আপিল বিভাগের একটি রায়ের কারণে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা এখন থেকে চাকরির শর্তাবলী ক্ষুণ্ন হবার কারণ দেখিয়ে হাইকোর্টে রিট করতে পারবেন না। প্রতিকার পেতে হলে অবশ্যই যেতে হবে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে। ওই ট্রাইব্যুনাল অন্তবর্তীকালীন যে কোনো স্থগিতাদেশ বা নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবেন। এর ফলে বিচারাধীন ১০ হাজার মামলা হাইকোর্টে চলবে না।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা তাদের মৌলিক অধিকার বা কোনো চাকরির শর্ত যদি যদি ক্ষুণ্ন হয়ে থাকে অথবা পেনশন, ভাতা বিষয়ক কোনো অধিকার খর্ব হয়ে থাকে তবে শুধু এ কারণে তারা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করতে পারবে না।
এসব ক্ষেত্রে তাদের মূলত যেতে হবে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালকে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ প্রদানের ক্ষমতাও দেয়া হয়েছে বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি বলেন, আইনের কোনো বিষয়বস্তু যদি এখানে চ্যালেঞ্জ করা হয়, শুধু তখনই রিট পিটিশন গৃহীত হবে।
আপিল বিভাগের রায়ের পরে হাইকোর্টে বিচারাধীন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত মামলার অবস্থা এবং করণীয় নিয়ে আইনী ব্যাখ্যা দেয় রাষ্ট্রপক্ষ।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনে করেন, হাইকোর্ট বিভাগে যেহেতু মামলাগুলো চলবে না, প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালেই যেতে হবে, রিট পিটিশনারদের এখন মামলাগুলো হাইকোর্ট থেকে তুলে নিয়ে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ।
আপিল ট্রাইব্যুনালের সদস্য সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ডক্টর মোহাম্মদ গোলাম মর্তুজা মজুমদার জানিয়েছেন, আপিল বিভাগের রায়ে ট্রাইব্যুনালের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তবে মামলার নিষ্পত্তির জন্য বৃদ্ধি করতে হবে ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা।
প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্মচারীকে তার বদলি, পদোন্নতি ও অবসর ভাতাসহ বিভিন্ন মৌলিক অধিকারের বিষয়ে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৮০ অনুযায়ী প্রথমে নিজের বিভাগ বা রাষ্ট্রপতির কাছে রিভিউ আবেদন করতে হয়। এরপরে যেতে হয় প্রশাসনিক ও আপিল ট্রাইব্যুনালে। আপিল ট্রাইব্যুনালের সদস্য জানিয়েছেন প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালে ৫০০ এবং ঢাকার তিনটি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে ৯০০ মামলাসহ আরও মামলা আছে চট্টগ্রাম, বগুড়া, বরিশাল ও খুলনা ট্রাইব্যুনালে।
তবে অনেকেই ট্রাইব্যুনালে না গিয়ে প্রতিকার পেতে রিট আবেদন করেন হাইকোর্টে। বর্তমানে এ ধরনের মামলার সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সম্প্রতি ২৫টি সিভিল পিটিশন নিষ্পত্তি করে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।