বঙ্গবন্ধু বিপিএলে ঝুলি ভর্তি রান তুলেও স্ট্রাইকরেট স্বল্পতায় সমালোচনায় পুড়েছেন দুজনে। জাতীয় দলের জার্সিতেও চিত্রটা বদলাল না। মন্থর ব্যাটিংয়ের এক টি-টুয়েন্টি বিরুদ্ধ ব্যাটিং করে সমালোচকদের কাজ বাড়িয়ে দিলেন তামিম-নাঈম! ওপেনিং জুটিতে শুক্রবার লাহোরে এমন সময় নিলেন দুজনে, ৫ উইকেট হাতে রেখেও পাকিস্তানকে ১৪২-এর বেশি লক্ষ্য দিতে পারল না বাংলাদেশ।
গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে এসে নির্ধারিত ওভারে ৫ উইকেটে ১৪১ রান তুলেছে বাংলাদেশ। তিন টি-টুয়েন্টির সিরিজের প্রথমটিতে জয়ে শুরুর জন্য বোলারদের জন্য পুঁজিটা ঝুঁকিরই।
ইনিংসের প্রথম ওভার। বাঁহাতি স্পিনার ইমাদ ছোট ছোট কদমে এসে বল ছুঁড়ছিলেন। তামিম তারচেয়েও ছোট ছোট কদমে ব্যাট নড়িয়ে গেলেন! প্রথম ওভারে টানা চার ডটের পর নিতে পারলেন কেবল ২ রান।
খানিক পরে হাসনাইনের এক ওভারে একটি করে ছয়-চারে ১০ নিয়ে আশা জাগিয়েছিলেন নাঈম। শেষপর্যন্ত খোলস ছাড়া হয়ে ওঠেনি তারও।
পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৩৫ নিতে পেরেছেন দুজনে। যেখানে তামিমের ১৯ বলে ১৫, নাঈমের ১৭ বলে ২০।
দলীয় ৫০ আসে ৪৬ বলে। মন্থর ব্যাটিংয়ে দুশ্চিন্তার বোঝা ভারি হচ্ছিল। উইকেটে আহামরি কিছু ছিল না। পেসাররা না গতিতে, স্পিনাররা না টার্নে কাবু করতে পারছিলেন। কিন্তু তামিম-নাঈম যেন কাবু হবেন পণ করেই নেমেছিলেন!
ফল, শুরুর জুটিতে পঞ্চাশ যে ধীরলয়ে, ইনিংসের অর্ধেক ছোঁয়ার সময় ১০ ওভারে স্কোরবোর্ডে ধীরলয়েই জমা সবে ৬১। যাতে তামিমের ৩১ বলে ৩১, নাঈমের ২৯ বলে ২৯।
বল সহজেই ব্যাটে আসছিল। প্রতিপক্ষকে প্রচুর ডট দিয়ে আসলে নিজেরাই চাপ চড়িয়ে নিয়েছেন তামিম ইকবাল ও নাঈম শেখ। জুটির রান তোলার মতো দুজনে আউটও হয়েছেন গা ঝাড়া দিয়ে ওঠার আগেই।
শাদাবের যে ওভারে একটা ছক্কা হাঁকালেন তামিম, নড়েচড়ে বসার আগেই সেই ওভারে ভাঙে ১১ ওভারে মাত্র ৭১ তোলা উদ্বোধনী জুটি।
ডিপ মিডউইকেটে বল ঠেলে দুই রান তুলতে যেয়ে রানআউটে ফিরেছেন বাঁহাতি তামিম। ৩৪ বলে এক ছয় আর ৪ চারে ৩৯ রানের ইনিংস তার। স্ট্রাইকরেট ১১৪.৭০।
নাঈম আরেকটু বেশি, ৪৩ রান করেছেন ঠিকই, সেজন্য বল খেলেছেন ৪১টি। ৩ চারে সঙ্গে ২ ছক্কা আছে তার নামের পাশে, স্ট্রাইকরেটটা তামিমের চেয়েও খারাপ, ১০৪.৮৭। শাদাবকে বাতাসে ভাসিয়ে লংঅনে ইফতেখারের তালুতে জমা হয়েছেন তিনি।
সদ্যগত বিপিএলে ঢাকা প্লাটুনের হয়ে ১০৯.৩৯ স্ট্রাইকরেটে তামিম ৩৯৬ রান, আর রংপুর রেঞ্জার্সের হয়ে নাঈম ৩৫৯ রান ১২৩.৭৫ স্ট্রাইকরেটে তুলেছিলেন। নামের পাশে পর্যাপ্ত রান জমিয়েও স্ট্রাইকরেটের কারণে সমালোচনা শুনতে হয়েছে তাদের। একই কারণে এবার ভুগল জাতীয় দল!
তামিম-নাঈম সেই যে তালা দিয়ে গেলেন রান-চাকায়, পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা আর সেটার চাবি খুঁজে পাননি। প্রয়োজনের সময় হাত খুলতে যেয়ে লিটন ১৩ বলে ১২, আফিফ ১০ বলে ৯, সৌম্য ৫ বলে ৭ করে বুঝিয়ে যান মন্থর গতির ক্ষতিটা আজ অন্তত পুষিয়ে দিতে পারছেন না।
শাদাবের গুগলি লংঅনে ভাসিয়ে দৌড় শুরু করে রান পূর্ণ করতে না পেরে রানআউট হন লিটন। অভিষিক্ত পেসার হারিস রউফের বলে বোল্ড আফিফ। বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ইনিংস শুরু করা সৌম্য শাহিন আফ্রিদির স্লোয়ারে হতে দিয়েছেন স্টাম্প এলোমেলো।
এরপরও টাইগারদের সংগ্রহ ১৪১ পর্যন্ত গেল। ২ চারে ১৪ বলে অপরাজিত ১৯ করে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ, আর ৩ বলে অপরাজিত ৫ করে মিঠুন ইনিংসের শেষটা টানায়।