চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

‘শিশু অপহরণ-হত্যার কারণ অপরাধীর শাস্তি না হওয়া’

অর্থ পাওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা, সামাজিক অবক্ষয় এবং অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়াকে শিশু অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা বেড়ে যাওয়ার কারণ মনে করেন সমাজবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী এবং সমাজকর্মীরা।

সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোয় উদ্বেগ প্রকাশ করে শিশুদের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং এ ক্ষেত্রে আইনের ফাঁকগুলো বন্ধের সুপারিশ করেছেন তারা।

রাজধানীর অদূরে কেরানীগঞ্জ থেকে অপহরণের ৫দিন পর শিশু আব্দুল্লাহ্র বস্তাবন্দী মৃতদেহ উদ্ধার। টাঙ্গাইলে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে অপহরণের শিকার হওয়ার পর ধামরাইয়ের দুই শিশুর মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া। মুন্সিগঞ্জের পরিত্যক্ত ঘর থেকে মাদ্রাসা ছাত্র নীরবের মৃতদেহ উদ্ধার। রংপুরে শিশু রনকের বস্তাবন্দী মৃতদেহ। সপ্তাহজুড়ে এসবই ছিল গণমাধ্যমের শিরোনাম।

পারিবারিক বিরোধ, অর্থের জন্য অপহরণ কিংবা জমিজামা নিয়ে বিরোধের কারণে গত এক মাসে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে ২৯ শিশু। সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করছেন, সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ে বলি হচ্ছে শিশুরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল ইসলাম খান বলেন, মানুষ নিজেকে নিয়ে এতো বেশি ব্যস্ত, এতো বেশি আত্মকেন্দ্রিক, মানুষ যখন শুধু প্রাপ্তির জন্য ছুটছে, তখন তার কাছে মমত্বটা অর্থহীন।

সমাজে অসহিষ্ণু প্রতিযোগিতা, কম সময়ে বেশি সম্পদের মালিক হওয়ার আকাঙ্ক্ষা, মাদকাসক্ত এসবই শিশুর ওপর এসব নির্মমতার বড় কারণ মনে করেন মনোবিজ্ঞানীরা।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব বলেন, অপরাধের জন্য যে ধরনের শাস্তি হওয়া দরকার যখন সেটা না হয়, তখন অপরাধী আরেকটা অপরাধ করা সাহস পায়।

সমাজবিজ্ঞানী এবং মনোবিজ্ঞানীদের সঙ্গে একমত পোষণ করে সমাজকর্মীরা বলছেন, অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়ায় ঘটনাগুলো বারবার ঘটছে।

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল বলেন, রাকিব-রাজনের ঘটনা ঘটার পর রাষ্ট্রীয় বাহিনী সেখানে নেমে গিয়েছিল। কিন্তু তারা দেখেছে কি হয়। যদি কাজ না করে পাড় পাওয়া যায় তাহলে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকে।

শিশুদের সুরক্ষার জন্য সামাজিক সচেতনতা ও মানবিক মূল্যবোধের বিকাশের পাশাপাশি আইনের দুর্বল জায়গাগুলো সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছেন সমাজবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী এবং সমাজকর্মীরা।