বাংলা ছবির দর্শকদের কাছে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে ওয়াজেদ আলী সুমন অতিপরিচিত নাম। ৫০ টির বেশি আলোচিত ছবির এ নির্মাতা শুধু শাকিব খানকে নিয়েই ২৫টি ছবি নির্মাণ করেছেন! সর্বশেষ দেশের শীর্ষ নায়ককে নিয়ে তার ছবি ‘ক্যাপ্টেন খান’।
নির্মাতার ভাষায়, ‘শাকিব খানকে নিয়ে বানানো অধিকাংশ ছবিই আমার ব্যবসায়িকভাবে সফল।’
দীর্ঘদিন ধরে ওয়াজেদ আলী সুমনের সঙ্গে শাকিব খানের সখ্যতা। সেই সুবাদে শাকিবকে নিয়ে টাইগার নাম্বার ওয়ান, মনে বড় কষ্ট, সন্তান আমার অহংকার, বিয়ে বাড়ি, হিটম্যান, ক্যাপ্টেন খান, এক বুক জ্বালা, মন যেখানে হৃদয় সেখানে সহ আরও বেশ কিছু ছবি নির্মাণ করেছেন সুমন। এতো ছবিতে শাকিবকে নেয়ার পরেও নির্মাতা সুমনের কোনো অভিযোগ নেই। বরং এখনও শাকিবের প্রতি সুমনের মুগ্ধতার শেষ নেই।
সম্প্রতি কেউ কেউ শাকিব খানকে নিয়ে অভিযোগ তুলছেন। বিষয়গুলো চোখ এড়ায়নি এই নির্মাতার। চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে আলাপকালে ওয়াজেদ আলী সুমন তাই শাকিবকে নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার গল্পই শেয়ার করলেন।
তিনি বলেন, আমার এতোগুলো ছবিতে কাজ করে শাকিব কোনোদিনই শিডিউল ফাঁসায়নি। সে এতো বিশ্বস্ত ছিল যে, লিখিত চুক্তিও লাগতো না। মৌখিক কথায় সব হতো। যাদের শাকিব তার মূল্যবান শিডিউল দিচ্ছে না, আমার মনে হয় তারাই শাকিবকে ধরতে না পেরে তাকে জড়িয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা বলছে।
অভিযোগকারীদের উদ্দেশ্যে ওয়াজেদ আলী সুমন প্রশ্ন রাখেন এভাবে, শাকিবের শিডিউল আঙুর ফলের মতো নাকি ভাই? খেতে না পারলে ‘আঙুর ফল টক’! শাকিব শিডিউল দিলে ভালো, না দিলে পারলেই খারাপ! শিডিউল নিয়ে গড়িমসি করলে খারাপ হলে তাকে নিয়ে কাজ করেছেন কেন? শাকিব যদি আপনাদের সঙ্গে শিডিউল নিয়ে ঝামেলা করেই থাকে তাহলে নিশ্চয়ই কারণ ছিল। সে তার নিজের প্রযোজনার ছবির সেট, আয়োজন পছন্দ না হলেও কাজ করে না। তাহলে অন্যদের কেন করবে?
ওয়াজেদ আলী সুমন আরও বলেন, এটা স্পষ্ট যে বনিবনা হচ্ছে না বলেই শাকিব খানের নামে দুর্নাম ছড়ানো হচ্ছে। বিভিন্ন প্রপাগান্ডা রটানো হচ্ছে। একজন সুপারস্টার চাইলেই জন্ম দেয়া যায় না। লক্ষ কোটি টাকা দিয়েও নতুন শাকিব খান তৈরি করা যাবে না। শাকিব সবসময় ভালোর পূজারী। যখনই বুঝতে পারে ছবিটা ভালো হচ্ছে, কোয়ালিটি ভালো শাকিব জানপ্রাণ উজাড় করে কাজ করে। পূর্ণ মনোনিবেশ থাকে কাজে।
আমার ‘মনে বড় কষ্ট’ ছবিতে আমি তাকে খরচ দেয়ার আগেই নিজেই আড়াই লাখ ব্যয় করে লুক ঠিক করে। সে আগেই বুঝেছিল ছবি হিট করবে। এই ছবি ৮৬ লাখ টাকা খরচ করে ৩ কোটির বেশি ব্যবসা করে সেই ২০০৯ সালের দিকে। আরেক ছবি ‘মন যেখানে হৃদয় সেখানে’ এর জন্য শাকিব সমুদ্রের ঢেউয়ে তলিয়ে যাচ্ছিল। সামান্য দেরি হলে তার প্রাণ চলে যেত। সে তখন এক নাম্বার নায়ক হওয়া সত্ত্বেও জীবনের ঝুঁকি নিয়েও শুটিং করে দিয়েছিল।
ওয়াজেদ আলী সুমন বলেন, কথা বলে ‘যে গরু দুধ দেয় তার লাথি খাওয়া ভালো’! শাকিবকে নিয়ে ছবি বানালে টাকা উঠে আসার গ্যারান্টি থাকে। শাকিব খান সুপারস্টার। সে গড গিফটেড। তার বিকল্প নেই। সে যখন ক্যামেরার সামনে দাঁড়ায় তার অভিনয় দেখে মন ভরে যায়। পরিচালক হিসেবে যতটুকু চাওয়া থাকে শাকিব প্রথমবারেই তার চেয়ে বেশি দেয়। সে স্ক্রিনে এলে স্ক্রিনটাই পূর্ণতা পায়। তার এন্ট্রি দেখলেই দর্শক তালি দিতে দিতে হলে দাঁড়িয়ে যায়। একজন নায়কের এর চেয়ে আর প্রাপ্তি কিছু থাকে না। শাকিবকে নিয়ে বলে শেষ করা যাবে না। আল্লাহ শাকিবকে সম্মান দিয়েছেন, আমরা কেন তাকে অসম্মান করবো!