বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও নারী নেত্রী শিরিন বানু মিতিল মারা গেছেন। বুধবার দিবাগত রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।
শুক্রবার সকাল ১০টায় তার মরদেহ সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে।
তারপর তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে কুমিল্লায়। সেখানে বাদ আছর নামাজে জানাজার পর তাকে কাটাবিলে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
পাবনা জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি শিরিন বানু মিতিল সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ছেলের ছদ্মবেশেও যুদ্ধ করেছেন তিনি।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, মহিলা পরিষদসহ নানা সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন শিরিন বানু মিতিল।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ও নারী নেত্রী আয়শা খানম গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, তিনি আমাদের খুব কাছের মানুষ ছিলেন। তরুণ বয়সে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তরুণদের তিনি সাহস যুগিয়েছেন। ব্যক্তিগত জীবনেও নানা প্রতিকূলতা পার করেছেন এ নারী নেত্রী।
‘তার অকাল মৃত্যু বর্তমান সময়ের জন্য এক বড় ধাক্কা। তাকে এই সময়ে বড় দরকার ছিল,’ বলে মন্তব্য করেন আয়শা খানম।
শহীদজায়া ও শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, শিরিন মিতিল ছিলেন একজন সক্রিয় নারী নেত্রী। সমাজের যেকোন অসংগতি নিয়ে আন্দোলন করতেন। তার মৃত্যুতে আমি গভীর শোকাহত ও মর্মাহত।
‘এই তো গত শুক্রবারও আমার বাসায় এসেছিলেন। তার সঙ্গে শেষ কথায় তিনি বলেছিলেন, আমার তাড়া আছে, চলে যাচ্ছি,’ জানিয়ে শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, চিরদিনের জন্যই চলে গেলেন তিনি।
মুক্তিযোদ্ধা শিরিন বানু মিতিলের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন
বলেছেন, তার সঙ্গে শেষ দেখা হয়েছিল গতবছর। বর্ষবরণে নারী নিপীড়ন প্রতিবাদী
সভার অন্যতম আহ্বায়ক ছিলেন। তাকে স্যালুট। শেষ দিন পর্যন্ত ওনি
মুক্তিযোদ্ধাই ছিলেন।
১৯৫১ সালের ২ সেপ্টেম্বর পাবনা জেলায় মহিয়সী এই নারীর জন্ম। বাবা খোন্দকার শাহজাহান মোহাম্মদ ও মা সেলিনা বানু। বাবা-মা দুজনই বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট সরকারের এমপিও হন সেলিনা বানু।
শিরিন বানু মিতিলের বৃহত্তর পরিবারের প্রায় সকলেই প্রগতিশীল নানা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার পরিবারের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।