অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের হাতে যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনে বাংলাদেশি তরুণ শানুর আহমেদ দাইয়ান (১৬) নিহত হয়েছেন। লন্ডনের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে ডকল্যান্ডস লাইট রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে লন্ডন পুলিশ।
নিহতের পরিবার এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের তদন্তে গাফিলতি এবং অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ এনেছে।
বিবিসির সংবাদে জানানো হয়েছে: দাইয়ান লন্ডনের নিউহাম কলেজের ইলেভেন লেভেলের শিক্ষার্থী। অন্যান্য দিনের মত সোমবারও তিনি কলেজে গিয়েছিলেন। ওই দিন কলেজে দুই দল শিক্ষার্থীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সংঘর্ষের ঘটনায় দাইয়ানের এক সহপাঠী গুরুতর আহতও হয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তারা এ ঘটনার পাশাপাশি দাইয়ান নিহতের সময় স্টেশন এলাকায় ৩০ যুবককে বহনকারী একটি স্কুল বাসের দিকে নজর রাখছে। ওই বাসটি সে সময় স্টেশন এলাকায় কী করছিলো এবং হত্যাকাণ্ডে বাস যাত্রীদের কোন সম্পৃক্ততা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে: সোমবার (২ মার্চ) রাতে দাইয়ান তার মাকে ডাক্তার দেখাতে বাইরে নিয়ে যায়। ডাক্তার দেখানো শেষ করে বাসায় এসে, স্কুল বন্ধুদের ফোন পেয়ে আবারও বের হয়, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করা শেষে; আধা-ঘন্টার মধ্যে ফিরে আসবে। এরপর আর ফিরে আসেনি। মোবাইলে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
পরদিন মঙ্গলবার সকালে ডকল্যান্ডস লাইট রেলওয়ে স্টেশনের পাশে ঝোঁপ এলাকায় দাইয়ানের মৃতদেহ খুঁজে পায় পুলিশ।
দাইয়ানের পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের বিরূদ্ধে তদন্তে অবহেলার অভিযোগ করা হয়েছে। তার বাবা শরীফ অভিযোগ করেন: হত্যাকাণ্ডে পর ঘটনাস্থলে দাইয়ানের ব্যবহৃত চশমা পড়ে থাকলেও পুলিশ সেটি ফেলে রেখে গেছে। ঘটনাস্থলে পড়ে আছে একটি লোহার ভারি রেঞ্জ। যেটা দিয়ে দাইয়ানের মাথায় আঘাত করা হয়েছে বলে ধারণা হচ্ছে। এমনকি দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও পরিবারকে মৃতদেহ দেখতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।
বিষয় গুলো সামনে আসার পর লন্ডন পুলিশ পুনরায় ফরেনসিক দল পাঠিয়ে আলামত হিসেবে সেগুলো আওতায় নিয়েছে।
দাইয়ানের পরিবার দীর্ঘদিন থেকে পূর্ব লন্ডনে বসবাস করে। তার পিতা শরীফ আহমেদ এবং মা ফাতেমা বেগম। শরিফ-ফাতেমা দম্পতির দুই পুত্র সন্তান দাইয়ান এবং রাইয়ান, দাইয়ান বড়। বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা তারা।