অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ক্রমাগত উন্নতির ধারা বিশ্লেষণ করে ভারতের কয়েকটি গণমাধ্যম বলছে, উন্নয়নের এমন ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০২০ সালের মধ্যেই মাথাপিছু আয়ে ভারতকে ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ।
জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা-আঙ্কটাড তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ভারতের বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, জি বিজনেসসহ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম সোমবার এমন পূর্বাভাস দিয়েছে। মঙ্গলবার সেসব সংবাদ মাধ্যমকে উদ্ধৃত করে বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমেও ওই সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এতে বলা হয়, ডলারের হিসাবে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৪০ শতাংশ। অথচ একই সময়ে ভারতের মাথাপিছু আয় ১৪ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ৩৫৫ মার্কিন ডলার। আর ভারতের ১৭০৬ ডলার। এই ধারা অব্যহত থাকলে ২০২০ সাল নাগাদ মাথাপিছু আয়ে ভারতকে ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ।
আঙ্কটাডের পরিসংখ্যানে আরো বলা হয়েছে, ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ডলারের হিসাবে বাংলাদেশের জিডিপির সমন্বিত বার্ষিক প্রবৃদ্ধি বা সিএজিআর বেড়েছে ১২ দশমিক ৯ শতাংশ হারে। আর ভারতের প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। অথচ এই প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে ১৯৭০ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ৪০ ধরে ভারত ছিল দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে।
বাংলাদেশের জন্য নিঃসন্দেহে এটা এক বড় সুখবর। এইতো কয়েকদিন আগেই নিজেদের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু-১ এ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে মহাকাশে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের নাম। শুধু তাই নয়; স্বল্পোন্নত (এলডিসি) দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন, যা বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং সামাজিক অবস্থানকে বিশ্ব দরবারে মাথা উচু করে দাঁড় করিয়েছে, যদিও তিন বছর আগেই বাংলাদেশকে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।
আজ অনেক অর্জনে বিশ্বের অনেক দেশকে পেছনে ফেলে এক নম্বরে অবস্থান। বিশেষ করে দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা, নারী শিক্ষা ও নারীর ক্ষতায়নে অনেক অনেক এগিয়ে বাংলাদেশ।
আমরা জানি বাংলাদেশের এই অর্জন একদিনে আসেনি। বছরের পর বছর সমন্বিত পরিকল্পনায় একটু একটু করে এগিছে দেশ। এর জন্য সবচেয়ে বড় অবদান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। এ কারণেই গত এক দশকে বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন-অগ্রগতি ছিল ধারাবাহিক। যার ফলাফল এখন দৃশ্যমান।
আমরা মনে করি, এমন স্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকলে শুধু ভারত কেন, এশিয়ার অনেক দেশকে ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ।