সমুদ্র বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের জন্য বিসিএস পদ সৃষ্টি, সমুদ্র অর্থনীতি এবং উপকূলীয় পরিবেশ নিয়ে যথাযথ গবেষণা ও স্বীকৃতি সময়ের দাবি হিসেবে অভিহিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্স এন্ড ফিশারীজের সাবেক শিক্ষার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে চট্টগ্রামের নৌ জেটিতে বানৌজা সংগ্রামের কমিশনিং অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন: সমুদ্রসীমায় আমাদের যে অধিকার, সেই অধিকার আমরা পেয়েছি। মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে আমাদের সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি। এই সমুদ্রসীমা রক্ষা, সমুদ্র সম্পদ কাজে লাগানো, অর্থনীতিতে সমুদ্র সম্পদ কীভাবে ব্যবহার করব- সেগুলো আমাদের জানতে হবে।
সমুদ্র বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের জন্য বিসিএস পদ সৃষ্টি, সমুদ্র অর্থনীতি এবং উপকূলীয় পরিবেশ নিয়ে যথাযথ গবেষণা ও স্বীকৃতি সময়ের দাবি উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন মো. জাহাঙ্গীর আলম।
ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন: ‘দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে করোনা মহামারী মোকাবেলায় রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে। দেশের এই প্রেক্ষাপটে সমুদ্র বিজ্ঞানের একজন সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে আমার বারবার কেন জানি মনে হচ্ছে, বাংলাদেশে সেই ১৯৭১ সাল থেকে সমুদ্র নিয়ে অত্যন্ত সফলতার সহিত গবেষণা করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর মেরিন বায়োলজি/ মেরিন সায়েন্স / ওশেনোগ্রাফি/ মেরিন ফিশারীজ এর সমুদ্র বিজ্ঞানী, শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা সেই বিজ্ঞানী ও শিক্ষার্থীদের পাশ কাটিয়ে সমুদ্র জয় ও সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে কোন একটি মহল নিজেদের জাহির করতে চাচ্ছেন।
বাংলাদেশে সমুদ্র নিয়ে গবেষণার পথিকৃৎ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন বায়োলজি /ইন্সটিটিউট অব মেরিন সায়েন্স এন্ড ফিশারীজ। এত গবেষণা ও সমুদ্র নিয়ে যারা পড়াশোনা করছেন তাদের বিসিএস এর মাধ্যমে স্বীকৃতি ও বাংলাদেশের ১৮ টি উপকূলীয় জেলায় কাজ করবার উৎসাহ যোগাতে কি আমাদের এখনো সময় হয়নি? হাজার হাজার সমুদ্র বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা এবং সমুদ্র বিজ্ঞানীগণ কি যথাযথ স্বীকৃতি ও কাজের সুযোগ পেয়েছেন জাতীয় অর্থনীতিতে কাজ করবার? দেশে এখন অনুজীব বিজ্ঞানী ও শিক্ষার্থীদের দেখা যাচ্ছে তাদের যথাযথ স্বীকৃতি ও সম্মানের ব্যাপারে তারা সোচ্চার হচ্ছেন।
আমি যতটুকু জানি, বাংলাদেশের প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে পাঠদান করানো হয় কিন্তু তাদেরও বিসিএস (লোক প্রশাসন) স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি এখনো। এরকম অনেক বিষয় রয়েছে যারা দেশের জন্য প্রতিনিয়ত অবদান রাখছেন কিন্তু যথাযথ স্বীকৃতি কি পাচ্ছেন?
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হিসেবে মেরিন ফিশারীজ, ওশেনোগ্রাফি, পরিবেশ বিজ্ঞান, মেরিন মাইক্রোবায়োলজি মেরিন ইকোসিস্টেম, লাইভহুডসহ সমুদ্র বিজ্ঞানের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় ৪০টি বিষয়সহ বিভিন্ন গবেষণা ও বাস্তব জ্ঞানের মাধ্যমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়ে বিসিএস (মেরিন সায়েন্স / সমুদ্র বিজ্ঞান) স্বীকৃতি পাওয়া কি সময়ে দাবি হতে পারে না?
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞানের শিক্ষকবৃন্দ ও সমুদ্র বিজ্ঞানীগণ, শিক্ষার্থীদের যে জ্ঞান দান করেছেন ও গবেষণার মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতি যে অবদান রাখছেন তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
এখনই উচিত সামষ্টিকভাবে এইসব সমুদ্র বিজ্ঞানী ও বর্তমানে এই বিষয়ের সাথে যেসব বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করছেন তাদের মাধ্যমে জাতীয় সমুদ্রনীতি তৈরি ও যথাযথ স্বীকৃতি দেওয়া।
বাংলাদেশে সমুদ্র বিজ্ঞানে গবেষণার পথিকৃৎ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞানের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এখনই সময় বৈশ্বিক করোনা মহামারী মোকাবেলাসহ টেকসই বিশুদ্ধ বৈশ্বিক পরিবেশ নিয়ে যথাযথ গবেষণা ও স্বীকৃতি তথা টেকসই সমুদ্র ও পরিবেশ নিশ্চিত করতে মেরিন সায়েন্স / ওশেনোগ্রাফি/ সমুদ্র বিজ্ঞান / মেরিন ফিশারীজ সহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যারা শিক্ষার্থী আছেন তাদেরকে বিসিএস (সমুদ্র বিজ্ঞান) সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সেক্টরে যথাযথ স্বীকৃতি ও সম্মানের মাধ্যমে সমুদ্র জয়ের সেই সঠিক পরিতৃপ্তি ও আত্মতৃপ্তি যেন সমুদ্র বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা পেতে পারে- এ লক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া ও বাস্তবায়ন করা।’