম্যমূলক: টিআইবি

ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের আগে সরকারের কাছ থেকে অনুমতি গ্রহণের বিধান রেখে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত খসড়া ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

দক্ষ, জনবান্ধব, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক জনপ্রশাসন নিশ্চিত করতে খসড়া আইনটির এই বৈষম্যমূলক বিধান সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ায় আইনটি পাশ না করার জন্য জাতীয় সংসদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।

সোমবার এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রস্তাবিত ধারাটি বৈষম্যমূলক ও সংবিধান পরিপন্থী, কারণ একই অপরাধে জড়িত হলে সাধারণ নাগরিক ও জনপ্রতিনিধিদের জন্য যেখানে পূর্বানুমতির প্রয়োজন নেই সেখানে কোন বিশেষ মহলের জন্য পূর্বানুমতির বিধান সংযুক্ত করা আইনের চোখে সব নাগরিকের সমান অধিকারের যে সাংবিধানিক বিধান তার সাথে সাংঘর্ষিক।

তিনি আরো বলেন, ২১ অক্টোবর উত্থাপিত এই আইনটি এভাবে পাশ হলে বর্তমান সরকারেরই আমলে প্রণীত ও বাস্তবায়নরত জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের সাথেও এটি সম্পূর্ণ বিপরীতমূখী হবে। তাছাড়া, উল্লিখিত ধারাটি ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৫৪ ধারার সঙ্গেও সরাসরি সাংঘর্ষিক, যেখানে আমলযোগ্য অপরাধে জড়িত থাকলে, বা জড়িত থাকার ব্যাপারে মামলা হলে বা বিশ্বাসযোগ্য তথ্য বা সন্দেহ থাকলেও বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও জাতীয় সংসদে উত্থাপিত খসড়া ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ অনুযায়ী ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তাতারে পূর্বানুমতি গ্রহণের যে বিধান সন্নিবেশিত হয়েছে, তা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের সততা, স্বচ্ছতা, উন্নততর পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন নিশ্চিতের পরিপন্থী ও উদ্বেগজনক হবে বলে মনে করে টিআইবি।

“উল্লিখিত বিধান রেখে আইনটি পাশ হলে বাস্তবে সরকারি খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিরোধ দূরে থাকুক, আইনের ছত্রছায়ায় এ ধরনের অপরাধ সুরক্ষা পাবে ও এর ব্যাপকতা বাড়ার ঝুঁকি আরো বৃদ্ধি পাবে” উল্লেখ করে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক বিধানটির পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি ও বিশেষ করে সংসদীয় কমিটির প্রতি আহ্বান জানান।

ড. ইফতেখারুজ্জামান আরো বলেন, এমন বাস্তবতায় এরকম গুরুত্বপূর্ণ একটি আইন যা এতো দীর্ঘকাল আলোর মুখ দেখেনি, অতি স্বল্পমেয়াদি বর্তমান অধিবেশনে তড়িঘড়ি করে এটি অনুমোদিত হলে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা সাময়িক সুবিধার জন্য কিনা এরূপ প্রশ্ন উত্থাপিত হওয়া স্বাভাবিক মনে করছে টিআইবি।

এছাড়া দেশের বৃহত্তর স্বার্থে পরিপূর্ণ খসড়া আইনটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে সবার জন্য উন্মুক্ত করে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞসহ সব অংশীজনের মতামত গ্রহণের দাবি জানান তিনি।