বীর মুক্তিযোদ্ধা শিরিন বানু মিতিলকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। বিকেলে কুমিল্লার কাটাবিলে দ্বিতীয় নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে শিরিন বানু মিতিলকে দাফন করা হবে।
একাত্তরে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা শিরিন বানু মিতিল বুধবার রাত সাড়ে ১১টায় ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। দেশের জন্য নিবেদিত মানুষটির মৃত্যুতে সর্বস্তরে শোক নেমে আসে। শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার মরদেহে শ্রদ্ধা জানান রাজনীতিবিদ, শিল্পী এবং সর্বস্তরের মানুষ।
সেখানেই এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থেকে আন্দোলন করেছিলেন শিরিন বানু মিতিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাবনা জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভানেত্রী থাকার সময়ই ছেলেদের পোশাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি।
শোক জানাতে এসে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, তিনি যে অবস্থানে নিজেকে রেখেছিলেন সেই জায়গাটা অন্য কারো দ্বারা পূরণ করা সম্ভব না। তবে সরকারিভাবে তাকে কোনো সনদ দেওয়া হয়নি, জাতির জন্য এর থেকে বড় দুর্ভাগ্য আর কিছু থাকতে পারে না বলেই মনে করেন তারা।
প্রগতিশীল সামাজিক আন্দোলনে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সক্রিয় ছিলেন শিরিন বানু মিতিল। পরিবারিক জীবনেও আদর্শ ছিলেন তিনি।
তার ছেলে তাহসিনুর বলেন, বাংলাদেশকে প্রতিফলিত করে ও প্রগতিশীলতাকে প্রতিফলিত করে এমন কিছুর পক্ষে সবসময় ছিলেন মা এবং সেভাবেই তিনি আমাদের বড় করে তুলেছেন।
কুমিল্লায় আরেকটি গার্ড অব অনার এবং জানাযা শেষে বাদ আসর সেখানেই চিরনিদ্রায় শয়ান একাত্তরের এ বীর যোদ্ধার।
পাবনা জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি শিরিন বানু মিতিল সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ছেলের ছদ্মবেশেও যুদ্ধ করেছেন তিনি। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, মহিলা পরিষদসহ নানা সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন শিরিন বানু মিতিল।
১৯৫১ সালের ২ সেপ্টেম্বর পাবনা জেলায় মহিয়সী এই নারীর জন্ম। বাবা খোন্দকার শাহজাহান মোহাম্মদ ও মা সেলিনা বানু। বাবা-মা দুজনই বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট সরকারের এমপিও হন সেলিনা বানু।
শিরিন বানু মিতিলের বৃহত্তর পরিবারের প্রায় সকলেই প্রগতিশীল নানা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার পরিবারের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।