বাংলাদেশের আগামী এক বছরের মোট খরচ ধরা হয়েছে দু’ লাখ ৯৯ হাজার ৯৬ কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত জাতীয় সংসদে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করছেন। একই সঙ্গে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট উপস্থাপন করেন।
‘সমৃদ্ধির সোপানে বাংলোদেশ: উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথরচনা’-কে মূল দর্শন করে প্রস্তাবিত বাজেট গত অর্থবছরের চেয়ে ৫০ হাজার কোটি টাকা বেশি।
৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে মিল রেখে এবারের বাজেটে মোট ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ২ লাখ ৯৫ হাজার একশ’ কোটি টাকা। তবে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ৩ হাজার ৯’শ ৯৬ কোটি টাকা যোগ করলে বাজেটের আকার দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ৯৯ হাজার ৯৬ কোটি টাকা। এই বিশাল ব্যয় পরিকল্পনায় আয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ২’শ ৪৩ কোটি টাকা। এই হিসেবে বাজেট ঘাটতি ৮৬ হাজার ৬’শ ৫৭ কোটি টাকা।
স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দ বাদে মোট ব্যয় ২ লাখ ৯৫ হাজার ১’শ কোটি টাকার ব্যয়ে অনুন্নয়ন ব্যয় ১ লাখ ৮৪ হাজার ৫’শ ৫৯ কোটি টাকা। আর উন্নয়ন ব্যয় ১ লাখ ২ হাজার কোটি ৫’শ ৫৯ কোটি।অনুন্নয়ন ব্যয়ের মধ্যে অনুন্নয়ন রাজস্ব ব্যয় ১ লাখ ৬৪ হাজার ৫’শ ৭১ কোটি টাকা। এতে অভ্যন্তরীন ঋণের সুদ মেটাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার ৩’শ ৯৬ কোটি, বিদেশী ঋণের সুদ মেটাতে ১ হাজার ৭’শ ১৩ কোটি টাকা। আর অনুন্নয়ন মূলধনী ব্যয় ১৯ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা।
১ লাখ ২ হাজার ৫’শ ৫৯ কোটি টাকার উন্নয়ন ব্যয়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী এডিপির আকার ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এডিপি বহির্ভূত প্রকল্পে আছে ৩ হাজার ৩’শ ৩৯ কোটি, কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচীতে ১ হাজার ৫’শ ৮৭ কোটি এবং রাজস্ব বাজেট হতে উন্নয়ন কাজে দেয়া হয়েছে ৬’শ ৩৩ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের আয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ২’শ ৪৩ কোটি টাকা। এতে রাজস্ব আয় ২ লাখ ৮ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা, বিদেশী অনুদান ৫ হাজার ৮’শ কোটি টাকা। ১ লাখ ৮২ হাজার ২’শ ৪৪ কোটি টাকা আসবে কর থেকে। করের বাইরে আয় ২৬ হাজার ১’শ ৯৯ কোটি।
রাজস্ব আয়ের বড় অংশের যোগান আসবে আয়কর, শুল্ক ও মূসক থেকে। এনবিার আয় করবে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩’শ ৭০ কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আসবে ৫ হাজার ৮’শ ৭৪ কোটি, করের বাইরে আয় ২৬ হাজার ১’শ ৯৯ কোটি টাকা। রাজস্ব ও অনুদান মিলে সরকার ২ লাখ ১৪ হাজার ২’শ ৪৩ কোটি আয়ের আশা করছে।
৮৬ হাজার ৬’শ ৫৭ কোটি টাকার ঘাটতি মেটাতে বরাবরের মতো এবারো অভ্যন্তরীন এবং বিদেশী ঋণের ওপর নির্ভর করা হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের আশা, অভ্যন্তরীন ঋণ থেকে পাওয়া যাবে ৫৬ হাজার ৫’শ ২৩ কোটি টাকা। আর বিদেশী ঋণ থেকে ২৪ হাজার ৩’শ ৩৪ কোইট টাকা। যদি দরকার হয় তাহলে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া হবে ৩৮ হাজার ৫’শ ২৩ কোটি টাকা। আর ব্যাংক বহির্ভূত ঋণ ১৮ হাজার কোটি কোটি। কেবল সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকেই আয়ের আশা ১৫ হাজার কোটি টাকা। এসব থেকে পাওয়া যাবে ৮০ হাজার ৮’শ ৫৭ কোটি টাকা। বাকি ৫ হাজার ৮’শ কোটি আসবে বিদেশী অনুদান থেকে। সব মিলে ঘাটতি অর্থায়ন পরিকল্পনা ৮৬ হাজার ৬’শ ৫৭ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতার আগে জাতীয় সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভা কক্ষে মন্ত্রিসভার বিশেষ সভায় প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন করা হয়। সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।