শুরুতেই মাহবুবুল হক শাকিলের একটি ফেসবুক পোস্ট উল্লেখ করছি। শিরোনাম ‘গল্প লেখার গল্প’। পোস্টটি ১৯ জুন ২০১৬ সালের।
এক সন্ধ্যার আড্ডায় প্রকাশক-বন্ধু মাজহার অনুযোগের সুরেই জিজ্ঞাসা করল, ‘তুমি গদ্য লেখো না কেন?’ হেসেই উড়িয়ে দিলাম ওর কথা। বললাম, ‘কবিতা কবিতা খেলা নিয়ে তো ভালোই আছি। গদ্যের আবার দরকার কী?’
খানিকটা সিরিয়াস ভঙ্গিতেই সে বলে উঠল, ‘আমি মনে করি তোমার গদ্যও মন্দ হবে না।’ কিছুটা তরলের প্রভাবেই বোধকরি অন্য বন্ধুরাও তার পক্ষ নিল। ভাবলাম, চেষ্টা করতে দোষ কী?
আমার কোনো লেখার খাতা নেই। অখাদ্য-কুখাদ্য যা মনে আসে ফেসবুকেই লিখি। শুরু করলাম নিজের ফেলে আসা জীবনের ছোট ছোট গল্প। “জল পড়ে, পাতা নড়ে” শিরোনামে। সাত পর্ব শেষ করার পর দেখি জলও পড়ে না, পাতাও নড়ে না। কী বিপদ!
এরই মধ্যে আবারও মাজহারের ফোন। অন্যদিনের ঈদসংখ্যায় গল্প লাগবে। আমি ভাবলাম, গল্প আর তেমন কী? প্রয়োজনে আস্ত একটা উপন্যাসই দিয়ে দেব। যেমন ভাবা তেমন কাজ। এক দুপুরে প্রায় সতের শ শব্দ লিখে ফোনে মাজহারকে শুনিয়ে দিলাম। আমার ভাবটা এমন যে, হাম কিসিসে কম নেহি! মাজহার দারুণ খুশি। বলল, ‘বন্ধু চালিয়ে যাও। তোমার হবে।’
হবে তো বটে কিন্তু লিখতে তো আর পারছি না। মাজহার ফোন করে। আমি বিস্তর মিথ্যা কথা বানিয়ে বলে দেই তাকে অবলীলায়। গত পরশুর আগের দিন আবার তার যন্ত্রণাদায়ক ফোন। এবার সরাসরি আক্রমণ। ‘বন্ধু, ১৭ তারিখ তোমার লেখাটা পাঠিয়ে দাও। ১৮ তারিখে আমরা দেখব। ১৯-এ প্রেসে যাবে। অন্য সবার লেখা পেয়েছি। শুধু তোমারটা বাকি আছে।’
রোজাদার মানুষ আমি রোজাকে হালকা করে ইনিয়ে-বিনিয়ে বললাম, ‘শেষ হয়ে গেছে তো! কালই তোমাকে মেইল করে দিচ্ছি।’ সে ফোন রাখল। আমি হাঁফ ছেড়ে যে বইটা পড়ছিলাম তাতেই ঢুকে পড়লাম। গতকাল তার এসএমএস। কখন পাঠাচ্ছো?
