শুরু হলো এশিয়ার সর্ববৃহৎ ছবি মেলা ‘শূন্য’
১০ দিনব্যাপী শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র উৎসবের বিশেষ সংস্করণ ছবি মেলা ‘শূন্য’। উৎসবটি ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে…
করোনা পরবর্তী বিশেষ অভিজ্ঞতা ও প্রস্তুতির মধ্য দিয়ে ১০ দিনব্যাপী শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র উৎসবের বিশেষ সংস্করণ ছবি মেলা ‘শূন্য’’।
শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর পান্থপথের দৃকপাঠ ভবনে দৃক, পাঠশালা ও ছবি মেলার প্রতিষ্ঠাতা আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, উৎসবের পরিচালক তানজিম ওয়াহাব, নির্বাহী পরিচালক এএসএম রেজাউর রহমান ও কিউরেটর সরকার প্রতীক উৎসবের উদ্বোধন করেন।
বিকেল চারটায় দৃকপাঠ ভবনের সামনে থেকে ছোট আকারের একটি উদ্বোধনী শোভাযাত্রা দশতলা ভবনে প্রবেশ ও প্রদক্ষিণ করে ছাদে গিয়ে শেষ হয়।
এবার করোনাকালের কারণে অন্যান্য দেশের অংশগ্রহণকারীরা সরাসরি অংশ নিতে পারছেন না। একইসাথে স্বশরীরে দেশীয় দর্শকের উপস্থিতিও থাকছে সীমিত। সীমিত পরিসরে স্বশরীরে প্রদর্শনীর দেখার সাথে সাথে ডিজিটাল উপায়ে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় দর্শকের কাছে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে ভার্চুয়াল প্রদর্শনী ও অন্যান্য অনলাইন আয়োজন।
সব মিলিয়ে ৭৫ জন শিল্পীর কাজ নিয়ে মোট ৮ টি প্রকল্পে সাজানো হয়েছে এবারের ছবি মেলা। এই ৮ টি প্রকল্প হলো: লিমিটস, দ্য বেল উইথ অ্যা স্মাইল, উইশিং ট্রি, ছবি মেলা ফেলোশিপ ২০২১, ফ্রোজেন সং, ক্রসরোডস কালেক্টিভস ইন্টারভেনশন, বাবা বেতার ও ছাপাখানা আর্কাইভ।
দক্ষিণ এশিয়ার ১৪ জন শিল্পীর কাজ প্রচারিত হচ্ছে ‘[অফ] লিমিটস’ প্রজেক্ট শিরোনামে। এটি ছবি মেলার সবচেয়ে বড় গ্রুপ প্রদর্শনী। এখানে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে আছে কাশ্মির প্রশ্ন, ভারতের নানা আন্দোলন, সিলেটের এথনিক গ্রুপ, বর পরং নামের আদিবাসী বইয়ের পাঠ, নেপালের পাহাড়ের কমিউনিটি এবং পাকিস্তানের আহমদীয়াদের সমস্যাসহ নানা বিষয়ের উপর করা কাজ।
প্যানডেমিকের আগে এই বিষয়গুলো সকলের মনোযোগে থাকলেও প্যানডেমিকের মধ্যে হারিয়ে যেতে দেখা যায় এমনি নানা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুকে। হারিয়ে যাওয়া ইস্যুর পাশাপাশি ছবি মেলায় এবার রয়েছে বাংলাদেশের শিল্পী মাহমুদ হোসেইন অপু, সালমা আবেদীন পৃথি, সমারী চাকমা ও নাঈম মোহাইমেনসহ অন্যান্যদের প্যানডেমিকের উপর করা কাজ।
এবারের ছবি মেলা কেবল আলোকচিত্র নয়, বহুমাত্রিক মাধ্যমের শিল্পীদের কাজে হয়েছে বৈচিত্রময়। আলোকচিত্রের পাশাপাশি চিত্রকর্ম, চলচ্চিত্র, ইন্সটলেশন, ভাস্কর্য, ভিডিও সাউন্ড, প্যানেল আলোচনা, গানের অনুষ্ঠান, অডিও বেতার সম্প্রচার, অ্যানিমেশন, অস্থায়ী স্টুডিওসহ নানা মাধ্যমে কাজ করা শিল্পীদের মধ্যে সেতুবন্ধনের উদ্যোগ নিয়েছে ছবিমেলা।
করোনা মহামারী কালে নতুন ভার্চুয়াল বাস্তবতাকে বিবেচনায় এনে এবারের ছবি মেলায় ডিজিটাল উপস্থাপনা বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।
করোনাকালে সদ্য প্রয়াত স্থপতি বশিরুল হক এবং প্রয়াত বাংলাদেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী শিল্পী সাইদা খানম স্মরণে প্রদর্শনীতে এবার তাদের কাজ বিশেষ স্থান পেয়েছে। বশিরুল হকের তৈরী স্থাপত্য ডিজাইনের ছবি ও অন্যান্য কাজ নিয়ে গবেষণাধর্মী কাজ ‘উইশিং ট্রি’ নামের কাজটি রয়েছে ছবি মেলায়। সাইদা খানমের আমৃত্যু করা কাজের অংশ নিয়ে প্রদর্শিত হচ্ছে ‘দ্যা র্যাবেল উইথ অ্যা স্মাইল’।
বরাবরের মতো ছবিমেলায় এবার ফেলোশিপ বা বৃত্তি দেয়া হয়েছে ১৪ জন তরুণ শিল্পীকে। জীবনান্দ দাশের কবিতা ‘বোধ’ এর অনুপ্রেরণায় নির্দেশক ও কিউরেটর জিহান করিম ফেলোদের কাজটির টাইটেল দিয়েছেন ‘বোধ’।