লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে দু‘জন বেসামরিক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। তারা হলেন মেহেদী ও মিজান। তাদের একজন সেখানকার একটি স্প্যানিশ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন।
বৈরুতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের হেড অব চ্যান্সেরি ও ফার্স্ট সেক্রেটারি আবদুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান: এখন পর্যন্ত একজন বাংলাদেশি মারা গেছেন বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। আর কোনো বাংলাদেশি হতাহত হয়েছেন কিনা জানতে অনুসন্ধান চলছে।
তবে সেখানে আরও বাংলাদেশি মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে আন্তঃবাহিনী যোগাযোগ জনসংযোগ পরিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৈরুত বন্দরের কাছে হওয়া বিস্ফোরণে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অন্তত ১৯ সদস্য আহত হয়েছেন।
বিস্ফোরণের সময় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বিএনএস বিজয় সেখানকার বন্দরে নোঙ্গর করা ছিলো।
আহত সৈন্যদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, পাঁচজন মাঝারি অবস্থায় আহত এবং ১৩ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছিলো দূতাবাসের পক্ষ থেকে।
মঙ্গলবার রাতে ভয়াবহ এ বিস্ফোরণে ৭৮ জন নিহত ও অন্তত চার হাজার লোক আহত হয়েছে। তবে লেবাননের রেডক্রস বলছে, নিহতের সংখ্যা ১০০ হতে পারে৷
বিস্ফোরণে বন্দরের বেশিরভাগ এলাকাই বিধ্বস্ত হয় এবং রাজধানীর আশপাশের ভবন ও পার্ক করা গাড়িগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, অনেক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা পরও ওই এলাকা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে বলেছেন, বিস্ফোরণের আওয়াজ ছিল তীব্র ও কান ফাটানো। ভিডিও ফুটেজে অনেক গাড়ি এবং ভবন বিধ্বস্ত হতে দেখা গেছে।
বিস্ফোরণে প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। তবে লেবাননের কর্মকর্তারা সন্দেহ করছেন যে, বন্দরে মজুদ রাখা মারাত্মক বিস্ফোরক সোডিয়াম নাইট্রেট এর কারণে এই বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব এই ঘটনাকে বিপর্যয় বলে বর্ণনা করেছেন এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছেন। একই সাথে আজ বুধবার রাষ্ট্রীয় শোক দিবস ঘোষণা করেছেন।
প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন এক টুইট বার্তায় বলেছেন, কোনো গুদামে ২,৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মত বিস্ফোরক অনিরাপদভাবে মজুত রাখার বিষয়টি “অগ্রহণযোগ্য”।
লেবানন ভিত্তিক হেজবুল্লাহকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ইসরাইলের সঙ্গে লেবাননের সম্পর্ক অত্যন্ত খারাপ যাচ্ছে। তবে ইসরাইলের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এই বিস্ফোরণের সঙ্গে ইসরাইলের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
হোয়াইট হাউজের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মঙ্গলবারের এই বিস্ফোরণ সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র লেবাননের জনগণের জন্য প্রার্থনা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাইক পম্পেও এক বিবৃতিতে এই মারাত্মক বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।