প্রথম থেকে শততম টেস্ট। দীর্ঘ এই যাত্রায় অন্য টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলো বাংলাদেশের মতো চড়াই-উতরাই পার না করলেও তাদের পথ একেবারে মসৃণ ছিল না। কেউ জিতেছে। কেউ সমানতালে হেরেছে। দশ দেশের মধ্যে মাত্র তিনটি দেশ তাদের শততম টেস্টে জয় পেয়েছে- অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান। বাংলাদেশের শততম টেস্টের আগে অন্য দেশগুলোর সফলতা, ব্যর্থতা নিয়ে চ্যানেল আই অনলাইনের এই আয়োজন।
ইংল্যান্ড
১৮৭৭ সালের মার্চে মেলবোর্নের মেরিলিবোন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে নামে ইংরেজরা। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচটি ৪৫ রানে জেতে। ১৯০৯ সালে লর্ডসে ওই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই শততম টেস্ট খেলে দলটি। ওই ম্যাচেও জয়লাভ করে অস্ট্রেলিয়া। এই জয়টি ছিল ৯ রানের।
এক থেকে একশ পর্যন্ত আসতে ইংল্যান্ড ৪৫টি টেস্টে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে।
অস্ট্রেলিয়া
১৮৭৭ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অজিরা যে ম্যাচটি খেলেছিল, তাদের জন্যও এটি প্রথম টেস্ট ছিল। শততম টেস্টে তারা মাঠে নামে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে। ওল্ড ট্রাফোর্ডে। ওই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়ক ছিলেন সিড গ্রেগরি। ম্যাচটিতে অস্ট্রেলিয়া ইনিংস এবং ৮৮ রানে জয় পায়।
এক থেকে একশ পর্যন্ত আসতে তারা ৪২টি ম্যাচে জয়লাভ করে।
ভারত
টিম-ইন্ডিয়া প্রথম টেস্ট খেলে ১৯৩২ সালের জুনে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসে। ওই ম্যাচে ইংরেজরা ১১৮ রানে জয় পায়।
একশতম টেস্টে ওই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই এজবাস্টনে মাঠে নামে দলটি। সেটি ১৯৬৭ সালে। এই ম্যাচেও ইংল্যান্ড ১৩২ রানের বড় ব্যবধানে জয়লাভ করে। ভারত প্রথম জয়ের দেখা পায় ২১ বছর পরে। বাংলাদেশ জেতে ৫ বছরের মাথায়।
এক থেকে একশ পর্যন্ত আসতে ভারতের জয়ের সংখ্যা ১০টি। এই সময়ে তারা ড্র করেছে বেশি, ৫০টি।
নিউজিল্যান্ড
দলটি প্রথম টেস্ট খেলে ১৯৩০ সালের জানুয়ারিতে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ম্যাচটি ইংল্যান্ড জিতে নেয় ৮ উইকেটে। শততম টেস্টে কিউইদের প্রতিপক্ষ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিংসটন ওভালে সেদিন ম্যাচটি ড্র হয়েছিল। দলটি প্রথম জয়ের দেখা পায় ২৭ বছর পর।
এক থেকে একশ পর্যন্ত আসতে তাদের জয় সাতটি। ড্র ৪৭ বার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ক্যারিবীয়রা প্রথম সাদা পোশাকে মাঠে নামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ১৯২৮ সালের জুনে। ম্যাচটিতে ইংল্যান্ড ইনিংস ও ২৮ রানের ব্যবধানে জয়লাভ করে। শততম টেস্টে গ্যারি সোবার্সের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ মাঠে নামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। ১৯৬৫ সালের কথা সেটি। সেদিন জ্যামাইকার স্যাবাইনা পার্কে ১৭৯ রানের জয়ে ইতিহাস গড়ে তারা।
এক থেকে একশ পর্যন্ত আসতে ক্যারিবীয়দের জয় ৩৫টিতে। এই সময়ে তারা একটি ম্যাচে ‘টাই’ করেছে। ড্র ৩১টিতে।
সাউথ আফ্রিকা
দেশটি প্রথম টেস্ট খেলে ১৮৮৯ সালের মার্চে। সেন্ট জর্জ পার্কে। প্রতিপক্ষ ইংল্যাল্ড। ম্যাচটিতে ইংল্যান্ড জেতে ৮ উইকেটে। শততম টেস্টেও একই মাঠে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে মাঠে নামে প্রোটিয়ারা। ১৯৪৯ সালের মার্চে। ম্যাচটিতে ইংল্যান্ড জয় পায় ৩ উইকেটে।
এক থেকে একশ পর্যন্ত আসতে দলটি ১৫টি ম্যাচে জয় পায়। ড্র ৩৩ বার।
পাকিস্তান
১৯৫২ সালের অক্টোবরে প্রথম টেস্ট খেলে পাকিস্তান। ফিরোজশাহ কোটলায়। ওই ম্যাচে ভারত ইনিংস ও ৭০ রানের ব্যবধানে জয় পায়। ঠিক দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে প্রথম জয় পায় পাকিস্তান।
১৯৭৯ সালের মার্চে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মুশতাক মোহাম্মদের নেতৃত্বে মেলবোর্নে পাকিস্তান তাদের শততম টেস্ট খেলে। ওই ম্যাচে পাকিস্তান ৭১ রানে জয় পায়।
এক থেকে একশ পর্যন্ত আসতে তাদের মোট জয় ১৯টি। ড্র ৫৫টিতে।
শ্রীলঙ্কা
দেশটি প্রথম টেস্ট খেলে ১৯৮২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। নিজেদের দেশে পি. সারা ওভালে। প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ড। ম্যাচটিতে সাত উইকেটের জয় পায় ইংল্যান্ড। লঙ্কানরা তাদের শততম ম্যাচ খেলে ২০০০ সালের জুনে। সিংহলিজ স্পোর্টস গ্রাউন্ডে। প্রতিপক্ষ ছিল পাকিস্তান। ওই ম্যাচে ওয়াসিম আকরামরা ৫ উইকেটে জয় পায়।
এক থেকে একশ পর্যন্ত আসতে লঙ্কানদের জয় ১৮টিতে। ড্র ৪২টিতে।
জিম্বাবুয়ে
১৯৯২ সালে প্রথম টেস্ট খেলে জিম্বাবুয়ে। ভারতের বিপক্ষে। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে। ম্যাচটি ড্র হয়েছিল। দেশটি নিজেদের শততম টেস্ট খেলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ওই ম্যাচে ২২৫ রানের জয় পায় লঙ্কানরা।
এক থেকে একশ পর্যন্ত আসতে জিম্বাবুয়ের জয় ১১ ম্যাচে। ড্র ২৬টি।
বাংলাদেশ
২০০০ সালের ১০ নভেম্বর প্রথম টেস্ট খেলে দুর্জয়রা। ভারতের বিপক্ষে। ওই ম্যাচে ৯ উইকেটের জয় পায় সৌরভ গাঙ্গুলির দল। টাইগারদের প্রথম জয় ২০০৫ সালে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২২৬ রানে। চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে। এখন পর্যন্ত মোট জয় আটটিতে। ড্র ১৫টি।
বুধবার মুশফিকদের শততম টেস্ট। প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। একটি ইতিহাসের গল্প লিখতে দরকার একটি জয়ের। অপেক্ষা সেই প্রহরের…।