আমি তো আর বলতে পারি না যে ২০/২৩ দিন আগে গল্প যেখানে ছিল এখনো সেখানেই বসে ঝিমাচ্ছে। খুদে বার্তার কোনো জবাব দিলাম না।
কাল সারারাত আমি মাজহারের ভয়ে ঘুমাতে পারি নি। ভয় কাটানোর জন্য আজ দুপুর পর্যন্ত বইয়ের পৃষ্ঠায় আটকে রইলাম। ফোনের সাউন্ড অফ। যাতে ভয়ানক সেই ফোনের আওয়াজ আমার আতংকিত কানে না পৌঁছায়।
দুপুরে জোহরের নামাজের পর কী মনে হলো জানি না। ল্যাপটপ খুলে সেই অসমাপ্ত ফাইল নিয়ে বসলাম। আসরের আগে শেষ হলো আমার তথাকথিত গল্প। মাজহারকে মেইল করলাম মহাআনন্দিত চিত্তে। নিশ্চয়ই ব্যাটা এই নড়বড়ে গল্প নাকচ করবে। আমিও অত্যাচার থেকে বাঁচব চিরতরে।
একটু আগেই আবার ওর ফোন। ‘বন্ধু, তোমার গল্প ছাপছি আমি অন্যদিনের ঈদসংখ্যায়।’ গল্পের নাম ‘ফেরা’। আমার আর ফেরা হলো না। আবারও আতংকিত হলাম। মাজহারের ফোনের আগ্রাসন থেকে বাকি জীবনে মুক্তির পথ বোধকরি নিজেই বন্ধ করে দিলাম।
২৪ জুন ২০১৬। অন্যদিন ঈদ সংখ্যা প্রকাশ উপলক্ষ্যে ঢাকা ক্লাবে লেখক সম্মিলন ও ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। ওইদিন লেখকদের হাতে অন্যদিন ঈদ সংখ্যা তুলে দেওয়া হবে। একে একে লেখকেরা ঢাকা ক্লাবের সিনহা লাউঞ্জে আসছেন। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে তাঁদের হাতে আমি ঈদ সংখ্যা তুলে দিচ্ছি। আমার সঙ্গে আছে অন্যদিনের নির্বাহী সম্পাদক আবদুল্লাহ নাসের ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সিরাজুল কবির চৌধুরী।
একপর্যায়ে শাকিল এসে উপস্থিত। ঈদ সংখ্যা হাতে নিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরল। অস্ফুটে বলল, তুই আমাকে গল্পকার বানিয়ে ছাড়লি। আমি বললাম, তুমি নিজের যোগ্যতায় গল্পকার হয়েছ। কেউ কাউকে চাইলেই গল্পকার বানাতে পারে না। স্মিত একটা হাসি দিয়ে শাকিল অন্যদিন হাতে নিয়ে ভেতরে চলে গেল। একটুপর তাকিয়ে দেখি সে পত্রিকা খুলে নিজের লেখা দেখছে। তাঁর চোখে মুখে একধরনের মুগ্ধতা। ‘ফেরা’ গল্পের মাধ্যমে গল্পকার মাহবুবুল হক শাকিলের আত্মপ্রকাশ ঘটল।
‘ফেরা’ পড়ে কেউ বিশ্বাস করতে চায় না এটা শাকিলের প্রথম লেখা গল্প। সহজ সরল ভাষার ব্যবহার, বর্ণনাশৈলী, গল্পের কাঠামো এবং বিষয়বস্তু প্রশংসিত হয়। উৎসাহিত হয় শাকিল। দ্বিতীয় গল্প ‘টোপ’ লিখতে শুরু করে। একদিন রাত তিনটায় শাকিলের ফোনে ঘুম ভাঙল। সে বলল, বন্ধু দ্বিতীয় গল্পটা অনেকখানি লিখে ফেলেছি। তোমাকে পড়ে শোনাই। আমি বললাম, শাকিল এখন রাত তিনটা বাজে। কাল শুনি।
সে অভিমান করে বলল, তোর জন্য গল্প লিখছি আর তুই শুনবি না? যা আর লিখবই না।
আমি বললাম, রাগ করিস কেন? আচ্ছা পড়।
শাকিল তার দরাজ গলায় গল্প পড়তে শুরু করল। আমি ঘুম জড়ানো চোখে মোবাইল ফোনে ওর গল্পপাঠ শুনছি। একসময় আমার ঘুম কেটে গেছে। আমি গল্পের ভেতরে ঢুকে গেছি। শাকিল থেমে গেল। আমি বললাম, তারপর?
