চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দায়িত্ব সবার

নির্বাচনের সময় এবং নির্বাচনের পরে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন ১৪ দলের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। তাদের মতে, নির্বাচন আসলেই একটি অপশক্তি সংখ্যালঘুদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিভিন্ন সংগঠনের সাথে ধারাবাহিক মতবিনিময় করছে ১৪ দলীয় জোট। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেতারা মতবিনিময় করেন ‘হিন্দু-বৌদ্ধ- খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের’ সঙ্গে। সেখান থেকেই ইসির প্রতি এমন আহ্বান জানানো হয়।

ঠিক কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মোহাম্মদ নাসিম ইসিকে এই আহ্বান জানালেন, তা নিয়ে কিছু বলা হয়নি। তবে তিনি অতীত অভিজ্ঞতা টেনে এনে বলেছেন, অতীতে আমরা দেখেছি নির্বাচনকে সামনে রেখে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নানা রকম ভয়ভীতি দেখানো হয়।

শুধু জাতীয় নির্বাচন নয়, এমনকি স্থানীয় নির্বাচনেও এদেশের বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিশেষ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপর নির্যাতন অনেকটা স্বাভাবিক ঘটনার মতো হয়ে গেছে। আগের অনেকগুলো নির্বাচন সেটাই প্রমাণ করে। বিশেষ ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ব্যাপক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই নির্যাতনের ঘটনার বিচার হয়নি।

আমরা জানি, ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার গঠন করে। ক্ষমতায় আসার পর ২০০১ সালের সেই ভয়াবহ নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে  বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটিও করে ছিল। দীর্ঘ  তদন্তের পর ওইসব হামলায় জড়িতদের বিষয়ে প্রতিবেদন দিয়েছিল কমিটি। দুঃখজনক হলেও সত্য গত ১০ বছরেও তার বিচার হয়নি। ঘটনার সাথে জড়িতরা বহাল তবিয়তেই আছে। বরং নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিরা এখনো শঙ্কা নিয়ে চলছে।

এই বিচারহীনতার কারণেই মূলত যুগের পর যুগ ধরে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে চলেছে। সংখ্যালঘুদের অপরাধ তাদের বেশির ভাগই ভোটদেন স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তিকে। বড় অদ্ভুত এক অভিযোগ। অারও অদ্ভুত ব্যাপার হলো, বলতে গেলে এই বিষয়ে প্রায় সব রাজনৈতিক দলই নীরব ভূমিকা পালন করে। শুধু নির্বাচন এলেই তাদেরকে নিয়ে বড় বড় প্রতিশ্রুতির ঝুলি নিয়ে হাজির হন তারা। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে সবই ভুলে যান।

আমরা মনে করি, শুধু ভোটের কারণে বিশেষ কোনো ধর্মাবলম্বীদের ওপর এমন হামলা চিরতরে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। আর এ কাজে সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকেই। কেননা, সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের প্রধান কারণই হলো রাজনীতি।