চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

শিল্পকর্মের মাধ্যমে লিও জিয়াবোকে স্মরণ

নোবেল বিজয়ী চীনের প্রখ্যাত মানবাধিকার কর্মী লিও জিয়াওবো লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পর শিল্পের মাধ্যমে ‘রাজনৈতিক শিল্পী’রা তাকে স্মরণ করেছেন। তার মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে চীনের অনেক শিল্পী তাকে নিয়ে আঁকা অনেক ছবি এখনও শেয়ার করছেন। তবে এসব রাজনৈতিক কর্মীর চোখেই লিও হিরো হলেও চীনা কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি একজন অপরাধী।

লিও জিয়াবো এবং তার স্ত্রী লিউ জিয়ার ভালোবাসাও ভক্তদের নিরন্তর অনুপ্রেরণার উৎস। ১৯৯৬ সালে লিও জিয়াকে বিয়ে করেন তিনি। লিওর আন্দোলনের কারণে তার সঙ্গে স্ত্রীকেও গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিলো।

এই জুটির একটি ছবি তার অনুগামী, সমর্থক, বন্ধুরা সম্প্রতি ছড়িয়ে দেয়, যা বেশ আলোড়ন তোলে।  স্ত্রীর সঙ্গে তাকে দেখা করার তেমন সুযোগ দেয়া হতো না। অবশ্য জীবনের শেষ কিছু দিন হাসপাতালে তাদের সাক্ষাৎ হয়েছিলো।

 

এই ছবি থেকেই বেশকয়েকটি শিল্পকর্মের সৃষ্টি হয়েছে যা তাদের ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধা। এদের মধ্যে একজন বাদিউকাও, তার চিত্রের শিরোনাম ‘চীনের রোগী’।

অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক আর্টিস্ট বাদিউকাও এই চিত্রের একটি সংস্করণ মেলবোর্নের হোসিয়ার লেনেও এঁকেছেন। বুধবারের এই চিত্রে লিওকে মুক্তির দেয়ার আহ্বান জানানো হয়।

প্রখ্যাত রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট রেবেল পেপার তার আঁকা একটি ছবি টুইট করেন।

চীনা কার্টুনিস্ট জিয়াওগুয়াই একই ছবি থেকে অনুপ্রেরিত হয়ে একটি ছবি এঁকেছেন। এই ছবির দুইটি মোমবাতি এই জুটির প্রতীক।

‘চীনে মৌলিক মানবাধিকারের জন্য দীর্ঘ ও অহিংস আন্দোলনের’ জন্য লিও জিয়াওবো ২০১০ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। কিন্তু নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করতে তিনি সুইডেন যেতে পারেননি। কারারুদ্ধ অবস্থায় বিশ্বের দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।

তার একটি শূণ্য চেয়ারও অনেক আর্টিস্টকে আঁকতে অনুপ্রাণিত করে। বাদিউকাও-এর তেমনই একটি সৃষ্টি এটা।

রেবেল পেপারও সেই চেয়ারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। লিওয়ের ডোরাকাটা পাজামার আদলে চেয়ারটি আঁকেন তিনি।

বাদিউকাও-এর আঁকা এই ছবির নাম ফাইনাল ফ্রিডম

১৯৫৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর জিলিনের চ্যাংচুনে লিও জিয়াওবোর জন্ম। একজন অ্যাকাডেমিশিয়ান হিসেবে কর্মজীবন শুরু তার। সাহিত্য ও দর্শনে পড়াশোনা করা লিও বেইজিং এর একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক হিসেবে তার শান্ত-নিস্তরঙ্গ জীবন উত্তাল হয়ে ১৯৮৯ সালের তিয়েনআনমেন স্কোয়ারে আন্দোলন। অনেকেই গণতন্ত্রের এই আন্দোলনে পিছু হটলেও তিনি অটল থাকেন। এজন্য বহুবার কারাবরণ করতে হয় তাকে।

অসুস্থ অবস্থায় বিদেশে তার চিকিৎসার আবেদনও খারিজ করে দেয় চীনা কর্তৃপক্ষ। নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তার অকাল মৃ্ত্যুর জন্য চীনা সরকার অনেকাংশে দায়ী।