শাকিল বলল, এটুকুই লিখেছি। সাড়ে নয় শ শব্দ। তুমি এখন ঘুমাও। বাকিটা লেখা শেষ করে আমি ঘুমাব। কাল সকালে সম্পূর্ণ গল্পটা ই-মেইলে পেয়ে যাবে।
বললাম, তুমিও এখন ঘুমাও বন্ধু। সকালে ঘুম থেকে উঠে বাকিটা লিখো।
না, আমি শেষ করে ঘুমাব।
এরপর ফোনের লাইন কেটে দিল। আমি ঘুমাতে গেলাম। পরদিন দুপুরে ‘টোপ’ চলে এল আমার কম্পিউটারে। আমি গল্পটা পড়ে বিস্মিত হয়ে গেলাম। শাকিল গল্প পাঠানোর কিছু সময় পরই ফোন করে জানতে চাইত লেখাটা কেমন হয়েছে। সেদিনও ফোন করল পড়েছিস গল্পটা? আমি বললাম, বন্ধু, চমৎকার। শেষটা এরকম হবে ভাবি নি।
শাকিল বললো, ওখানেই তো চমক। নাসের ভাই যেন গল্পটা পড়ে এবং ফাইনাল প্রুফ দেখে দেয়। কেমন লাগল আমাকে জানাতে বলিস।
তবে সব গল্পের প্রথম প্রুফ দেখে দিত শাকিলের আত্মজা মৌপি। ‘ফেরা না-ফেরার গল্প’ গ্রন্থে ‘আত্মজার কথায়’ বাবার গল্প নিয়ে এভাবে বলে মৌপি-
‘বাপের গল্পগুলোর প্রুফ রিডিং আমি করতাম। অমন তোড়জোড় করে ছাপাখানার প্রুফ রিডিং না। ভাত খেতে বসেছি, হঠাৎ দেখি ল্যাপটপ হাতে বাপ হাজির, খেতে খেতে লেখাটা একটু দেখে দিবি?’
‘টোপ’ ছাপা হলো দৈনিক প্রথম আলোর সাহিত্য পাতায় (২৭ আগস্ট ২০১৬)। এভাবে একটার পর একটা গল্প লেখা চলতে থাকল। গদ্যে যেন তার নেশা পেয়ে বসেছে। কিন্তু কবিতাও থেমে নেই। তিন নম্বর গল্প, ‘কুড়ি বছর পরে’। বাংলাদেশ বইমেলা উপলক্ষে আমরা কলকাতা গিয়েছি। সেখানে বহুদিন পর এক পুরোনো বন্ধুর সাথে দেখা হয়। কুড়ি বছর পরে গল্পের শুরু সেখান থেকে। কলকাতা থেকে ফিরে এসে গল্পটি লিখে ফেলে শাকিল। ছাপা হলো দৈনিক সমকালের সাহিত্য সাময়িকী ‘কালের খেয়া’য় (৭ অক্টোবর, ২০১৬)।
শাকিলের চতুর্থ গল্প ‘গোলপাহাড়ের বাড়ি’। এই গল্পটি ছাপা হয় দৈনিক ইত্তেফাকের সাহিত্য পাতায় (৭ অক্টোবর, ২০১৬)।
চারটা গল্প লেখার পর একদিন আমাকে জিজ্ঞেস করল, আর কয়টা গল্প লাগবে বই করতে?
আমি বললাম, কমপক্ষে আরও চারটা। তবে পাঁচটা হলে ভালো হয়।
একদিন মিলন ভাই, কথাসাহিত্যিক ও কালের কণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, আমাকে ফোন করলেন। শাকিলের গল্প পড়েছেন তিনি। তাঁর খুব ভালো লেগেছে। বললেন, এই ছেলে তো দুর্দান্ত সব গল্প লিখছে। মিলন ভাই আমাকে অনুরোধ করলেন তাঁর এই ভালো লাগার কথাটি যেন শাকিলকে জানাই। এও বললেন শাকিল যেন কালের কণ্ঠের জন্য একটি গল্প লিখে। আমি বললাম, কথাগুলো সরাসরি আপনি ফোন করে বললে ও অনেক বেশি খুশি হবে। উৎসাহ পাবে।
মিলন ভাই বললেন, আমি এখনই ফোন করছি।
সত্যি, ইমদাদুল হক মিলনের ফোন পেয়ে শাকিল যারপরনাই খুশি হয়েছিল।
শাকিলের সবগুলো গল্প একটানে লেখা। কোনো গল্প সে দ্বিতীয়বার দেখত না। চূড়ান্ত প্রুফের পর পত্রিকায় ছাপতে দেওয়ার আগে আমি অনেক সময় বলতাম, গল্পটা তোমাকে পাঠাই। আরেকবার দেখে দাও। কোনো কিছু এডিট করবে কি না? কিন্তু সে কখনোই দেখত না। আমি নিশ্চিত দ্বিতীয়বার দেখলে হয়তো গল্পগুলো আরও সমৃদ্ধ হতো।
একদিন গভীর রাতে শাকিলের ফোন। বলল, বন্ধু আমি নতুন একটা গল্পের প্লট পেয়ে গেছি। তারপর গল্পের কাহিনী সংক্ষেপ আমাকে শুনাল। আমি বললাম, খুবই সুন্দর প্লট। কালই লিখে ফেলো। কাল পর্যন্ত আর অপেক্ষা শাকিল করে নি। রাতেই লিখে ফেলেছে সে তার পঞ্চম গল্প, ‘রেখো মা দাসেরে মনে’। পরদিন আমি মুগ্ধ হয়ে পড়লাম। কিন্তু রাতে শাকিল যেরকম বলেছিল, গল্পের কাহিনী ও কাঠামো তার থেকে অনেকটাই আলাদা। মনে হলো বেশ শক্ত কাঠামোয় দাঁড়িয়ে গেছে ‘রেখো মা দাসেরে মনে’। গল্পটি ছাপা হলো দৈনিক কালের কণ্ঠের সাহিত্য পাতায় (১৮ নভেম্বর, ২০১৬)।
অল্প সময়ের মধ্যেই লেখা হলো তার ষষ্ঠ গল্প ‘এক ফালি চাঁদ কিংবা এক টুকরো কেকের গল্প’। এই গল্পটি ছাপা হলো বিডিনিউজ২৪.কম-এ (২৬ নভেম্বর, ২০১৬)।
৫ ডিসেম্বর ২০১৬। সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে শাকিলের ফেসবুক স্ট্যাটাস পড়ে সারা দিনের ক্লান্তি দূর হয়ে গেল। স্ট্যাটাসটা ছিল…
‘আজ সারা দিনই মনটা বিষণ্ন, বিক্ষিপ্ত ছিল। এইমাত্র ভালো হয়ে গেল।
আমার বহুবিধ অত্যাচার যে মুখ বুঁজে সহ্য করে সেই প্রিয় বন্ধু মাজহার নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি পদে, কার্যনির্বাহী পরিচালক পদে পুনঃ-নির্বাচিত হয়েছে আমার আরেক বন্ধু শায়ক যে কিনা কোনো কারণ ছাড়াই আমার প্রেমে মুগ্ধ হয়ে থাকে।
প্রিয় বন্ধুদের জন্য ভালোবাসা। অভিনন্দন সমিতির নব নির্বাচিত সকল কর্মকর্তাকে। বিদায়ী সভাপতি ওসমান গনি ভাইয়ের জন্য শুভেচ্ছা। তিনি জানেন, টিমওয়ার্ক কিভাবে করতে হয়।’
স্ট্যাটাসটা পড়া মাত্রই শেষ করেছি, এরমধ্যে শাকিলের ফোন। অভিনন্দন বন্ধু। আমি ধন্যবাদ জানিয়ে বললাম, ফেসবুকে তো পোস্ট দিয়েছ আবার ফোন করে অভিনন্দন জানাতে হবে! শাকিল বলল, একবার মুখে না বললে কি হয়! আমি আবারও ধন্যবাদ দিলাম। তারপর হুট করেই বলল, শোন, আমি যদি মারা যাই আমার ছয়টা গল্প দিয়ে বইটা বের করে ফেলিস। আমি বিরক্ত হয়ে বললাম, দেখো এধরনের কথা আমার একদম পছন্দ না। মৃত্যু নিয়ে এ ধরনের ফান আমার ভালো লাগে না। আর এখনই বই কিসের! আরও তিন থেকে চারটা গল্প লিখবে, তারপর বই হবে।
