যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা রাজ্যের লাস ভেগাসে বন্দুকধারীর হামলায় বহু হতাহতের পর সেখানকার বন্দুক আইন নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কেননা নেভাদা এমন একটি জায়গা যেখানে বন্দুক কিনতে কোন অনুমতি লাগে না।
সিএনএন জানায়, রোববার রাতে লাস ভেগাসে বন্দুকধারীর হামলায় এখনও পর্যন্ত ৫৮ জন নিহত ও ৫১৫ জন আহত হয়েছে। ওই হামলার পর এখন আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে কম নিয়ন্ত্রিত নেভাদার বন্দুক আইন।
অবশ্য লাস ভেগাসে কোন ধরণের বন্দুক দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বিস্তারিত কিছু না বললেও হামলাকারী বৈধভাবেই বন্দুক কিনেছিল বলে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করে।
নেভাদার বন্দুক আইনের কিছু উল্লেখযোগ্য বিষয়
নাগরিকদের অস্ত্র বহনের অধিকার নেভাদার সংবিধানের প্রথম অনুচ্ছেদেই সংরক্ষিত আছে। সেখানে বলা আছে- নিরাপত্তা ও আত্মরক্ষার বিষয় ছাড়াও আইনের মধ্য থেকে শিকার, বিনোদনমূলক কাজসহ অন্যান্য আইনগত বিষয়ে ব্যবহারের লক্ষ্যে প্রত্যেক নাগরিকেরই অস্ত্র রাখা ও বহনের অধিকার রয়েছে।
এই আইনের ফলে সেখানে বন্দুক কিনতে কোন অনুমতি লাগে না। কেউ একবারে যত খুশি ততগুলো বন্দুক কিনতে পারে। নির্বাচনী এলাকা, ক্যাসিনো, বারসহ প্রকাশ্যে অাগ্নেয়াস্ত্র বহন করা ও হামলা উপযোগী অসংখ্য গুলি ভর্তি অস্ত্র বহন করাও সেখানে বৈধ। তবে স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্ত্র বহন করা যায় না।
আবার সেখানে অস্ত্র কেনার আগে সেখানে কোন নির্দিষ্ট সময় অপেক্ষাও করতে হয় না। সেখানকার পুলিশও প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জনকারী যে কাউকেই গোপন পিস্তল রাখার অনুমতি দিতে হয়। অন্যান্য রাজ্যের চেয়ে গোপন অস্ত্র রাখার লাইসেন্স বেশি প্রশংসা পেয়ে থাকে।
অস্ত্র সহিংসতা প্রতিরোধী একটি সংগঠন নেভাদার বন্দুক আইন ক্যালিফোর্নিয়া, ম্যাসাচুসেটস সহ নিয়ন্ত্রিত রাজ্যগুলো থেকে অনেক অনেক নিম্নমানের বলে উল্লেখ করেছে। তবে খারাপ অবস্থায় থাকা ২৫টি রাজ্য থেকে তাদের অবস্থা ভালো বলে জানায় সংগঠনটি।
চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিলে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ৮৩ শতাংশ যুবক মনে করে, বন্দুক দিয়ে সংঘটিত সহিংসতা তাদের দেশে একটি বড় সমস্যা। আবার ৪৭ শতাং মনে করে যদি আইনগতভাবে অস্ত্র কিনতে নাগরিকদের বাধ্য করা হতো তাহলে সহিংসতা অনেক কমে আসতো।
তবে অস্ত্র আইন কঠোর করার পক্ষে সমর্থন জানানোর জন্যও মাঝে মাঝে দেশটিতে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হামলার ঘটনা ঘটে।