স্বামী মামুন হোসেনের পরকীয়ার জেরে গলায় ফাঁস দিয়ে শান্তনা আক্তার নামের এক নারী ২ বছরের মেয়ে মাহফুজা আক্তারকে নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। রাজধানীর সবুজবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কুদ্দুস ফকির চ্যানেল আই অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার সকালে সবুজবাগ থানা পুলিশ আহমেদবাগের একটি টিনশেড বাসা থেকে মা ও মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে। পারিবারিক কলহের জন্য এ আত্মহত্যা কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আহমেদবাগের কমিউনিটি সেন্টারের পাশে টিনশেড ঘরের একটিতে বসবাস করত মামুন দম্পতি। প্রতিবেশীদের ভাষ্য মতে, মামুন স্থানীয় বন্ধুর সঙ্গে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবসা করত। স্ত্রী শান্তনা ছিলেন গৃহিনী। তাদের সংসারে ছিল দুই বছর বয়সী কন্যা শিশু মাহফুজা। প্রায় পাঁচ-ছয় বছর ধরেই এই ঘরে বসবাস করছিল তারা।
‘‘দুই মাস আগে রংপুর থেকে বোনের বাসায় আসে স্বর্ণা, লক্ষ্য ছিল একটা গার্মেন্টসে চাকরি করা, কিন্তু তা না করে দুলাভাই মামুনের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে স্বর্ণা। সেটা বুঝেও গিয়েছিল শান্তনা। দুই তিন দিন আগে মামুনের সঙ্গে নতুন করে ঘর সংসার করার জন্য পালিয়ে যায় স্বর্ণা। যা মোটেও সহ্য করতে পারেনি শান্তনা। তাই সোমবার গভীর রাতে ঘরের সিলিংয়ের বাঁশের সঙ্গে ওড়না পেচিয়ে মা-মেয়ে আত্মহত্যা করে।’’
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে সবুজবাগের ওই বাসায় দেখা যায়, মামুনের ঘরে তালা ঝুলছে। পুলিশ মা ও মেয়ের লাশ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। পাশের ঘরে থাকা আকলিমা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, তার বোনকে নিয়ে স্বামীর পালিয়ে যাওয়ার পর দুই তিন ধরেই শান্তনা না খেয়ে কান্না আর আহাজারি করছিল।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকালে দরজা ধাক্কা দিলে ভেতর থেকে কেউ খুলে না, ডাকাডাকি করলেও কারো শব্দ না পাওয়ায় পাশের জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে মা ও মেয়েকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই। পরে পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায়।
মানিক হোসেন নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, মামুন ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবসা করত, কিছুদিন ধরে তার শ্যালিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দু’একদিন আগে তারা পালিয়ে যায়।
সবুজবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কুদ্দুস ফকির চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ধারণা করা হচ্ছে নিজের স্বামীর সঙ্গে বোন পালিয়ে যাওয়ায় সোমবার রাতে দুই বছরের মেয়ে মাহফুজাকে গলা টিপে হত্যা করার পর মা শান্তনা আত্মহত্যা করেছেন।
পারিবারিক কলহ থেকে এমন ঘটনা ঘটতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, শান্তনার স্বামী মামুন হোসেনকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ ইতোমধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি। লাশ দু’টি ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে।