আফ্রিকার মালিতে শহীদ চার বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর জানাজা শুক্রবার ঢাকা সেনানিবাসের ‘চপার্স ডেনে’ সম্পন্ন হয়েছে। জানাজায় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হকসহ ঢাকা সেনানিবাসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও সকল পদবীর সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জানাজার পর বাংলাদেশ সেনাপ্রধান, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল আবু এসরার এবং মিনুসমা ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার মেজর জেনারেল আমাদু কেনে শহীদদের সম্মানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এরপর শান্তিরক্ষীদের মরদেহ নিজ নিজ গ্রামের বাড়ী পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারী ব্যানব্যাট-৪ এর একটি লজিস্টিক কনভয় এস্কর্ট (নিরাপত্তা দল) তারিখে গাঁও হতে মপতি যাওয়ার পথে বোনি-দোয়েঞ্জা সড়কে দোয়েঞ্জা হতে ৩৫ কিঃমিঃ পূর্বে সন্ত্রাসীদের পুঁতে রাখা শক্তিশালী ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণে পড়ে।
ওই বিস্ফোরণে চারজন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী মৃত্যুবরণ করে। শহীদ সেনাসদস্যরা হলেন: পিরোজপুরের ওয়ারেন্ট অফিসার আবুল কালাম (৩৭ এডি রেজিঃ আর্টিঃ), ময়মনসিংহের ল্যান্স কর্পোরাল আকতার (৯ ফিল্ড রেজিঃ আর্টিঃ), পাবনার সৈনিক রায়হান (৩২ ইস্ট বেংগল), চাপাঁইনবাবগঞ্জের সৈনিক (পাঁচক) জামাল (৩২ ইস্ট বেংগল)।
চলতি মাসের ৭ তারিখে মালির রাজধানী বামাকোতে শহীদ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতিসংঘ সম্মান প্রদর্শন করে। পরে সেনাসদস্যদের মরদেহ গত ১৫ মার্চ বিকাল ৫টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে পৌঁছায়।
মালিতে নিয়োজিত জাতিসংঘের ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার মেজর জেনারেল আমাদু কেনে বীর শান্তিরক্ষীদের সম্মান প্রদর্শনের জন্য নিজেই মরদেহের সাথে বাংলাদেশে আসেন।
মালিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনটি বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মিশন হিসেবে বিবেচিত।
২০১৩ সালে শুরু হওয়া এই মিশনে ইতোমধ্যে ৯ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীসহ বিভিন্ন দেশের সর্বমোট ১৫৫ জন শান্তিরক্ষী প্রাণ হারিয়েছেন।
বাংলাদেশের দুঃসাহসী শান্তিরক্ষীরা সর্বদা দেশের সম্মানের বিষয়টি মাথায় রেখে ঝুঁকিপূর্ণ এই মিশনে জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছেন।
ছবি: আইএসপিআর