অপহরণের পর ছয় বছরের এক শিশুকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৩ আসামীকেই খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের আপিল মঞ্জুর এবং ডেথ রেফারেন্স খারিজ করে সোমবার বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ এবং বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। আদালতে আসামী বাহাদুর মিয়ার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সালাম মামুন। আসামী আব্দুল খালেকের পক্ষে ছিলেন মোহাম্মদ শিশির মনির। আসামী শুক্কুর মিয়ার পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী শাহনাজ হক। আর রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান।
এই মামলার বিবরণ থেকে জানান যায়, ২০১৩ সালে ৪ জুলাই কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছটার বাসিন্দা নুরুল আলমের ছেলে হৃদয় মনিকে (৬) অপহরণ করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এর পরদিন সকাল ৭ টার সময় হোটেল ওশান প্যারাডাইসের পিছনে সাগর সৈকতে হৃদয়ের লাশ পাওয়া যায়। এঘটনায় হৃদয়ের বাবা মো. নুরুল আলম বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন। এরপর ২০১৪ সালের ২০ এপ্রিল হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আবদুল খালেক, বাহাদুর মিয়া, আবদুস শুক্কুর ও জসিমের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। পরবর্তীতে সাক্ষিদের সাক্ষ্য গ্রহন শেষে ২০১৫ সালের ৭ জুন কক্সবাজারের দায়রা জজ মো. সাদিকুল ইসলাম তালুকদার আসামী জসিমকে খালাস দিয়ে বাকি ৩ আসামীকে মৃত্যুদণ্ড দেন। একপর্যায়ে দণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। অপরদিকে আসামীরা জেল আপিল করেন। সেই জেল আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে আজ হাইকোর্ট রায় ঘোষনা করেন।
আজকের রায়ের বিষয়ে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘হাইকোর্টে শুনানিতে প্রসিকিউশনের অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রমাণাদির বিষয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেছি। আর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার সময় ম্যাজিস্ট্রেট কক্ষে আসামী আব্দুল খালেক ও বাহাদুর উভয়ই একই সময়ে উপস্থিত ছিলেন। তাই ওই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আইনের চোখে কোন জবানবন্দিই নয় বলে আদালতে যুক্তি তুলে ধরেছি। এছাড়া বলেছি যে, এই জবাববন্দি স্বেচ্ছা প্রণোদিত নয়। ভয় ভীতি দেখিয়ে এই জবানবন্দী আদায় করা হয়েছে। হাইকোর্ট উভয় পক্ষকে শুনে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৩ আসামীকে খালাস দিয়ে রায় দিয়েছেন।’