বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া স্কুল মাদ্রাসাগুলো দীর্ঘ ১৮ মাস পর খুলে দিয়েছে সৌদি সরকার।
এখন থেকে ইবতেদায়ী ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ছাড়া উচ্চবিদ্যালয়, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের একাডেমিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে পারবে এবং পরীক্ষায় সশরীরে অংশ নিতে পারবে।
তবে ১২ বছরের উর্ধ্বে যেসব ছাত্রছাত্রী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দুটি ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে শুধুমাত্র তারাই স্কুলে প্রবেশ করতে পারছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শূন্য শতাংশে নেমে আসলে তবেই ইবতেদায়ী মাদ্রাসা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেবে সরকার।
অনেকদিন পর শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে পেরে উচ্ছ্বসিত স্থানীয় শিক্ষার্থীরা। যদিও ইতিপূর্বে অনলাইনে শিক্ষার কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছিলো সৌদি আরবে।
বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা না আসলেও সৌদি আরবে অবস্থিত ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে জাতীয় কারিকুলাম এ পরিচালিত বাংলাদেশি স্কুলগুলো ৫ সেপ্টেম্বর থেকে সপ্তম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ক্লাস শুরু করবে। পরবর্তী সময়ে ৩০ অক্টোবর ২০২১ তারিখ থেকে সকল ক্লাস শুরু করা যাবে মর্মে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ জেদ্দা এর প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ হামদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সৌদি সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ছাত্রছাত্রীদের আসন গ্রহণসহ ১৩টি নির্দেশনা প্রদান করেছে। এর মধ্যে রয়েছে, সকল শিক্ষার্থীকে অবশ্যই কোভিড-১৯ এর ২টি ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে কেবল তারাই স্কুলে আসবে। যেসব শিক্ষার্থী এখনো ২টি ভ্যাকসিন গ্রহণ সম্পন্ন করেনি, তারা দুইটা সম্পন্ন করলে স্কুলে আসতে পারবে। স্কুলে আসার সময় ২টি ভ্যাকসিন গ্রহণের প্রামাণ্য কাগজ প্রিন্ট-আউট সাথে আনতে হবে, শিক্ষার্থীদের সকাল ৭ টা ২০ মিনিটের মধ্যে প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হতে হবে, তবে আপাতত কোনো অ্যাসেম্বেলি অনুষ্ঠিত হবে না, শিক্ষার্থী অসুস্থ থাকলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না পাঠাতে অভিভাবকদের অনুরোধ করা হয়েছে, স্কুলে আসার সময় বাসা থেকে অবশ্যই মাস্ক পরে আসতে হবে, স্কুল থেকে কোন টিফিন সরবরাহ করা হবে না বলে বাসা থেকে একবার ব্যবহারযোগ্য বাক্সে টিফিন আনতে হবে। কোন প্লাস্টিক বা ধাতব পদার্থ পদার্থের টিফিন বক্স ব্যবহার করা যাবে না, স্কুলে প্রবেশের সময় কোন শিক্ষার্থী তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দেখা গেলে বা অসুস্থতা দেখা গেলে তা তাৎক্ষণিকভাবে অভিভাবককে টেলিফোনে জানাতে হবে, যাতে তাকে নিয়ে যেতে পারে, তাৎক্ষণিক ওই শিক্ষার্থীকে প্রবেশদ্বারে পাশে কক্ষে অবস্থান করবে, অভিভাবকের মোবাইল নম্বর শিক্ষার্থীর সাথে রাখতে হবে, স্কেল ও অন্যান্য সামগ্রী এবং টিস্যু পেপার একান্তভাবে শিক্ষার্থীর নিজের কাছে রাখতে হবে, যেন অন্য কেউ সেগুলো স্পর্শ না করে, স্কুলে যৌথভাবে পানি পান করার জার বন্ধ রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদেরকে বোতলজাত পানি সাথে করে নিয়ে আসার পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে, প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে তার জন্য নির্ধারিত একই আসনে প্রতিদিন আসন গ্রহণ করবে করতে হবে।
এছাড়া নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে, শিক্ষার্থী যেন তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য অভিভাবকদের অনুরোধ করা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের যথেষ্ট সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শ্রেণিকক্ষে আসন গ্রহণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তা নিশ্চিত করতে হবে, শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত টিস্যু ও যথাযথ স্থানে ফেলতে হবে, প্রয়োজনে হাত সাবান দিয়ে ধৌত করবে বা স্যানিটাইজ করবে এবং কোনো শিক্ষার্থীর অসুস্থতা দেখা দিলে নির্দিষ্ট ক্লাস বা স্কুল বন্ধ করার ব্যাপারে সৌদি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।