সৌদি আরব লেবাননের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির উগ্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরাল্লাহ। দেশটির প্রধানমন্ত্রী সাদ আল-হারিরিকে পদত্যাগে সৌদি সরকারই বাধ্য করেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
প্রাণনাশের আশঙ্কায় গত ৪ নভেম্বর সৌদি আরবের রিয়াদ থেকে টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে সাদ আল-হারিরি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। অভিযোগ করেন, ইরান ও তাদের মিত্র হিজবুল্লাহ তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে।
শুক্রবার টেলিভিশনে দেয়া সরাসরি ভাষণে নাসরাল্লাহ দাবি করেন, সৌদি কর্তৃপক্ষ হারিরিকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে আটকে রেখেছে।
‘সংক্ষেপে বলা যায়, এটা স্পষ্ট যে সৌদি আরব ও সৌদির কর্মকর্তারা লেবানন এবং লেবাননের হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তবে আমি বলব এই যুদ্ধ পুরো লেবাননের সঙ্গেই ঘোষণা করা হয়েছে,’ বলেন হিজবুল্লাহ প্রধান।
দেশটি ইসরায়েলকেও লেবাননের বিরুদ্ধে উস্কাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, সৌদি আরব লেবাননের বিরুদ্ধে সামরিক হামলা চালানোর জন্য ইসরায়েলকে শতকোটি অর্থ দিতে তৈরি আছে।
লেবাননের শক্তিশালী শিয়া উগ্রপন্থি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইরানের বন্ধু। দলটি বহু আগে থেকেই অভিযোগ করে আসছে, লেবাননসহ আশপাশের অঞ্চলে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে সৌদি আরব।
নাসরাল্লাহ ছাড়াও লেবানিজ প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন এবং দেশটির অন্যান্য সিনিয়র রাজনীতিকরা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, সৌদি হারিরিকে গৃহবন্দী করে রেখে তাকে দিয়ে জোর করে নিজেদের শিখিয়ে দেয়া বুলি আওড়াচ্ছে। হারিরির দ্রুত দেশে ফেরার দাবি জানিয়েছেন তারা।
আউন হারিরির পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি। হারিরিও ওই ঘোষণার পর জনসম্মুখে আর কোনো কথা বলেননি।
তবে নাসরাল্লাহর ঘোষণার আগেই লেবাননে ভ্রমণ সতর্কতা জারি করে নিজ নিজ নাগরিকদের দ্রুত দেশে ফেরার নির্দেশ দেয় সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কুয়েত। সৌদি আরবের সরকারি সংবাদমাধ্যম এসপিএ এজেন্সিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। লেবাননের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশটিতে সফররত বা বসবাসরত নাগরিকদের দ্রুত দেশে ফিরে আসার পাশাপাশি, লেবাননে কোনও আন্তর্জাতিক আয়োজনেও সৌদি নাগরিকদের অংশ না নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।