রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. শাহেদের বিদেশ যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন: তাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে, অন্যথায় গ্রেপ্তার করা হবে।
রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
‘শাহেদ এখন কোথায় আছেন’ জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন: প্রথম কথা শাহেদ কোথায় সেটা শাহেদ জানে। আমাদের পুলিশ এবং র্যাব সে (শাহেদ) কী ধরনের অন্যায় করেছে সেগুলো ইনকোয়ারি করছে। তদন্ত রিপোর্ট আসলে আমি আপনাদের জানাতে পারব তার অন্যায়ের গভীরতাটা কতটুকু।
তিনি বলেন: সে যে অন্যায় করেছে তার জন্য ইতোমধ্যে র্যাব ব্যবস্থা নিয়েছে। তাকে খোঁজা হচ্ছে। সে যেখানেই থাকুক তাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে, না হয় পুলিশ তাকে ধরে ফেলবে।
সে বিভিন্ন পত্রিকা বের করার অনুমতি নিলে সেক্ষেত্রে সিটিএসবি (নগর পুলিশের বিশেষ শাখা) রিপোর্ট দেয়। সেক্ষেত্রে একটা দুর্বলতা ছিল কি-না। তাছাড়া অভিযোগ রয়েছে, উত্তরা থানা সবসময় তাকে শেল্টার দিয়ে আসছিল। এগুলো আপনারা আমলে নিচ্ছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন: এ তথ্য উদ্ঘাটনের পর কেউ তাকে শেল্টার দেয়নি। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী তার অন্যায় ধরেছে। সে কী করেছে সেগুলো র্যাব ও পুলিশ তদন্ত করছে। তাকে অবশ্যই আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসব।
‘সে কি দেশে আছে নাকি বাইরে চেলে গেছে’ এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন: দেশের বাইরে যাওয়ার তো কোনো উপায় নেই। তার পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে, বর্ডার যাতে ক্রস করতে না পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা খুঁজছি। আশা করি, শিগগিরই তাকে ধরতে সক্ষম হবো।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতাল ও রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদের পাসপোর্ট জব্দ করেছে তদন্তকারী দল। রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যানের কক্ষ থেকে একটি কম্পিউটার, মোহাম্মদ শাহেদের পাসপোর্ট ও প্রধান কার্যালয় থেকে বেশ কয়েকটি কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক উদ্ধার করা হয়। তল্লাশির সময় তাদের আরও ২০টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে সাহেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশকে চিঠি দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার পুলিশের পক্ষ থেকে ইমিগ্রেশন বিভাগকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, শাহেদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তিনি যেন দেশের বাইরে যেতে না পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হচ্ছে।
গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম। অভিযানে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম উঠে আসে। পরে সেখান থেকে আটজনকে আটক করে র্যাব।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান শাহেদসহ ১৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এতে সোমবার রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা শাখা থেকে আটক আটজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. শাহেদসহ ৯ জনকে পলাতক আসামি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।