গ্রামের সাধারণ মানুষ থেকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, যেই হোন না কেন – তার কার্যালয় সবার জন্যই উন্মুক্ত। ইতোমধ্যে জনগণের প্রশাসক বা সেবক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন নিজেকে। তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা, একজন মা, একজন সাংস্কৃতিক কর্মী। রাষ্ট্রের গুরু দায়িত্ব যেমন সামলান, তেমনি পালন করেন পরিবারের দায়িত্বও। আর অবসর সময়ে চর্চা করেন আবৃত্তির।
বলছিলাম, নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীলু রায়ের কথা।
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স এবং মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে এম.এড. ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবন শুরু হয় স্কুলে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে। তারপর ২৯তম বিসিএস এর মাধ্যমে এডমিন ক্যাডারে যোগ দেন শীলু রায়। বিভিন্ন স্থানে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের ধারাবাহিকতায় বর্তমানে তিনি নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
শীলু রায় শিবপুরের সাধারণ মানুষের কাছে তিনি একজন মানবিক মানুষ, নিজেদের মানুষ, আদর্শিক কর্মকর্তা। যেকোন কাজে বা প্রয়োজনে বিনা দ্বিধায় তার কার্যালয়ে সাধারণরাও প্রবেশ করতে পারে। সাধারণ মানুষ ও সরকারি কর্মকর্তাদের মাঝে যে তথাকথিত ফারাক, তিনি তা দূর করেছেন তার কাজের মাধ্যমে।
শিবপুরকে দারিদ্র্য ও ভিক্ষুকমুক্ত করা, ইভটিজিং ও বাল্যবিবাহ রোধে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছেন। সরকারের জঙ্গিবাদ ও মাদক নির্মূলে নানামুখী পদক্ষেপের পাশাপাশি ধর্মীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে ইসলামী ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় সমাবেশ করেছেন। একটি বাড়ি, একটি খামার প্রকল্পের জন্য গঠিত উপজেলার যে সমিতি তার নিয়মিত দেখভাল করছেন। খোঁজখবর রাখছেন উপজেলার নানা সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোরও।
উন্মুক্ত জলাশয়ে পোনা মাছ অবমুক্ত করে মানুষের আমিষের বিশেষ ব্যবস্থা করেছেন। শিবপুরে সরকারি অর্থায়নে শুদ্ধ বিনোদন কেন্দ্র এবং ন্যাচারাল পার্ক তৈরির চেষ্টা করছেন। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বৃক্ষরোপণকে তিনি নিয়মিত উৎসাহ প্রদান করে থাকেন। তাই বইমেলা, বিজ্ঞানমেলার পাশাপাশি আয়োজন করেন বৃক্ষমেলারও।
উপজেলার সবগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক কার্যাবলী, খেলাধুলা তথা সহশিক্ষা কার্যক্রমকে তিনি নিয়মিত পৃষ্ঠপোষকতা করেন। সবক্ষেত্রে মেয়েদের অংশগ্রহণের বিষয়ে তিনি বেশ জোর দেন। উপজেলার আর্থসামাজিক তথা সার্বিক উন্নয়নে এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানবৃন্দ, স্কুল কলেজের শিক্ষকবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে নিয়ে মাসিক সাধারণ সভার আয়োজন করেন।
অসহায় ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের তিনি নিয়মিত সাহায্য করে যাচ্ছেন নিজ অর্থ থেকে। ব্যক্তিগত জীবনে শীলু রায় বিবাহিত এবং এক সন্তানের জননী। তার বাবাও ছিলেন এডমিন ক্যাডার, যিনি বর্তমানে অবসরে। তার মা সব কাজের অনুপ্রেরণা।
একটি সুন্দর, স্বনির্ভর ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী উন্নত বাংলাদেশ গঠনে তিনি আজীবন কাজ করে যেতে চান। তার ভাষায়- মানুষের ভালবাসাই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পুরস্কার।
চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, সরকারের গৃহীত কাজকে যথাযথভাবে এগিয়ে নিতে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে যেতে চাই। একটি সমৃদ্ধ, উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় দেশের আপামর জনসাধারণের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেই কাজ করে যেতে চাই।
শীলু রায় আরো বলন, সুন্দর আগামীর উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় নারী-পুরুষের সমান ভূমিকা প্রয়োজন।