আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)-এর চেয়ারম্যানের পদ থেকে ভারতের ‘বিতর্কিত’ ক্রিকেট প্রশাসক এন শ্রীনিবাসনের অপসারণকে বিশ্ব ক্রিকেটের জন্য মুক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন শ্রীনির কারণে আইসিসির সভাপতি পদ ছেড়ে আসা বাংলাদেশের পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সিদ্ধান্তে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসির সর্বোচ্চ পদ থেকে শ্রীনিবাসনের বিদায় নিশ্চিত হওয়ার খবর ঢাকায় পৌঁছার পর চ্যানেল আই অনলাইনকে মুস্তফা কামাল বলেন: খারাপ লোকের হাত থেকে ক্রিকেট মুক্তি পাচ্ছে এটা ক্রিকেটের জন্য সুখবর। এর ফলে শুধু আমি না, সারা ক্রিকেট দুনিয়াই স্বস্তি ফিরে পেয়েছে।
মেলবোর্নে ২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে করে মুস্তফা কামাল বলেন, সেদিন পুরস্কার বিতরণের সময় মেলবোর্নের ৮০ হাজার দর্শক শ্রীনিকে যে ছি ছি দিয়েছিলো সেটাই আমার জন্যে ছিলো প্রথম বিজয়। আর আজ মুম্বাইয়ে যে সিদ্ধান্ত তাতে সেই বিজয় পূর্ণাঙ্গ হলো।
বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ‘বিতর্কিত’ ম্যাচে ভারতের কাছে বাংলাদেশ হেরে গেলে বিসিবির সাবেক সভাপতি হিসেবে মুস্তফা কামাল কিছু মন্তব্য করলে শ্রীনির সিদ্ধান্তে কামালকে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আইসিসি সভাপতি হিসেবে মুস্তফা কামালের ট্রফি তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও ট্রফি তুলে দেন শ্রীনি।
‘মেলবোর্ন ওই ফাইনালের পর থেকে সে (শ্রীনি) আর একটা দিনও স্বস্তিতে ছিলো না। তার পতনের শুরু সেখান থেকেই।’
নিজে ন্যায়ের পথে ছিলেন উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন: আজ প্রমাণ হলো আমি ন্যায়ের পথে ছিলাম, আর সে অন্যায়ের পথে ছিলো। সে হিসেবে আমিই জয়ী।
আইসিসি আবার ডাকলে যাবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘না, আইসিসি বা বিসিবি কোথাও আর যাবো না। নিজের জায়গা থেকেই দেশ এবং বিশ্ব ক্রিকেটের জন্য কাজ করে যাবো।’
পরে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে ম্যাচের ধারাভাষ্যকারদের সঙ্গে কথা বলার সময় আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, মেলবোর্ন ঘটনার পর আমার পদত্যাগ অনেক সত্য প্রকাশের রাস্তা খুলে দিয়েছিলো।
‘আমি সভাপতি আর সে আইসিসির চেয়ারম্যান ছিলো। কিন্তু, তার কারণে আমাদের মধ্যে কখনোই কোনো রকম বোঝাপড়া ছিলো না,’ বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের দীর্ঘদিনের সংগঠক মুস্তফা কামাল।
মেলবোর্নের ওই ঘটনার পর বাংলাদেশ-ভারত ক্রিকেট সম্পর্কে অবনতির আশংকা করা হলেও সেটা হয়নি। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েই বাংলাদেশের ক্রিকেটের পুরনো বন্ধু জগমোহন ডালমিয়া সব উত্তেজনায় পানি ঢেলে দেন। মুস্তফা কামালকে আমন্ত্রণ জানিয়ে কলকাতায়ও নিয়ে যান ডালমিয়া।
হঠাৎ ডালমিয়ার মৃত্যু হলে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হন শশাঙ্ক মনোহর। বিসিসিআই’র বার্ষিক সাধারণ সভার সিদ্ধান্তে এখন তিনিই আইসিসিতে ভারতকে প্রতিনিধিত্ব করবেন। সে হিসেবে মনোহর হবেন আইসিসির চেয়ারম্যান, আর সরে যেতে হবে অনেক ‘অঘটনের নায়ক’ শ্রীনিকে।