শাকিল কোনো কথা না বলে ফোনটা রেখে দিল। এটাই যে শাকিলের সাথে আমার শেষ কথা হবে তা কে জানত। পরদিন ৬ ডিসেম্বর। দেরি করে অফিসে গেছি। দুপুর প্রায় দু’টা বাজে। টেবিলে খাবার সাজানো। এরমধ্যে মোবাইল ফোনটা বেজে উঠল। জুলহাস ভাইয়ের ফোন। ধরতে ধরতেই লাইনটা কেটে গেল। ভাবলাম খাওয়া শেষ করে ফোন করব তাকে। এরমধ্যে আবার জুলহাস ভাইয়ের নম্বর থেকে ফোন বাজছে। এবার ধরলাম। অপর প্রান্ত থেকে ইথারে ভেসে এল, শাকিল ভাই নাই। সামদাদোতে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে ভাইকে। অবিশ্বাস্য এই সংবাদে আমার পুরো পৃথিবীটা কেঁপে উঠল। দ্রুত গাড়িতে উঠে সামদাদো’র দিকে রওনা হলাম।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭-তে শাকিলের ৬টি গল্প নিয়ে প্রকাশিত হবে গল্পগ্রন্থ। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম গল্পগ্রন্থের নাম ঠিক করলেন ‘ফেরা না-ফেরার গল্প’। ভূমিকায় লিখলেন
…এই গ্রন্থের গল্পগুলি মনে দাগ কাটে। কবি শাকিলের ভাষা কাজে লেগেছে গল্পকার শাকিলের। আমার বিশ্বাস, মাত্র ছটি গল্পই শাকিলকে প্রতিষ্ঠা দেবে। আমাদের গল্প আলোচনাতেও তাকে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। সময়ের আগে শাকিল চলে গেল। সময়ের আগে তার বইটাও বেরুল। শাকিলকে যেমন আমরা মনে রাখব, শাকিলের গল্পগুলোকেও।
১০ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমিতে বইটির প্রকাশনা উৎসব হলো। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে আলোচনা করেন অ্যাডভোকেট জহুরুল হক, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, মঈনুল আহসান সাবের ও ইমদাদুল হক মিলন। মঞ্চে ও দর্শক সারিতে বসে আছেন শাকিলের স্বজন ও প্রিয়জনেরা। আছেন তার পিতা, স্ত্রী, ছোটভাই। পূর্ণ হলরুমে অদ্ভুত এক শূন্যতা। জমজমাটা আয়োজনে একটা অপূর্ণতা। শাকিল যে নেই! পরক্ষণেই মনে হলো, ভুল ভাবছি। শাকিল আছে। এখানেই। এই হলরুমে। তার প্রথম গল্পগ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে।
সন্ধ্যায় বইমেলায় শাকিলের পিতা অ্যাডভোকেট জহুরুল হক অন্যপ্রকাশের প্যাভেলিয়নে বসে পুত্রের বইতে অটোগ্রাফ দিচ্ছেন। পাশে বসে আছেন পুত্রবধূ নিলুফার আনজুম পপি। দূর থেকে এ দৃশ্য দেখে শাকিল আনন্দে হাসছে আর বাবাকে বলছে, আমি দূরের আকাশে তাঁরা হয়ে না রইলে তুমি কি আমার বইতে অটোগ্রাফ দিতে আসতে? লাভ ইউ মাই হিরো।
পাদটীকা : শাকিল তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বাবার ছবি পোস্ট দিয়ে লিখত ‘মাই হিরো’। একটি স্ট্যাটাস এরকম ‘I have no hero in this world, dead or alive, but you. Love you Abba. To many, you are the synonym of wisdom, honesty, simplicity and dedication. Am prooud of you no matter what awaits! My hero…’
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)