মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দেশের শিক্ষা খাত সবচেয়ে নাজুক সময় পার করছে। প্রায় এক বছরের কাছাকাছি সময় ধরে দেশের কয়েক কোটি শিক্ষার্থী প্রচলিত শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের উপরে কোনোরকমে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যাভাস টিকে থাকলেও প্রযুক্তির থাকা একটি বিরাট সংখ্যক শিক্ষার্থী হারাতে বসেছে তাদের শিক্ষা জীবন।
করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ধরে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটির মেয়াদ বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি ছুটি আরও একধাপ বাড়িয়ে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত করেছে সরকার। করোনাকালে সারাবিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিয়মিত জীবন যাপনে নানা বিধি নিষেধ থাকলেও সেসব দেশে ক্লাসরুম ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম অনেকটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের দেশে বিষয়টি সম্পূর্ণ বিপরীত। নিয়মিত দেশের সব প্রতিষ্ঠান স্বাভাবিক এবং কোনো বিষয়ে কোনো বিধিনিষেধ মানছে না জনগণ, শুধু শিক্ষা ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ।
এই অবস্থায় অবিলম্বে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়েছে। প্রথমে লিগ্যাল নোটিশ দেয়া ও পরে নোটিশের জবাব না পেয়ে রিট করা হয়। ওই লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছিল, লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, ‘কোভিড-১৯ এর কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের মেয়াদ বৃদ্ধির ফলে শিক্ষার্থীরা অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা রাত দিন ইন্টারনেট-ভিডিওগেম ও টিভি দেখার বদ অভ্যাস করছেন। আবার অনেকেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছেন। তাই দেশের করোনা পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে থাকায় ও ভ্যাকসিন প্রাপ্তি সন্নিকটে থাকায় শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের মেয়াদ আর না বাড়িয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিতে অনুরোধ করছি।’
শিক্ষার্থীদের পাঠ্যাভাস ক্ষতি ও ইন্টারনেটের ব্যবহার বিষয়ক যে শঙ্কা রিটকারীর, তা দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে দৃশ্যমান। তাছাড়া দেশের মাদ্রাসা শিক্ষা স্বাভাবিক রাখা হয়েছে, যেখানে গণসংক্রমণের কোনো খবর এখনও পাওয়ানি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা কার্যক্রমও কিছুটা শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।