একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া খবর বা গুজব বড় ধরনের হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে এ ধরনের ভুয়া খবরের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের নির্বাচনের সময় ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়া ভুয়া খবর আমাদের শঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। তবে এক্ষেত্রে অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আশার আলো নিয়ে হাজির হয়েছে ফেসবুক এবং টুইটার।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ভুয়া পোস্ট ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে বাংলাদেশ থেকে খোলা ও পরিচালিত ৯টি পেজ এবং ৬টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। এরপর টুইটারের পক্ষ থেকেও আসে এ ধরনের ঘোষণা। একই অভিযোগে টুইটার কর্তৃপক্ষ বন্ধ করেছে ১৫টি অ্যাকাউন্ট।
ফেইক নিউজ যখন বিশ্বব্যাপী হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন ফেসবুক এবং টুইটারের এমন পদক্ষেপ প্রশংসার দাবিদার। আমরা তাদের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। এর পাশাপাশি আশা করি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই জনপ্রিয় দুই সাইট তাদের এই পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে।
তবে ফেসবুক-টুইটারের এই সিদ্ধান্ত প্রশংসনীয় হলেও এটা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের জন্য নেতিবাচক হিসেবেই উদাহরণ হয়ে থাকবে। আমরা বরাবরের মতো আবারও বলতে চাই, রাজনীতিকে রাজনীতির মাধ্যমেই মোকাবেলা করতে হবে, ভুয়া খবর বা গুজবের মাধ্যমে নয়। সংশ্লিষ্টদের এই বোধোদয় না হলে ভবিষ্যতেও বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এমন নেতিবাচক খবরের শিরোনাম হতে হবে।
তবে একথা মনে রাখা উচিত যে ফেসবুককে ব্যবহার করে বাংলাদেশে গুজব ছড়ানোর শুরু ‘বাঁশের কেল্লা’র মতো সাম্প্রদায়িক শক্তির পেজ দিয়ে। তার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর প্রবণতা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। সেই পথেই নির্বাচনকে সামনে রেখে গুজবের আজকের অবস্থা।
এসব খবর প্রকাশ ও প্রচারের কৌশল যারাই করে থাকেন না কেন, তাদেরকে নতুন করে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। কারণ, বিশ্বব্যাপী ফেইক নিউজের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় সাধারণ মানুষ আগের চাইতে অনেক সচেতন। সুতরাং ফেইক নিউজ বা ভুয়া খবর ছড়িয়ে পার পাওয়া এখন আর সহজ নয়।
আমরা আশা করি, ফেসবুক-টুইটারের এই পদক্ষেপ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সব পক্ষ ভুয়া খবর, গুজব, উস্কানি থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে আসবে। ভুয়া খবর বা গুজব মোকাবেলা করে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কর্তৃপক্ষকে লক্ষ্য রাখতে হবে।