তরুণ ব্যবসায়ী শহিদউদ্দিন আহমেদের স্বপ্নের ছাদকৃষি। ঠিক তার একার নয়, বলা যেতে পারে তার গোটা পরিবারের এক স্বপ্নক্ষেত্র এটি। ঘরের ভেতরের চেয়ে বেশি আয়োজন ছাদে। বাসার ছাদটিকে এভাবে সাজানো সত্যিই কঠিন। বোঝা যায়, এখানে রয়েছে আলাদা যত্ন,আলাদা আন্তরিকতা।
২ হাজার টবে ফল,সবজি,ঔষধী ও মশলা জাতীয় গাছের সমারোহ। বড় বড় আমগাছ থেকে শুরু করে একেবারে মাটির সঙ্গে লেগে থাকা সবুজ মশলা ফসলের গাছ।
এসব যেনো এই পরিবারের সদস্যদের প্রতিদিন শেখায় নতুন কিছু।ছাদটিকে ভাবা যেতে পারে ‘ছোট্ট এক কৃষি পর্যটন’ কেন্দ্র হিসেবে। ছাদের চারধারে পাকা প্রাচীরের বাইরেও অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মতভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ছাদকৃষির অবকাঠামো।
এইসব আয়োজনের ভেতরেই রয়েছে মাটিতে জৈব সার প্রয়োগ, নিয়মিত পানি সরবরাহ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। বিষয়গুলো ছাদকৃষির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই ছাদকৃষির অন্যতম উদ্যোক্তা শহিদউদ্দিন আহমেদ জানালেন ছাদকৃষি নিয়ে তার ও পরিবারের অন্য সদস্যদের আন্তরিকতার কথা।
ছাদের গাছগুলোর নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন এই পরিবারের গৃহিনী রোখসানা ইয়াসমিন। ছাদের ফল-ফসল প্রতিদিন উৎসাহিত করে তাকে। তিনি জানান,ছাদের এইসব সবুজের কারণে তাদের বাসার ভেতরের পরিবেশও থাকে ঠাণ্ডা।
যেসব বাসভবনের ছাদে এমন সফল কৃষিকাজ চলছে সেগুলো কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কাছেও গর্বের ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এমন সফল ছাদকৃষি দেখে তারাও পাচ্ছেন অজানা নানা তথ্য। একই সঙ্গে কিছু কারিগরি সহযোগিতাও করছেন উদ্যোক্তাদের। শহিদউদ্দিনের ছাদে এসেছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটান কৃষি কর্মকর্তা কৃসিবিদ শামসুন্নাহার ও উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা কোহিনূর আক্তার।
ছাদটি দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন মফিজউদ্দিন। তিনি একদিকে উদ্যোক্তাদের নির্দেশনা অনুসরণ করেন অন্যদিকে কৃষিক্ষেত্রে নিজের যা জ্ঞানবুদ্ধি আছে তা প্রয়োগ করেন এই ছাদকৃষিতে।
নগর সাজাতে নানা কর্তৃপক্ষের নানামুখী পরিকল্পনার শেষ নেই। কিন্তু সত্যিকার অর্থে নগর সাজাতে নাগরিকের দায়িত্বের জায়গাটি অনেক বড়। শহিদউদ্দিন ও তার পরিবার যেমন তাদের ‘নন্দনকানন’ নামের বাড়িটির ছাদে গড়ে তুলেছেন ভিন্ন এক নন্দনকানন, এমন আয়োজন করা যেতে পারে দেশের অন্যান্য বাসাবাড়ির ছাদগুলোতেও।